ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি বর্ধমানে খুশির হাওয়া

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৪, ২০: ২৫
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৫০

ড. মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই খুশির হাওয়া বইছে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে। কারণ, সেখানকার রানীগঞ্জ বাজারের কাছে লস্করদিঘি পশ্চিমপাড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি। 

ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হয়েছে।

এবিপি লাইভের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদিকে যখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এখনো উদ্বেগ কাটছে না দিল্লির, তখন খুশির হাওয়া বর্ধমানে। বর্ধমানের সঙ্গে ইউনূসের যোগাযোগ বরাবরই অত্যন্ত নিবিড়। তিনি সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সম্মানিত হয়েছেন। 

বর্ধমানের রানীগঞ্জ বাজারের কাছে লস্করদিঘি পশ্চিমপাড়ায় মহম্মদ ইউনূসের শ্বশুরবাড়ি। বর্তমানে সেখানেই সপরিবারে থাকেন তাঁর ছোট শ্যালক আশফাক হোসেন। 

মহম্মদ ইউনূসের স্ত্রী আফরোজি ইউনূস। তাঁরা ছয় ভাই-বোন। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন আফরোজি। তারপর বর্ধমান রাজ কলেজ। তারপর পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করেন। বাংলাদেশে গিয়ে ঢাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকায় থাকাকালীন বিয়ে হয় মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। 

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পান মহম্মদ ইউনূস। তাঁর আগে ও পরে, একাধিকবার বর্ধমানের শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন তিনি। সেখানে থাকেন তাঁর ছোট শ্যালক। আশফাক হোসেন জানান, তাঁর বোন বরাবরই ছিলেন খুবই মেধাবী ছাত্রী। ঢাকাতেই মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও বিয়ে। সেই বোন এখন যদিও অসুস্থ। 

তিনি বলেন, ‘জামাইবাবু দায়িত্ব নিচ্ছেন শুনে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের আবেদন, ভারতের সঙ্গে আরও মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলুন। সকলে মিলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যান।’ 

ইউনূসের কাছে কয়েকটি আবেদনও জানিয়েছেন আসফাক। তিনি বলেন, ‘ভারতীয়দের জন্য বাংলাদেশে স্পট ভিসার ব্যবস্থা করা হোক। এখন ভিসার জন্য ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লেগে যায়। অন্য দেশ অবশ্য দিয়ে দেয়। এই দেশের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়টি যাতে সহজ করা যায়, সেই জন্য আরজি জানাচ্ছি।’

আশফাক আরও জানান, অনেক সাধারণ জীবন যাপন করেন ইউনূস। খেতে ভালোবাসলেও, সব খাবারই খান অল্প অল্প করে। শীতে জামাইবাবুর বাড়ি গেলে অবশ্যই বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানাও যাবে। 

বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর তীব্র হয়েছে হিংসা। সংখ্যালঘুদের ওপর পাশবিক নির্বাচনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তাঁর মধ্যেও শ্যালক আশফাকের আশা, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোন পথে এগোয়, সেটাই আসল। 

আত্মীয়তার সম্পর্ক তো বটেই, ইউনূসের সঙ্গে বাংলার কর্মসূত্রে যোগও বহু পুরোনো। প্রেসিডেন্সির ২০০ বছরের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া খড়গপুর আইআইটিতেও যান মহম্মদ ইউনূস। এবার সেই মানুষটিই অস্থির সময়ে প্রতিবেশী দেশের দায়িত্ব নিলেন। 

ইউনূসের শপথ গ্রহণের পর তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লিখেছেন, ‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’ এখন সেই আশা ইউনূস রাখতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত