ডা. তাহমিদা খানম
বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
রোগে-শোকে মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে জীবন আরও ওষ্ঠাগত। দেশে এখন নিম্নআয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের মোট আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতেই।
১৪ ঘণ্টা আগেদেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় ও ডাক্তারের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর দেশের মানুষ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। স্বাস্থ্যেসেবার উন্নয়ন না হলে এর পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে।
১৬ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে শীত উপভোগ্য মৌসুম। কিন্তু অনেকের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা যাদের আছে, তাদের এই মৌসুমে কষ্ট বেড়ে যায়।
১ দিন আগেত্বক অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সংক্রমণ এবং যেকোনো ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই এর যত্নে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও টানটান হলে দুশ্চিন্তা করবেন না। চুলকানি হলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক তেল কমিয়ে দেয়।
১ দিন আগে