দুর্বল হয়ে পড়ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী, মিলিশিয়া গঠনে জোর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ৪৫

মিয়ানমারে ইয়াঙ্গুন, বাগো ও তানিনথারি অঞ্চল এবং মোন রাজ্যে ‘গণ মিলিশিয়া’ গঠন করছে দেশটির সরকার। অস্ত্র, নগদ অর্থ ও খাদ্য দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু বাহিনীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছে শাসক গোষ্ঠী। এমনকি অনেক অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের মিলিশিয়াতে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মোন রাজ্যের মিলিশিয়ার হাতে অস্ত্র তুলে দেন জান্তা বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল নিয়ুন্ত উইন সোয়ে এবং দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সো।

সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন অনুসারে, জেনারেল থেত পোনে এবং ইয়াঙ্গুন কমান্ডার মেজর জেনারেল জ হেইন হ্লেগু এবং তাইক্কি শহরে মিলিশিয়াদের অস্ত্র সরবরাহ করেন।

জেনারেল তেজা কিয়াও এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কি থেইক গত শুক্রবার পূর্ব বাগোতে মিলিশিয়াদের হাতে অস্ত্র–গোলাবারুদ দেন। উপকূলের আঞ্চলিক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও সোয়ার গত রোববার তানিনথারি অঞ্চলের মাইয়েকে এবং গত সোমবার পশ্চিম বাগো মিলিশিয়াদের অস্ত্র দিয়েছেন।

কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ও তাদের সরকারবিরোধী মিত্ররা জান্তার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পূর্ব বাগোর সীমান্তবর্তী নেপিতাওয়ে বেশ শক্তিশালী।

নেপিতাওয়ের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বাগোর পূর্বাঞ্চলের মিলিশিয়াদের চার মাস আগেই সশস্ত্র করা হয়েছিল।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে কারেন রাজ্যে জান্তার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা কারেন বর্ডার গার্ড ফোর্স গত মাসে বলে, তারা সামরিক বাহিনী থেকে আলাদা হয়ে যাবে এবং সরকারের অর্থ বা অন্যান্য সরবরাহ আর গ্রহণ করবে না।

মিলিশিয়ারা দীর্ঘদিন ধরে সামরিক বাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য সংগঠনের পাশাপাশি নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আঞ্চলিক কমান্ডের অধীনে সামরিক বাহিনীর প্রতিরক্ষামূলক কৌশলের অংশ ছিল।

ইয়াঙ্গুন মিলিশিয়ারা রাত্রিযাপন করা অতিথিদের নিরাপত্তায় টহল দেয়। দেশটির জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ইউ ওয়াসাওয়ার নেতৃত্বে সাগাইং অঞ্চলের কান্তবালু জেলার মিলিশিয়া বাহিনীর আকার বেশ বড়। এরা জান্তা সেনাদের পাশাপাশি অভিযান ও অগ্নিসংযোগের জন্য কুখ্যাত।

মিলিশিয়ায় যোগদানের জন্য বাগো পুরুষদের দলে দলে ধরে নিয়ে বাছাই করা হচ্ছে। তাঁদের খাবার ও বেতনের টাকার জন্য গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।

বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার এবং বিদ্রোহী বাহিনীগুলো সৈন্যদের পক্ষ ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে।

গত ২৭ অক্টোবর উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে অপারেশন ১০২৭ শুরু হওয়ার পর থেকে হতাহত, দলত্যাগ এবং নিয়োগ সংকটের কারণে জান্তা সেনার সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।

সরকার দেশজুড়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের তলব করেছে এবং দুটি সিভিল সার্ভিস একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণার্থী এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রভাষক এবং শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং গত বছরের সেপ্টেম্বরে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্য সফরের সময় লাশিওতে মিলিশিয়াদের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু অপারেশন ১০২৭ শুরু হওয়ার পর থেকে জান্তা সরকার শান রাজ্যের অনেক শহর এবং শত শত শক্ত ঘাঁটি হারিয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত