ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি ডব্লিওএইচওর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ৪৩
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৪৯

আফ্রিকার দেশগুলোতে এমপক্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)। মূলত কঙ্গো থেকেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

পূর্বে মাংকিপক্স নামেই পরিচিত ছিল এই ভাইরাস। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এই ভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সময় কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার (১৪ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফ্রিকার ১৩টি দেশে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং এর নতুন রূপটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই ভাইরাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। 

এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘আজ জরুরি কমিটির বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরামর্শ আমি গ্রহণ করেছি।’ 

এই সংক্রামক ভাইরাস এখন মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসের নতুন রূপটি যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এর উচ্চ মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, আফ্রিকা এবং এর বাইরে আরও দ্রুত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই উদ্বেগজনক। এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আবশ্যক। 

জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এমপক্স ছড়ায়। এটি সঙ্গম, ত্বকের সংস্পর্শ, কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি পুঁজ ও ক্ষত সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ১০০ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়। 

চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কঙ্গোতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭০০ মানুষ। বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান, কেনিয়া এবং রুয়ান্ডাতেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। 

এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে যথা ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। এর আগে, ২০২২ সালে এমপক্স পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, সেবারের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে হালকা ক্লেড-২ ছিল। যা হোক, এবার অনেক বেশি মারাত্মক ক্লেড-১ ধরনটি ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অসুস্থ হওয়া ১০ শতাংশ মানুষ মারা গেছে। 

গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ভাইরাসটির ধরনে পরিবর্তন আসে। মিউটেশনের ফলে ক্লেড ১বি নামক একটি ধরন সৃষ্টি ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এই নতুন রূপটিকে একজন বিজ্ঞানী ‘এ পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। 

এদিকে গত মঙ্গলবার আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বিজ্ঞানীরা জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। 

সংস্থাটির প্রধান জিন কাসেয়া সতর্ক করে জানান, তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিলে এই প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই হুমকি নির্মূল করতে আমাদের অবশ্যই সক্রিয় এবং কঠোর হতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত