আকুপ্রেশারে ঘাড় ও কাঁধের ব্যথা কমে

আলমগীর আলম
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮: ১৬
Thumbnail image

আধুনিক জীবনে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ডিভাইস হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এসব ডিভাইস এমনভাবে মোহগ্রস্ত করেছে যে তা ছাড়ার কথা ভাবা যায় না। এ দুটি ডিভাইস ব্যবহারের কারণে অনেক শারীরিক সমস্যা হয়। সেগুলোর মধ্যে ঘাড়ের সমস্যা অন্যতম। সাধারণত দীর্ঘ সময় ঘাড় নিচু করে ডিভাইস চালানো হয়। এমন চলতে থাকলে মেরুদণ্ডের সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিস বা সার্ভিক্যাল অস্টিওআর্থ্রাইটিস হতে পারে। এটি মেরুদণ্ড (ঘাড়) শক্ত করে দেয়।

সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের চিকিৎসা বেশ জটিল। এ জন্য থেরাপি নিতে হয়। ব্যথা কমানোর ওষুধ থেকে শুরু করে শক্ত ঘাড় নরম করতে বিভিন্ন জেল ব্যবহার করতে হয়। যাঁদের এ সমস্যা রয়েছে এবং ধীরে ধীরে ব্যথা বাড়ছে, তাঁরা তিয়েনঝু পয়েন্টে নিয়মিত আকুপ্রেশার করে ব্যথা কমাতে পারেন। সেই সঙ্গে রোগও কমবে।

সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিস হওয়ার কয়েকটি কারণ

  • ডিজেনারেটিভ পরিবর্তন: বয়স বাড়ার সঙ্গে মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে তরলের পরিমাণ ও নমনীয় ভাব কমতে থাকে। এটি হাড়ের স্পারস (অস্টিওফাইট) এবং মেরুদণ্ডের সঙ্গে স্নায়ু সংকীর্ণতার দিকে যেতে থাকে।
  • ঘাড়ে চাপ: ঘাড়ের ওপর সব সময় চাপ, হেলমেট পরিধান, ভারী বস্তু বহন এবং ভুল ভঙ্গিতে ঘুমের কারণেও এটি হতে পারে।
  • আঘাত: ঘাড়ের আঘাত সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

উপসর্গ

  • ঘাড়ে ব্যথা ও শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • মাথাব্যথা।
  • বাহু বা হাতে অসাড়তা বা শিহরণ।
  • বাহু বা হাতের দুর্বলতা।
  • ঘাড় নাড়াতে অসুবিধা হওয়া।

সার্ভিক্যাল মেরুদণ্ডের ওপরে থাকে। এখান থেকে শুরু হয় মাথা। এটি শরীরের ভর নিয়ন্ত্রণ করে। এটিকে বলা হয় তিয়েনঝু পয়েন্ট। তিয়েনঝু পয়েন্ট ঘাড়ব্যথার চিকিৎসায় খুবই কার্যকর; বিশেষ করে ওপরের অংশের সমস্যায়।

কীভাবে আকুপ্রেশার দেবেন

ছবিতে ঘাড়ের ওপরের দিকে মাথার খুলির নিচের অংশের দুই পাশে যে পয়েন্ট দেখানো হয়েছে, তা তিয়েনঝু পয়েন্ট। এসব পয়েন্টে দুই আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে চাপ দিন। চাপ খুব বেশি নয়, আবার হালকাও নয়। দিনে দুবার ৫ মিনিট করে আকুপ্রেশার দিলে ভালো ফল মিলবে। এতে শক্ত ঘাড় নরম হতে থাকবে। সপ্তাহে ৬ দিন আকুপ্রেশার করতে হবে।

তিয়েনঝু পয়েন্টের আরও কাজ

নিয়মিত এই পয়েন্টে আকুপ্রেশার দিলে যেসব উপকার পাবেন, সেগুলো হলো—

  • চোখব্যথা ও লালচে ভাব এবং দীর্ঘস্থায়ী ভেজা চোখের সমস্যা দূর হবে।
  • ইচ্ছাশক্তি, সাহস, সহনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
  • বিভিন্ন চাপে তৈরি হওয়া ব্রেইন ফগ দূর হবে।
  • দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি পাওয়া যাবে।
  • শরীরে অলস ভাব আসবে না।

পরামর্শ: তিয়েনঝু পয়েন্টে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে আকুপ্রেশার দিতে হবে। কোনো টুলস বা ডিভাইস ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।

আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত