Ajker Patrika

গ্রিসে তিন শতাধিক পাকিস্তানি ডুবে মৃত্যুর শঙ্কা, পাকিস্তানে জাতীয় শোক ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, ১৩: ১৮
গ্রিসে তিন শতাধিক পাকিস্তানি ডুবে মৃত্যুর শঙ্কা, পাকিস্তানে জাতীয় শোক ঘোষণা

গ্রিসে জাহাজডুবির ঘটনায় ৩০০-এর অধিক পাকিস্তানি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের সিনেটের চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ সানজরানি গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।    

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজ সোমবার দেশজুড়ে শোক দিবস পালনের ডাক দিয়েছেন। এদিন দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। সম্প্রতি গ্রিসের উপকূলে একটি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। 

গ্রিস সীমান্তে ডুবে যাওয়া ওই জাহাজে প্রায় ৭০০ মানুষ ছিলেন। মনে করা হচ্ছে, তার মধ্যে ৩০০-এর অধিক পাকিস্তানি নাগরিক ছিলেন। তাঁদের কথা মনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী শোক দিবসের ডাক দিয়েছেন। ওই জাহাজডুবির ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ১০৪ জনকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু বাকিদের খোঁজ এখনো মেলেনি। তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে।

জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন পাকিস্তানি। এথেন্সে পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মীরা গিয়ে ওই ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছেন। পাকিস্তানি ছাড়াও ওই জাহাজে সিরিয়া, মিসর, প্যালেস্টাইনের মানুষ ছিলেন। তাঁরা সকলেই লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছিলেন। ইউরোপে থাকার বাসনা নিয়েই তাঁরা রওনা হয়েছিলেন।

পাকিস্তানের ধারণা, ওই জাহাজে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি নাগরিক ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশ পাকিস্তানের কাশ্মীর এবং গুজরাট অঞ্চল থেকে গিয়েছিলেন। বস্তুত, প্রতি বছর হাজার হাজার পাকিস্তানি ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের অধিকাংশই মাঝপথে ধরা পড়েন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হাজতবাস করতে হয় তাঁদের।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরতে হবে। দেশজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তাদের জেরা করে কী তথ্য মিলেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে আরও বহু লোককে আটক করা হবে। অবৈধ ব্যবসা ছড়িয়ে আছে দেশজুড়ে। পাকিস্তানের কাশ্মীর এবং গুজরাট অঞ্চলে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ওই অঞ্চল থেকে প্রচুর যুবক ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একটি অংশ এর জন্য গ্রিসের কোস্ট গার্ডের দিকে আঙুল তুলছে। অভিযোগ, গ্রিস বরাবরই শরণার্থীদের নিজেদের জলসীমা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। সাহায্য চাওয়া সত্ত্বেও তারা ওই জাহাজটিকে সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ।

গ্রিসের কোস্ট গার্ডের এক ক্যাপ্টেন নাম প্রকাশ যাবে না এই শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জাহাজটির কাছাকাছি পৌঁছে তাঁরা দড়ি দিয়ে জাহাজটিকে বাঁধার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জাহাজের লোকেরা রাজি হননি। তাঁরা বলছিলেন, তাঁরা ইতালি যাবেন, গ্রিসে দাঁড়াবেন না। ফলে বহু চেষ্টা করেও ওই জাহাজটিকে দাঁড় করানো যায়নি। কম গতিতে জাহাজটি চলছিল।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে ক্যাপ্টেনের বক্তব্য মেলেনি। এপি এবং রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, ওই জাহাজ থেকে একাধিকবার সাহায্যের দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন অ্যাকটিভিস্ট সংগঠনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। জাহাজটি ডোবার আগে ১৫ ঘণ্টা সময় ছিল হাতে। কিন্তু গ্রিসের কোস্ট গার্ড কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সময়মতো উদ্ধারকাজ হলে এত মানুষের মৃত্যু হতো না। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এই পরিস্থিতিতে কোস্ট গার্ড জাহাজটিকে উদ্ধার করতে বাধ্য। ফলে গ্রিসের কোস্ট গার্ড যা বলছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো মানতে নারাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত