ঢাকা-নয়াদিল্লির সম্পর্কের মূল ভিত্তি দুই দেশের জনগণ: ভারত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩: ০৬
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৪৭
Thumbnail image
ভারত বলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো জনগণ। ছবি: ইন্ডিয়া টাইমসের সৌজন্যে

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি হলো দুই দেশের জনগণ। এ ছাড়া, ভারত একটি ‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ’ দেখতে চায় এবং এর প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বলতে গেলে, আমরা আগেও তা স্পষ্ট করেছি এবং আবারও বলছি, এই দৃষ্টিভঙ্গি পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের সময় স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। তিনি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য।’

এই মন্তব্য এমন একসময়ে এল, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত একাধিক মামলার আসামি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি জানিয়েছে।

শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি তাঁর সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং উভয় দেশের উদ্বেগ ও স্বার্থের প্রতি সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে গড়ে তোলার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘তিনি (মিশ্রি) আরও জোর দিয়ে বলেছেন যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের প্রধান অংশীদার হলো দুই দেশের জনগণ। ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে বাণিজ্য, সংযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বহুমুখী কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলোর লক্ষ্যই বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ। সুতরাং, এটাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘অনেক ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। তবে বাংলাদেশের প্রতি আমাদের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যা বললাম, আমরা সেই সম্পর্ক জোরদার করতে চাই।’

এদিকে, ভারত ও বাংলাদেশ আগামী ৫ জানুয়ারি এক যৌথ মুক্তি ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়া উভয় দেশের কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এই বিনিময় উভয় দেশের মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের মানবিক ও জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের বিনিময় সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে গিয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘মৎস্যজীবী ইস্যুতে বিনিময়টি ৫ তারিখে (জানুয়ারি) সম্পন্ন হবে। তাদের (বাংলাদেশের) পক্ষ থেকে ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং আমাদের পক্ষ থেকে ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবী ফেরত যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মৎস্যজীবীরা সাগরে ভুল করে পথ হারিয়েছিল, যেহেতু জলসীমায় সঠিক চিহ্ন থাকে না বা মানুষ পথ হারিয়ে ফেলতে পারে। এটাই এখানে ঘটেছে।’

এই পদক্ষেপ উভয় দেশের জন্য একটি মানবিক উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত