মো. ইকবাল হোসেন
আগামীকাল অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার বিশ্ব হার্ট বা হৃৎপিণ্ড দিবস। এ দিবসের আগে জেনে রাখুন, হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা নিজের হাতে। এককথায় বললে, হৃৎপিণ্ড ঠিক রাখতে লাইফস্টাইলে বদল আনুন।
শুধু বয়স্ক এবং মোটা মানুষদের হার্টের অসুখ হয়—এই ধারণা মোটেও সঠিক নয়। বর্তমানে তরুণদের মাঝে হার্টের অসুখ ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের পরিমাণও বাড়ছে। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অল্প বয়সী হার্টের রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে।
প্রতিবছর বিশ্বে অন্তত পৌনে দুই কোটি মানুষ হৃৎপিণ্ডের কোনো না কোনো রোগে প্রাণ হারায়। বাংলাদেশেও এ সংখ্যা কম নয়। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত হৃৎপিণ্ডের অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই কোটিতে উত্তীর্ণ হবে। অথচ সচেতন হলেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ
করা যায়।
হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে করণীয়
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
হার্টের রোগ প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আপনাকে সঠিক খাবার বাছাই করা শিখতে হবে। সব ধরনের ফল ও রঙিন শাকসবজি খেতে হবে। শাকসবজি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এগুলো ধমনির সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এর আঁশ রক্তে খারাপ চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দেয় বলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। শাকসবজি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত একটি পেয়ারা বা আপেল খেতে চেষ্টা করতে হবে।
কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোটসহ সব ধরনের বাদাম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই বাদামগুলো প্রোটিন, আঁশ, খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। বাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এটি রক্তের এলডিএল, কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হার্টের সুরক্ষা দেয়।
ডার্ক চকলেট হার্টের জন্য উপকারী খাবার। মস্তিষ্কের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এটি। ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
প্রতিদিন ১ থেকে ২ কাপ টক দই খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে প্রোবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। টক দই পরিপাকতন্ত্র এবং হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষায় কাজ করে।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি কার্যকরী। এটি শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। পাশাপাশি গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে হার্ট ফ্রেন্ডলি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মাছ পাওয়া না গেলে যেকোনো তৈলাক্ত মাছ খাওয়া যাবে।
গরু বা খাসির মাংসসহ অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যাবে না। এমন মাংস খেতে হবে যার গায়ে কোনো চর্বি লেগে থাকে না। রেডমিট রান্নার পরে ঝোল বাদ দিয়ে খেতে হবে। হাঁস-মুরগির মাংস খেলে চামড়া বাদ দিয়ে খেতে হবে। এ ছাড়া কলিজা, মগজ, গুর্দা, ভুঁড়ি, পায়া ইত্যাদি খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। দিনের আলোতে ঘুমানো যাবে না। রাতের আঁধারে ঘুমালে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে। আর না ঘুমালে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
ব্যায়াম
শুধু ডায়াবেটিস হলে আর ওজন বেড়ে গেলে হাঁটতে হবে, এ ভাবনা সঠিক নয়। সুস্থ থাকার জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মিনিট ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে। সকাল, বিকেল বা রাতে সুবিধামতো সময়ে ব্যায়াম করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা হার্টের সুরক্ষা প্রদানসহ শরীরকে সব ধরনের রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
ধূমপান বন্ধ করতে হবে
ধূমপান ও মদ্যপান হৃদ্যন্ত্রকে অসুস্থ করতে অন্যান্য যেকোনো নিয়ামকের চেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। এ দুটি হৃদ্যন্ত্রের পাশাপাশি ফুসফুস ও লিভারেও ক্ষতি করে। তাই শারীরিক সুস্থতায় এসব অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি।
মানসিক চাপ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ হার্টের অসুখের অন্যতম কারণ। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে ভ্রমণ, বই পড়া, রান্না করাসহ পছন্দের যেকোনো কাজ করতে পারেন। প্রয়োজনে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেকোনো খাবার শরীরের জন্য খারাপ। তাই হার্ট ফ্রেন্ডলি খাবারও শরীরের চাহিদার অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
আগামীকাল অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার বিশ্ব হার্ট বা হৃৎপিণ্ড দিবস। এ দিবসের আগে জেনে রাখুন, হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা নিজের হাতে। এককথায় বললে, হৃৎপিণ্ড ঠিক রাখতে লাইফস্টাইলে বদল আনুন।
শুধু বয়স্ক এবং মোটা মানুষদের হার্টের অসুখ হয়—এই ধারণা মোটেও সঠিক নয়। বর্তমানে তরুণদের মাঝে হার্টের অসুখ ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের পরিমাণও বাড়ছে। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অল্প বয়সী হার্টের রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে।
প্রতিবছর বিশ্বে অন্তত পৌনে দুই কোটি মানুষ হৃৎপিণ্ডের কোনো না কোনো রোগে প্রাণ হারায়। বাংলাদেশেও এ সংখ্যা কম নয়। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত হৃৎপিণ্ডের অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই কোটিতে উত্তীর্ণ হবে। অথচ সচেতন হলেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ
করা যায়।
হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে করণীয়
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
হার্টের রোগ প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আপনাকে সঠিক খাবার বাছাই করা শিখতে হবে। সব ধরনের ফল ও রঙিন শাকসবজি খেতে হবে। শাকসবজি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এগুলো ধমনির সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এর আঁশ রক্তে খারাপ চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দেয় বলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। শাকসবজি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত একটি পেয়ারা বা আপেল খেতে চেষ্টা করতে হবে।
কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোটসহ সব ধরনের বাদাম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই বাদামগুলো প্রোটিন, আঁশ, খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। বাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এটি রক্তের এলডিএল, কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হার্টের সুরক্ষা দেয়।
ডার্ক চকলেট হার্টের জন্য উপকারী খাবার। মস্তিষ্কের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এটি। ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
প্রতিদিন ১ থেকে ২ কাপ টক দই খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে প্রোবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। টক দই পরিপাকতন্ত্র এবং হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষায় কাজ করে।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি কার্যকরী। এটি শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। পাশাপাশি গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে হার্ট ফ্রেন্ডলি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মাছ পাওয়া না গেলে যেকোনো তৈলাক্ত মাছ খাওয়া যাবে।
গরু বা খাসির মাংসসহ অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যাবে না। এমন মাংস খেতে হবে যার গায়ে কোনো চর্বি লেগে থাকে না। রেডমিট রান্নার পরে ঝোল বাদ দিয়ে খেতে হবে। হাঁস-মুরগির মাংস খেলে চামড়া বাদ দিয়ে খেতে হবে। এ ছাড়া কলিজা, মগজ, গুর্দা, ভুঁড়ি, পায়া ইত্যাদি খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। দিনের আলোতে ঘুমানো যাবে না। রাতের আঁধারে ঘুমালে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে। আর না ঘুমালে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
ব্যায়াম
শুধু ডায়াবেটিস হলে আর ওজন বেড়ে গেলে হাঁটতে হবে, এ ভাবনা সঠিক নয়। সুস্থ থাকার জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মিনিট ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে। সকাল, বিকেল বা রাতে সুবিধামতো সময়ে ব্যায়াম করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা হার্টের সুরক্ষা প্রদানসহ শরীরকে সব ধরনের রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
ধূমপান বন্ধ করতে হবে
ধূমপান ও মদ্যপান হৃদ্যন্ত্রকে অসুস্থ করতে অন্যান্য যেকোনো নিয়ামকের চেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। এ দুটি হৃদ্যন্ত্রের পাশাপাশি ফুসফুস ও লিভারেও ক্ষতি করে। তাই শারীরিক সুস্থতায় এসব অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি।
মানসিক চাপ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ হার্টের অসুখের অন্যতম কারণ। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে ভ্রমণ, বই পড়া, রান্না করাসহ পছন্দের যেকোনো কাজ করতে পারেন। প্রয়োজনে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেকোনো খাবার শরীরের জন্য খারাপ। তাই হার্ট ফ্রেন্ডলি খাবারও শরীরের চাহিদার অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
২ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৩ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৪ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৫ দিন আগে