সশরীরে রণক্ষেত্রে যেতে পছন্দ করতেন চাদের প্রেসিডেন্ট    

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২১, ১২: ০৩
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২১, ১২: ১৫

ঢাকা: যুদ্ধের ময়দানে লড়াইয়ে গিয়ে মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি মারা গেছেন।   ১৯৯০ সালে বিদ্রোহের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইদ্রিস দেবির মৃত্যু রণক্ষেত্রেই হলো ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়,  চাদের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাদের লড়াইয়ের খোঁজ খবর নিতে প্রায়ই রণক্ষেত্রে সশরীরে চলে যেতেন ইদ্রিস দেবি। গত বছর মার্চেও চাদের বোহোমা গ্রামে সেনা ঘাটিতে  বোকো হারাম যোদ্ধারা হামলা চালালে সেখানে  উপস্থিত হয়ে সেনাদের নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায় ইদ্রিস দেবিকে।

১৯৯০ সালে বিদ্রোহের মাধ্যমে চাদের প্রেসিডেন্ট হন ইদ্রিস দেবি।  পরে ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে ভোটের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় আসেন ইদ্রিস দেবি। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে ২০১৮ সালে চাদের সংবিধানও সংশোধন করেছিলেন তিনি। 

চাদের জাঘাওয়া নৃগোষ্ঠীর একটি পরিবারে জন্ম নেওয়া ইদ্রিস দেব বেড়ে ওঠেন চাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল এন্নেদিতে। ১৯৭০ সালে গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি চাদের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।  পরে তিনি ফ্রান্স থেকে সেনাবাহিনীর উন্নত প্রশিক্ষণ রপ্ত করেন।

 ইদ্রিস দেবিকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা চালিয়েছে চাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। বিদ্রোহীরা ২০০৬ , ২০০৮ এবং ২০১৯ সালে রাজধানী এনজামিনাতেও পৌঁছে  যায় বিদ্রোহীরা। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের সহায়তা নিয়ে তিনি বিদ্রোহীদের প্রতিহত করেছেন।

ইদ্রিস দেবির নেতৃত্বে চাদের সেনারা ইসলামিক স্টেট এবং আল-কায়দা সমর্থিত বিদ্রোহী গ্রুপ সাহেল এবং বোকো হারামের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। 

গতকাল মঙ্গলবার চাদের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, ১১ এপ্রিল দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণার এক দিন পরই  তাঁর মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়। তবে কোন পরিস্থিতিতে ইদ্রিস দেবির মৃত্যু  হয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

এদিকে এরই মধ্যে দেশটির সরকার ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী ১৮ মাস সরকার পরিচালনা করবে প্রেসিডেন্ট ইদ্রিসের ৩৭ বছর বয়সী ছেলে কাকার নেতৃত্বে মিলিটারি কাউন্সিল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা চাদের সংবিধানে নেই। সংবিধানের যা বলা রয়েছে, তা হলো প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে বা তিনি মারা গেলে সংসদের স্পিকার ৪০ দিনের জন্য দেশের দায়িত্ব নেবেন।

চাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার ইদ্রিস দেবির শেষ কৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। আর এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন  চাদের বন্ধু দেশগুলোর সরকারেরা।

এদিকে ইদ্রিস দেবির মৃত্যুতে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছে চাদের জনগণ। এ নিয়ে চাদের রাজধানীর  এনজামিনার বাসিন্দা থিয়েরি  জিকোলৌম বলেন, খবরটি অবাক করে  দিয়েছে। তাঁর মৃত্যুর খবর আমাকে নারিয়ে দিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে ক্যু-এর মাধ্যমে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

নাদিদেয়াম সাবের নামে এনজামিনার আরেক  বাসিন্দা  বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল জয় ঘোষণার পরের দিন। পরের দিন আমরা তাঁর মৃত্যুর খবর পেলাম।

ইদ্রিস দেবির মৃত্যুর পর চাদের স্কুল এবং সরকারি অফিসগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত