Ajker Patrika

ফরাসি চিকিৎসকের যৌন লালসার শিকার ৩০০ নারী-কিশোরী, বাদ যায়নি ছেলের বান্ধবীও

অনলাইন ডেস্ক
জোয়েল লে স্কোয়ার্নেক। ছবি: এএফপি
জোয়েল লে স্কোয়ার্নেক। ছবি: এএফপি

ফ্রান্সের এক সাবেক সার্জন তথা শল্যচিকিৎসক প্রায় ৩০০ রোগীকে যৌন নির্যাতন করেছেন। এমনকি তাঁর যৌন লালসা থেকে রেহাই মেলেনি নিজের ছেলের বান্ধবীরও। ৭৪ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের নাম জোয়েল লে স্কোয়ার্নেক। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার থেকে এক ফরাসি আদালতে তাঁর বিচার শুরু হয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোয়েল শিকার করেছেন, তাঁর নির্যাতনের শিকার হওয়া বেশির ভাগ ভুক্তভোগীর বয়স ১৫ বছরের কম। বিচারের মুখোমুখি এই অভিযুক্ত আদালতে স্বীকার করেছেন, তিনি তাঁর বাড়িতে আসা শিশুদেরও শিকার বানিয়েছিলেন।

ফ্রান্সের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভানের এক আদালতে গত সপ্তাহ থেকে জোয়েলের বিচার শুরু হয়েছে। ফ্রান্সের ইতিহাসে শিশু যৌন নির্যাতনের অন্যতম বৃহত্তম মামলা এটি। তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৮৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এক ডজন হাসপাতালের ২৯৯ জন রোগীকে নিপীড়ন বা ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব ভুক্তভোগীর বেশির ভাগকেই তিনি অজ্ঞান অবস্থায় বা জ্ঞান ফেরার পরপরই ধর্ষণ করেন।

শুক্রবার লে স্কোয়ার্নেক আরও স্বীকার করেন যে, তিনি তাঁর ছেলে এক বান্ধবীকেও ধর্ষণ করেছিলেন। নির্যাতনের শিকার হওয়ার সময় ওই ভুক্তভোগী নারী শিশু ছিলেন। তিনি আদালতে জানান, ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে লে স্কোয়ার্নেকের বাড়িতে যাওয়ার সময় তিনি তাঁর নিপীড়নের শিকার হন।

ওই নারী বলেন, যখন তাঁর বয়স মাত্র ৬ বছর, তখন স্কোয়ার্নেক তাকে একটি কামরায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। সেই সময় তার মা ও স্কোয়ার্নেকের স্ত্রী বসার ঘরে কথা বলছিলেন। কয়েক সপ্তাহ পর স্কোয়ার্নেক একটি বাথরুমে একা পেয়ে তাকে আবারও ধর্ষণ করেন। এর কয়েক মাস পর স্কোয়ার্নেক আবারও তাকে আলাদা করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি সে সময় দৌড়ে পালিয়ে মায়ের কাছে ফিরে যান।

স্কোয়ার্নেক তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনেক অভিযোগ মনে নেই বলে দাবি করেছেন। তবে আদালতে স্বীকার করেন যে, তিনি ‘বাথরুমের ঘটনাটি’ মনে করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে যখন বান্ধবীদের বাড়িতে আনত, তখন আমি তাদের নিপীড়ন করতাম। সেদিন আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম, আর তখনই ছোট্ট এস-কে (ভুক্তভোগী সেই নারীর নামের আদ্যক্ষর) টয়লেটে যেতে দেখি। আমি তখন টয়লেটে গিয়ে, ঠিক যেমনটা বর্ণনা করেছি সেই কাজগুলো করি।’

দীর্ঘ সময় চিকিৎসা পেশায় থাকলেও কর্মজীবনে স্কোয়ার্নেকের বিরুদ্ধে কখনো তদন্ত হয়নি। তবে ২০০৫ সালে শিশুদের যৌন নিপীড়নের ছবি রাখার দায়ে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তিনি ২০১৭ সালে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যান। এরপর এক ছয় বছর বয়সী শিশু তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে এবং পুলিশ তাঁর কম্পিউটারে সংরক্ষিত নির্যাতনের ডায়েরি ও অন্যান্য বিবরণ উদ্ধার করে।

আদালতে লে স্কোয়ার্নেক ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নির্যাতনের সময় কম কথা বলতেন, যাতে শিশুরা ভয় পেয়ে কথা না বলে। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু নিজের কথাই ভাবতাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত