Ajker Patrika

ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসন চায় কংগ্রেস, হামাসের হামলাকে সন্ত্রাসবাদী বলল বিজেপি 

আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১১: ৫১
ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসন চায় কংগ্রেস, হামাসের হামলাকে সন্ত্রাসবাদী বলল বিজেপি 

মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ভারতের রাজনীতিতেও। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি দলটি ইসরায়েলিদের ওপর হামাসের হামলারও নিন্দা করেছে। ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে সন্ত্রাসী আক্রমণ বলে আখ্যা দিয়েছে। পাশাপাশি ইসরায়েলি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর পৃথক দুই প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির এক রেজল্যুশনে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব ভূখণ্ডে স্বায়ত্তশাসনের মাধ্যমে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি কংগ্রেস তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।’ পাশাপাশি ওয়ার্কিং কমিটির রেজল্যুশনে বর্তমান সংকটের কারণসহ অন্যান্য সব সমস্যার সমাধানে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। তবে রেজল্যুশনে ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। 

তবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ গত রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) শেয়ার করা এক টুইটে বলেন, ‘ইসরায়েলিদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ নিশ্চিত করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে।’ এ সময় তিনি আরও লেখেন, ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ইসরায়েলের জনগণের ওপর হামলার নিন্দা জানায়।’ 

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা ইসরায়েলের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। এক্সে (সাবেক টুইটার) বিজেপির অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা এক ভিডিওতে ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলাকে ভারতে চালানো বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়েছে, ‘আজ ইসরায়েল যেটার মুখোমুখি হয়েছে, ভারতও ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ধরনের হামলার শিকার হয়েছে। কখনোই ক্ষমা করা হবে না, কখনোই ভুলে যাওয়া যাবে না...।’ 

এর আগে হামলার পরদিন, অর্থাৎ গত রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদি জানান, তিনি ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার খবরে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি বলেন, ‘এই হামলার নিরপরাধ ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রার্থনা ও সহমর্মিতা। এই কঠিন সময়ে আমরা ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াচ্ছি।’ 

পরে গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই আলাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা এক টুইটে লেখেন, ‘এই কঠিন সময়ে ভারতের জনগণ ইসরায়েলের পাশে আছে। ভারত দৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীনভাবে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসামে মধ্যরাতে ট্রেনের ধাক্কায় ৭ হাতির মৃত্যু, রক্ষা পেলেন যাত্রীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ২১
শুক্রবার গভীর রাতে হাতির পালের ওপর উঠে যায় এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: এক্স
শুক্রবার গভীর রাতে হাতির পালের ওপর উঠে যায় এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: এক্স

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী এক্সপ্রেসের শক্তিশালী ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেনের যাত্রীরা সবাই সুরক্ষিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত যমুনামুখ-কামপুর সেকশনে শুক্রবার রাত ২টো ১৭ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় ১১-১২টি হাতির একটি পাল রেললাইন পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশা ও রাতের অন্ধকারের মধ্যে দ্রুতগতিতে থাকা সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসটি হাতির পালের ওপর উঠে পড়ে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সাতটি হাতি এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় হাতির যাতায়াত থাকলেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো পর্যাপ্ত সতর্কতা ছিল না।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জলকিশোর শর্মা জানিয়েছেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কোনো নির্ধারিত ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ ছিল না। তিনি বলেন, ‘চালক লাইনের ওপর হাতির পাল দেখতে পেয়েই দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক কষেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকায় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব হয়নি।’

রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কোনো যাত্রী আহত হননি এবং লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন সচল করার কাজ চলছে।

দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের গুয়াহাটি থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে হোজাই জেলায় অবস্থিত। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে দ্রুত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রাপথ রিশিডিউল করা হয়েছে এবং অনেক ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে।

বন দপ্তরের বিশেষ দল ইতিমধ্যে মৃত হাতিগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত হাতিগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশাপাশি শাবকও থাকতে পারে। রেললাইনটি হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেখানে হাতির পাল এল এবং চালকের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্য প্রাণীপ্রেমীরা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেললাইনের ধারে সেন্সর বা আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়াকে পশ্চিম সম্মান করলে আর যুদ্ধ হবে না: পুতিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে আক্রমণ করার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ‘অর্থহীন’।

পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান দেখানো হলে এবং পূর্বদিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ‘প্রতারণা’ বন্ধ করলে নতুন কোনো বিশেষ সামরিক অভিযান হবে না। তিনি তাঁর পুরোনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে ন্যাটো সম্প্রসারণ না করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পশ্চিম তা মানেনি।

মস্কোর একটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার বিশাল মানচিত্র ঝুলছিল। এই মানচিত্রে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল, এমনকি ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ওই অনুষ্ঠানটিতে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ৩০ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল।

ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।

দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।

পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৬
২০১৭ সালে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০১৭ সালে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ছবি: এপির সৌজন্যে

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।

এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।

জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।

মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।

গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।

১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।

গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৬
কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর। ছবি: পিটিআই
কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর। ছবি: পিটিআই

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।

শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’

বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’

থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।

বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’

শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত