কয়েক মাস ঘাপটি মেরে থেকে ইউক্রেনের টেলিকম কোম্পানির সিস্টেম ধসিয়ে দিল রুশ হ্যাকাররা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ১৯
Thumbnail image

ইউক্রেনের টেলিযোগাযোগ খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান কিয়েভস্টারের সিস্টেমের ভেতরে দীর্ঘ কয়েক মাস ঘাপটি মেরে ছিল রুশ হ্যাকাররা। এই সময়ে রুশ হ্যাকাররা প্রতিষ্ঠানটির পুরো সিস্টেমই ধসিয়ে দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির সাইবার গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। তাঁর মতে, রুশ হ্যাকারদের এই আক্রমণ কেবল ইউক্রেন নয়, পশ্চিমা বিশ্বের জন্যও অনেক বড় একটি সতর্কবার্তা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার (এসবিইউ) সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক শাখার প্রধান ইলিয়া ভিতিয়াক বলেছেন, রুশ হ্যাকারদের হামলায় কিয়েভস্টারের সেবা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। কিয়েভস্টারের প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক রয়েছে। 

রুশ হ্যাকারদের এই হামলাকে ইলিয়া ভিতিয়াক ‘বিপর্যয়কর’ ও ‘বিধ্বংসী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এ ধরনের হামলা মূলত প্রতিপক্ষের ওপর মনস্তাত্ত্বিক হামলা ও ব্যাপক আকারে তথ্য সংগ্রহের জন্য করা হয়। তিনি বলেন, ‘এই হামলা একটি বড় ধরনের সতর্কবার্তা। তবে এই সতর্কবার্তা কেবল ইউক্রেনের জন্য নয়, পুরো পশ্চিমা বিশ্বের জন্য। এর মাধ্যমে এটি বোঝা গেছে, কেউই আসলে নাগালের বাইরে নয়।’ 

এই সময় ইউক্রেনীয় এই গোয়েন্দাপ্রধান জানান, কিয়েভস্টার ইউক্রেনের অন্যতম ধনী টেলিকম সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ২ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহকের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়া মানে অনেকটা ইউক্রেনের নিরাপত্তাই ঝুঁকির মুখে পড়া। ইলিয়া ভিতিয়াক আরও জানান, কিয়েভস্টার সাইবার নিরাপত্তা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। 

ভিতিয়াক আরও জানান, রুশ হ্যাকারদের হামলায় কিয়েভস্টারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে হাজারো ভার্চুয়াল সার্ভারসহ বিভিন্ন প্রাইভেট কম্পিউটার সার্ভারের তথ্য চিরতরে মুছে গেছে। তিনি এ সময় বলেন, এটিই সম্ভবত বিশ্বের প্রথম সাইবার আক্রমণ যার ফলে একটি টেলিকম কোম্পানির মূলভিত্তিই ধ্বংস হয়ে গেছে। 

গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকেই রুশ হ্যাকাররা কিয়েভস্টারের সিস্টেমে লুকিয়ে বা ঘাপটি মেরে ছিল বলে জানান ভিতিয়াক। এই সময়টাতে তারা কিয়েভস্টারের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছিল এবং সম্ভবত এই পরিস্থিতি চলেছে গত নভেম্বর পর্যন্ত। তাঁর সংস্থার গোয়েন্দা মূল্যায়ন বলছে, রুশ হ্যাকাররা ইউক্রেনীয় ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যও হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যবহারকরীর লোকেশন, ব্যক্তিগত বার্তা পড়া এমনকি ব্যবহারকারীর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণও তারা নিয়েছিল। 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কিয়েভস্টারের এক মুখপাত্র বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি এসবিইউয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর পাননি। এসবিইউ কিয়েভস্টারকে সিস্টেম ফেরত পেতে সহায়তা করছে বলেও জানান ভিতিয়াক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত