ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করেছে যেসব দেশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪: ০৭
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ২০

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় কেবল বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৮ হাজার। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো কয়েক হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হতাহতের সংখ্যা মারাত্মক আকারে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে জোরালো হচ্ছে যুদ্ধবিরতির দাবি। ইসরায়েলের প্রতি গণহত্যার অভিযোগ এনে করা হয়েছে মামলা। ইসরায়েলকে সহায়তা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বেশ কিছু দেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী। রাস্তায় প্রতিবাদ করেছে সাধারণ মানুষ।

মানবিক যুদ্ধবিরতির কথা বললেও ইসরায়েলের জন্য সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ। জার্মানি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স এখনো সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলকে।

তবে গাজায় নিরপরাধ বেসামরিকদের ওপর গণহত্যা বন্ধের জন্য ইসরায়েলের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ। আর সেই চাপের প্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করেছে।

গত জানুয়ারির শেষ দিকে গাজায় গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেয় আইসিজে বা বিশ্ব আদালত। সেই নির্দেশ অনুসারে, গত সোমবার নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত সরকারকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের সমস্ত যন্ত্রাংশের রপ্তানি বন্ধ করার জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে। উল্লেখ্য, গাজায় বোমা হামলায় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে ইসরায়েল।

সরকারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ডাচ মানবিক সংস্থা অক্সফাম নোবিব, প্যাক্স নেদারল্যান্ডস পিস মুভমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং দ্য রাইটস ফোরামের মামলার ফলাফল ছিল এই রায়।

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বিক্ষোভ। ছবি: এএফপিগত ৬ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলে গানপাউডার রপ্তানির জন্য দুটি লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় বেলজিয়ামের আঞ্চলিক সরকার। আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে সেখানে। গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল সেই আদেশে।

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবিষয়ক বৃহৎ কোম্পানি এলবিট সিস্টেমস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে জাপানের অন্যতম বড় বাণিজ্য সংস্থা ইতোচু। সং

সংস্থাটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সুয়োশি হাচিমুরা বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা রোধ এবং বেসামরিকদের সাহায্যের জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বিশ্ব আদালত গত মাসে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেওয়ার পর ইতোচু সহযোগিতা শেষ করার পরিকল্পনা করে।

হাচিমুরা আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গত ২৬ জানুয়ারি ইসরায়েলকে যে আদেশ দিয়েছেন, তা বিবেচনায় নিয়ে আদালতের ভূমিকাকে সমর্থন করেছে জাপান সরকার। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে আমরা ইতিমধ্যেই এলবিট সিস্টেমের সঙ্গে নতুন এমওইউ (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) কার্যক্রম স্থগিত করেছি এবং ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ এমওইউ শেষ করার পরিকল্পনা করেছি।’

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি গত ২০ জানুয়ারি জানান, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জামের সমস্ত চালান স্থগিত করেছে ইতালি। ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা এলি শ্লেইন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার প্রতিক্রিয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয় ইতালি।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস গত জানুয়ারিতে বলেছিলেন যে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা ইসরায়েলের কাছে কোনো অস্ত্র বিক্রি করেনি এবং এখন অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তবে গত সোমবার স্প্যানিশ দৈনিক এল দিয়ারিওর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, স্পেন গত নভেম্বরে ইসরায়েলের কাছে প্রায় ১১ লাখ ডলারের গোলাবারুদ রপ্তানি করেছিল। স্পেনের বাণিজ্যবিষয়ক সেক্রেটারি অব স্টেট জিয়ানা মার্গারিদা মেন্দেজ গোলাবারুদ বিক্রির ন্যায্যতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেন, পরীক্ষা বা প্রদর্শনের জন্য গোলাবারুদ রপ্তানি করা হয়েছিল। আর এই চুক্তির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল ৭ অক্টোবরের আগে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত