বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি করা চক্রটির ভাগ-বাঁটোয়ারা এখনো চলছে: জাতিসংঘ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩: ২১
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ১৯

২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার হ্যাক করে রিজার্ভ চুরি করা উত্তর কোরিয়ার লাজারাস হ্যাকার গ্রুপ এবং টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত এর সহযোগী দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার চক্রটি এখনো সক্রিয়। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো চক্রটি এখন আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যাংকিং নেটওয়ার্কগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে অর্জিত সম্পদ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।

আজ সোমবার ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা পাচারের অর্থ এবং অবৈধ আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যাংকিং নেটওয়ার্কগুলো দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় প্রতারক এবং মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছে।

সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, ক্যাসিনো এবং ক্রিপ্টো কারেন্সি বিনিময়ের মাধ্যমগুলো এখন এ চক্রের অপরাধ সংগঠনের মূল স্থান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের মাদকদ্রব্য ও অপরাধ কার্যালয় (ইউএনওডিসি) বিশদ বিবরণ না দিয়ে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার লাজারাস গ্রুপসহ হ্যাকাররা মেকং এলাকায় অর্থাৎ থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস এবং কম্বোডিয়ায় এই ধরনের ভাগাভাগির বেশ কয়েকটি নজির দেখা গেছে। ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং ব্লকচেইন ডেটা বিশ্লেষণ করে তাদের কার্যকলাপ শনাক্ত করা হয়েছে।

ইউএনওডিসির রিপোর্ট সম্পর্কে জেনেভায় জাতিসংঘের উত্তর কোরিয়া মিশনের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিল ব্যাংকক পোস্ট। ‘ইস্যুটি সম্পর্কে পরিচিত নন’ বলে তিনি জানান। শুধু তাই নয়, দাবি করেছেন—লাজারাস নিয়ে আগের প্রতিবেদনটি ছিল নানা কল্পনা এবং ভুল তথ্যে ভরা। 

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়ার মুখ্য গোয়েন্দা ব্যুরো লাজারাস হ্যাকার গ্রুপকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটির বিরুদ্ধে উচ্চ–পর্যায়ের সাইবার অপরাধ এবং র‍্যানসম (হ্যাক করে অর্থ আদায়) আক্রমণের একটি অপারেশনে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের চুরি করা তহবিলগুলো পিয়ংইয়ং এবং এর অস্ত্র কর্মসূচির অর্থায়নের অন্যতম উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ইউএনওডিসি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্পদশালী ব্যক্তিদের জুয়া খেলার সুযোগ করে দেওয়া দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার ক্যাসিনো এবং জাঙ্কেটগুলো অনিয়ন্ত্রিত ক্রিপ্টো কারেন্সি বিনিময় এবং এ অঞ্চলে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের ব্যবহৃত ব্যাংকিং ব্যবস্থার চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। 

ক্রিপ্টো এবং প্রচলিত নগদ অর্থের অজানা বিশাল অঙ্ক সরানো এবং পাচার করতে ক্যাসিনোগুলোকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদক পাচার এবং সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার এবং আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যাংকিং অপারেশনের জন্য জাঙ্কেট সেক্টরগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। 

প্রতিবেদনটিতে ফিলিপাইনের লাইসেন্সকৃত ক্যাসিনো এবং জাঙ্কেট অপারেটরদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাইবার আক্রমণ করে চুরি করা প্রায় ৮১ মিলিয়ন ডলার পাচারে সহায়তা করেছিল। এই অর্থ চুরির জন্য লাজারাস গ্রুপকে দায়ী করা হয়েছিল। 

এ বিষয়ে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ইউএনওডিসি প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ক্যাসিনো এবং ক্রিপ্টোর বিস্তার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় অপরাধ চক্রগুলোকে বিপুল শক্তি জুগিয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত