Ajker Patrika

ধনীদের দেশত্যাগ ঠেকাতে সংগ্রাম করছে ইউরোপের সরকারগুলো

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জলবায়ু নীতি এবং বাজেট নিয়ে একমত হতে না পারলেও ‘এক্সিট ট্যাক্স’ বা ‘প্রস্থান কর’ চালুর ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দেখিয়েছে জার্মানির জোট সরকার। নতুন আইনে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে যদি কেউ ৫ লাখ ইউরোর বেশি বিনিয়োগ ফান্ড নিয়ে দেশ ছাড়তে চান, তাহলে জার্মানিতে অর্জিত মুনাফার ওপর তাঁকে আয়কর দিতে হবে।

জার্মানির মতো নরওয়েও একই পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে দেশটিতে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, দেশের বাইরে স্থায়ী হলে ধনীরা লভ্যাংশের ওপর কর দিতে বাধ্য হবেন।

কঠোর একটি এক্সিট ট্যাক্স চালু করার চেষ্টা করেছিল ফ্রান্সও। কিন্তু তাদের এই প্রস্তাব পাশ হতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউরোপের আরেক দেশ নেদারল্যান্ডসও নতুন এক্সিট ট্যাক্স চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।

ধনীদের দেশে আটকে রাখতে ইউরোপের দেশগুলোর এই ধরনের এক্সিট ট্যাক্স নিয়ে দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক। নরওয়ের ধনীদের ওপর যখন উচ্চ সম্পদ কর চাপানো হলো, তখন অনেকেই সুইজারল্যান্ডে চলে যান। এতে পরিস্থিতি এতটাই বদলে যায় যে, নরওয়ের বৃহত্তম ব্যাংক এনডিবি সুইজারল্যান্ডে একটি অফিস খুলে ফেলে। এ অবস্থায় দেশটির সোশ্যালিস্ট পার্টি দেশত্যাগীদের নিয়ে একটি ‘লজ্জার দেয়াল’ তৈরি করে। এই দেয়ালে কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয়।

ইউরোপের শেয়ারবাজার ও অর্থনীতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের বিদেশমুখী হওয়া ও সরকারগুলোর নতুন রাজস্ব উৎস খোঁজার প্রবণতা দুটোই বেড়েছে।

তবে ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, এই কর ব্যবস্থা আসলে খুব বেশি রাজস্ব আনে না। কারণ ধনীরা সহজেই আইনের ফাঁকফোকর খুঁজে বের করতে সক্ষম। ইউরোপীয় আইনও বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছে। যেমন—জার্মানির নতুন নিয়ম ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুঁজি চলাচলের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নরওয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সংশোধিত এক্সিট ট্যাক্স ১২ বছরে মাত্র ১২ কোটি ডলার রাজস্ব আনবে, যা ২০২৪ সালে দেশটির মোট রাজস্বের মাত্র ০.০৪ শতাংশ।

এই কর ব্যবস্থা সফল না হওয়ায় কোনো কোনো দেশ অবশ্য এক্সিট ট্যাক্স থেকে সরে আসছে। যেমন—ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ২০২২ সালে এক্সিট ট্যাক্স চালুর পরিকল্পনা করলেও শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করে।

অন্যদিকে, নরওয়েতে বিরোধী দলগুলো এক্সিট ট্যাক্সের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং তারা জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে। ফলে বিষয়টি নরওয়ের ধনীদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর হতে পারে এটা ভেবে যে—এই কর ব্যবস্থা হয়তো টিকবে না!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত