নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছেন তো

ডা. গৈরিকা রায় গোস্বামী
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ০৩

আমাদের শরীরের সুস্থতা পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। বয়স বাড়ার সঙ্গে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে। তাই বয়স ত্রিশের কোঠা পার হলে প্রত্যেকেরই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি। এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে রোগ নিরাময় সম্ভব। জেনারেল ফিজিশিয়ানের পরামর্শ মতে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রসিদ্ধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো থেকে উপযুক্ত শরীর পরীক্ষার প্যাকেজ নির্বাচন করে পরীক্ষা করা যেতে পারে।

যেসব পরীক্ষা করানো দরকার

  • মপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি): এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের দেহের সব ধরনের রক্ত কণিকার মাত্রা দেখা হয়। বিভিন্ন প্রকারের অ্যানিমিয়া, সংক্রমণ, এমনকি রক্তের ক্যানসার এই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব।
  • ব্লাড গ্লুকোজ: রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য এটি করা হয়। ডায়াবেটিসের রোগী, যাঁদের ডায়াবেটিস হয়নি, কিন্তু পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের মাঝে ছিল বা আছে, তাঁদের জন্য এটি করা জরুরি। এটি খালি পেটে ও খাবার গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর দুইভাবে পরীক্ষা করা যায়।
  • সিরাম বিলিরুবিন: যকৃতের অবস্থা ও কার্যকারিতা দেখার জন্য এ পরীক্ষাটি করা হয়।
  • সিরাম ক্রিয়েটিনিন: কিডনিতে কোনো রোগের উপস্থিতি আছে কি না, তা জানার জন্য এ পরীক্ষাটি করা হয়।
  • সিরাম টোটাল কোলেস্টেরল: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষার জন্য এটি করা হয়। এই পরীক্ষা খালি পেটে করলে সঠিক মাত্রা নির্ণয় করা যায়, ভরা পেটে করলে খাবারের উপাদান রক্তে মিশে আসল মাত্রা পরিবর্তন করে দিতে পারে।
  • ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) ও ইকোকার্ডিওগ্রাম: হার্টের অবস্থা দেখার জন্য এই পরীক্ষা দুটি করা হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে যেহেতু হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে, তাই এই পরীক্ষাগুলো করে হৃৎপিণ্ডে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে কি না ও কার্যকারিতা কেমন তা দেখার জন্য পরীক্ষা দুটি করা উচিত।
  • বুকের এক্স-রে: ফুসফুসের রোগ নির্ণয়ের জন্য এ পরীক্ষাটি করা হয়।
  • আলট্রাসনোগ্রাফি: বর্তমান সময়ে শরীরের যেকোনো জায়গায় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এ পরীক্ষাটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ যেকোনো অঙ্গে এমনকি রক্তনালিতে রোগের উপস্থিতি পরীক্ষা করা যায়।
  • রক্তচাপ পরীক্ষা: উচ্চ রক্তচাপ থেকে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই রক্তচাপ স্বাভাবিক আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা জরুরি।
  • চোখ পরীক্ষা: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়। তাই চল্লিশ বছর বয়স থেকে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো দরকার।
  • দাঁত পরীক্ষা: দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য বছরে একবার দন্তচিকিৎসক দেখানো উচিত।

এ ছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ও জরায়ু ক্যানসার স্ক্রিনিং পরীক্ষা ও পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট পরীক্ষা করা দরকার। 

লেখক: প্রভাষক, প্যাথলজি বিভাগ, বিক্রমপুর ভূঁইয়া মেডিকেল কলেজ

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত