বাড়ির বাইরে পা বাড়াতেও ভয় পাচ্ছেন আফগান নারীরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ১৯
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ২৮

আফগানিস্তানের পথেঘাটে নারী পথচারী কিংবা যাত্রীর সংখ্যা একেবারে কমে গেছে। আফগান নারীরা দাবি করেছেন, বছরের শুরু থেকে সঠিক উপায়ে হিজাব না পরার দায়ে সারা দেশে গ্রেপ্তার শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁরা বাড়ির বাইরে পা বাড়াতে ভয় পাচ্ছেন। আজ রোববার কয়েকজন নারীর বরাত দিয়ে দেশটির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে।

রাজধানী কাবুলে বসবাস করা ২৭ বছর বয়সী ফারখুন্দা নামের এক নারী নিক্কেই এশিয়াকে জানান, সম্প্রতি তিনিসহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করার পর থেকে তাঁর বোন এখন ধর্মশিক্ষার ক্লাসে যেতেও ভয় পায়।

পোশাক কোড ভঙ্গ করার দায়ে সম্প্রতি আফগানিস্তানে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ফারখুন্দা তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দেশটির তালেবান শাসকেরা নারীদের জন্য এমন একটি ‘পোশাক কোড’ জারি করেছে, যার মাধ্যমে শুধু চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে না। এ ক্ষেত্রে অনেকে হিজাব পরেও মুখমণ্ডলের কিয়দংশ দেখা যাওয়ার ফলে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

১০ জানুয়ারি দেশটির ধর্মীয় পণ্ডিতদের কাছে তালেবানের ধর্ম প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নারী পুলিশের সহায়তায় ওই নারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সেই সব মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছি, যারা সঠিকভাবে হিজাব পরেনি এবং নগ্ন ছিল।’

ফারখুন্দা জানান, গ্রেপ্তারের সময় তিনি এবং অন্য নারীদের সবাই হিজাব পরা ছিলেন। তারপরও চোখের বেশি দেখা যাচ্ছে—এমন অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা লিখিত আশ্বাস দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

ফারখুন্দা বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এসে আশ্বস্ত করলে সবাইকে ছেড়ে দিয়েছিল। আসলে নারীদের বাড়ির বাইরে যেতে দেয় না তালেবান।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিক্কেইকে বলেছে, আফগান সমাজ থেকে নারীরা ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। সংস্থাটির নারী অধিকারবিষয়ক সহযোগী পরিচালক হেদার বার বলেছেন, ‘আমরা একটি তীব্র ক্র্যাকডাউন দেখছি। তালেবানরা শুধু নারীদের ওপর নতুন নিয়ম আরোপ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা তা প্রয়োগও করছে।’

গ্রেপ্তার হওয়া আরেক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিক্কেইকে জানান, কারও সঙ্গে, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে তাঁকে বারণ করা হয়েছে। নিজের সঙ্গে হওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই নারী বলেন, ‘আমাদের নারী পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও তাদের সঙ্গে ছিল পুরুষ সহকর্মীরা। গ্রেপ্তারের সময় তারা আমাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে।’

১১ জানুয়ারি আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ) এ ধরনের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে তালেবান সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব আটক সব নারীকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে রাজধানী কাবুলে সম্প্রতি গ্রেপ্তারের পর ছাড়া পাওয়া ৪৮ বছর বয়সী মীনা এখন তাঁর মেয়েকে রুটি কেনার জন্য বাড়ির বাইরে পাঠাতেও এখন ভয় পান। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স মাত্র ১১ বছর। আমরা তাকে বাইরে যেতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আশঙ্কা করছি, তালেবানরা তাকেও গ্রেপ্তার করবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত কয়েকজন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত