ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
আমরা সবাই জানি, ধূমপান ফুসফুসের ক্ষতি করে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এটি আপনার চোখেরও ক্ষতি করে? বহু মানুষেরই অজানা, সুস্থ দৃষ্টিশক্তির জন্য জরুরি রেটিনা, লেন্স ও ম্যাকুলার মতো অংশ ধূমপানের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তামাকের ধোঁয়ায় প্রায় ৭ হাজারের বেশি রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। মূলত এসব উপাদানই চোখের ক্ষতি করে থাকে।
ধূমপানের ফলে চোখের যে প্রধান সমস্যাগুলো দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ছানি: অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে এ সমস্যা হতে পারে। এ রোগের ফলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। ছানির সমস্যা হলে চোখের লেন্সের স্বচ্ছতা কমে যায় এবং আলো সহ্য করার ক্ষমতা কমতে থাকে ধীরে ধীরে। ফলে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে।
২. গ্লুকোমা: সারা বিশ্বে ছানির পরে গ্লুকোমা অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ। এটি হলে চোখের অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চোখ অন্ধ হয়ে যায়। ধূমপানের ফলে গ্লুকোমা হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
৩. চোখ শুকিয়ে যাওয়া: সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ চোখের জলীয় পদার্থ শুষে নেয়। ফলে চোখ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে। সাধারণত লাল ভাব, জ্বালা করা, চোখে অস্বস্তি, চোখ শুকিয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। দীর্ঘদিন এমনভাবে চলতে থাকলে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
৪. বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয়: ম্যাকুলা হলো রেটিনার কেন্দ্রীয় অংশ, যা দেখার কাজ করে। যাঁরা কখনো ধূমপান করেননি, তাঁদের চেয়ে ধূমপায়ীদের বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি। এ সমস্যার ফলে গাড়ি চালাতে, বই পড়তে ও রং চিনতে অসুবিধা হয়। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে এ রোগের ফলে অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে।
৫. ডায়াবেটিসজনিত রেটিনা সমস্যা: ধূমপান এ রোগের ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এ রোগের কারণে আংশিক অন্ধত্বের আশঙ্কা থাকে।
৬. ইউভিয়াইটিস: চোখের তিনটি স্তর রয়েছে। মাঝের স্তরকে বলা হয় ইউভিয়া। চোখের এই মাঝের স্তরের প্রদাহকে ইউভিয়াইটিস বলে। ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, চোখের লাল ভাব, চোখ ব্যথা, এমনকি দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইউভিয়াইটিস প্রায়ই ২০ থেকে
৫০ বছর বয়সে হয়। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে।
৭. থাইরয়েডের সমস্যাজনিত চোখের রোগ: গ্রেভস রোগ এমন একটি অবস্থা, যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করে। গ্রেভস রোগে আক্রান্তদের প্রায় এক-চতুর্থাংশের থাইরয়েডজনিত চোখের রোগ হয়। অতিরিক্ত ধূমপায়ীদের মধ্যে এ ধরনের চোখের রোগ হওয়ার আশঙ্কা অধূমপায়ীদের তুলনায় চার গুণ বেশি।
৮. শিশুর চোখে সমস্যা: যেসব নারী গর্ভাবস্থায় ধূমপান করেন, তাঁদের অপরিণত সন্তান জন্ম দেওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। অপরিণত জন্ম নেওয়া শিশুদের চোখের সমস্যার ঝুঁকি বেশি।
প্রতিকার
» ধূমপান ত্যাগ করা।
» আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ও প্রখর সূর্যালোক প্রতিরোধে উন্নত মানের রোদচশমা ব্যবহার করা।
» চোখ অসুস্থ হওয়া রোধ করতে বারবার পানি দিয়ে পরিষ্কার রাখা।
» নিয়মিত চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
লেখক: কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা
আমরা সবাই জানি, ধূমপান ফুসফুসের ক্ষতি করে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এটি আপনার চোখেরও ক্ষতি করে? বহু মানুষেরই অজানা, সুস্থ দৃষ্টিশক্তির জন্য জরুরি রেটিনা, লেন্স ও ম্যাকুলার মতো অংশ ধূমপানের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তামাকের ধোঁয়ায় প্রায় ৭ হাজারের বেশি রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। মূলত এসব উপাদানই চোখের ক্ষতি করে থাকে।
ধূমপানের ফলে চোখের যে প্রধান সমস্যাগুলো দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ছানি: অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে এ সমস্যা হতে পারে। এ রোগের ফলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। ছানির সমস্যা হলে চোখের লেন্সের স্বচ্ছতা কমে যায় এবং আলো সহ্য করার ক্ষমতা কমতে থাকে ধীরে ধীরে। ফলে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে।
২. গ্লুকোমা: সারা বিশ্বে ছানির পরে গ্লুকোমা অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ। এটি হলে চোখের অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চোখ অন্ধ হয়ে যায়। ধূমপানের ফলে গ্লুকোমা হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
৩. চোখ শুকিয়ে যাওয়া: সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ চোখের জলীয় পদার্থ শুষে নেয়। ফলে চোখ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে। সাধারণত লাল ভাব, জ্বালা করা, চোখে অস্বস্তি, চোখ শুকিয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। দীর্ঘদিন এমনভাবে চলতে থাকলে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
৪. বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয়: ম্যাকুলা হলো রেটিনার কেন্দ্রীয় অংশ, যা দেখার কাজ করে। যাঁরা কখনো ধূমপান করেননি, তাঁদের চেয়ে ধূমপায়ীদের বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি। এ সমস্যার ফলে গাড়ি চালাতে, বই পড়তে ও রং চিনতে অসুবিধা হয়। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে এ রোগের ফলে অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে।
৫. ডায়াবেটিসজনিত রেটিনা সমস্যা: ধূমপান এ রোগের ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এ রোগের কারণে আংশিক অন্ধত্বের আশঙ্কা থাকে।
৬. ইউভিয়াইটিস: চোখের তিনটি স্তর রয়েছে। মাঝের স্তরকে বলা হয় ইউভিয়া। চোখের এই মাঝের স্তরের প্রদাহকে ইউভিয়াইটিস বলে। ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, চোখের লাল ভাব, চোখ ব্যথা, এমনকি দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইউভিয়াইটিস প্রায়ই ২০ থেকে
৫০ বছর বয়সে হয়। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে।
৭. থাইরয়েডের সমস্যাজনিত চোখের রোগ: গ্রেভস রোগ এমন একটি অবস্থা, যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করে। গ্রেভস রোগে আক্রান্তদের প্রায় এক-চতুর্থাংশের থাইরয়েডজনিত চোখের রোগ হয়। অতিরিক্ত ধূমপায়ীদের মধ্যে এ ধরনের চোখের রোগ হওয়ার আশঙ্কা অধূমপায়ীদের তুলনায় চার গুণ বেশি।
৮. শিশুর চোখে সমস্যা: যেসব নারী গর্ভাবস্থায় ধূমপান করেন, তাঁদের অপরিণত সন্তান জন্ম দেওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। অপরিণত জন্ম নেওয়া শিশুদের চোখের সমস্যার ঝুঁকি বেশি।
প্রতিকার
» ধূমপান ত্যাগ করা।
» আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ও প্রখর সূর্যালোক প্রতিরোধে উন্নত মানের রোদচশমা ব্যবহার করা।
» চোখ অসুস্থ হওয়া রোধ করতে বারবার পানি দিয়ে পরিষ্কার রাখা।
» নিয়মিত চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
লেখক: কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৪ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে