পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ৩০
Thumbnail image
বিশ্বের সপ্তম দেশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান প্রথম পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করে। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে জানান, গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের জাতীয় উন্নয়ন কমপ্লেক্স (এনডিসি) এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এসব সংস্থার কোনো সম্পত্তি থাকলে সেগুলো জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের ব্যবসা করতে পারবে না। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট দাবি করেছে, পাকিস্তানের জাতীয় উন্নয়ন কমপ্লেক্স এনডিসি দেশের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সরঞ্জাম সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। তাতে আরও বলা হয়েছে, এনডিসি পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরিমাণ বাড়ার জন্য দায়ী।

এনডিসির পাশাপাশি পাকিস্তানের করাচির অ্যাফিলিয়েটস ইন্টারন্যাশনাল, আখতার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং রকসাইড এন্টারপ্রাইজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দাবি, এ প্রতিষ্ঠানগুলো এনডিসির সঙ্গে মিলে পরমাণু অস্ত্রের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছে।

গবেষণা সংস্থা বুলেটিন অব দ্য অ্যাটোমিক সায়েন্টিস্টস জানায়, বিশ্বের সপ্তম দেশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান প্রথম পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করে। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডারে প্রায় ১৭০টি ওয়ারহেড রয়েছে। দেশটির শাহীন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। তবে ইসলামাবাদ পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ চুক্তিকে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের জন্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি বলা হয়।

এদিকে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে দুর্ভাগ্যজনক ও পক্ষপাতমূলক বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা জানায়, এ ধরনের দ্বিমুখী মানদণ্ড এবং বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা বিপন্ন করবে। সামরিক বৈষম্য বাড়াতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে পাকিস্তান অভিযোগ করছে। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে প্রভাবিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পাকিস্তানের এ ধরনের কৌশলগত সামর্থ্য প্রয়োজনীয়।

করাচিভিত্তিক তিনটি বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই অমূলক সন্দেহ ও অনুমানের ভিত্তিতে অতীতেও কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে একই ধরনের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’

পাকিস্তান এবং ইরানের অস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচিতে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও পাকিস্তান, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মিলার বলেন, অস্ত্র ব্যবহারের প্রসার এবং সংশ্লিষ্ট ক্রয় কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত