Ajker Patrika

ট্রাম্প–মোদির আলোচনায় শুধুই বাণিজ্য, উপেক্ষিত সংখ্যালঘু ও মানবাধিকার

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ০৮
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি

দুই দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে দুই নেতা বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তাঁরা সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিং করেছেন।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বাণিজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কে ন্যায্যতা ও পারস্পরিক সহযোগিতায় জোর দিয়েছেন। বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস, শুল্কনীতি, প্রতিরক্ষা চুক্তি ও অভিবাসননীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাম্প ও মোদির বৈঠকে আলোচনার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

বাণিজ্য সম্পর্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উচ্চ শুল্কনীতির সমালোচনা করেছে। ট্রাম্প বলেছেন, ভারত যে পরিমাণ শুল্ক আরোপ করবে, আমরাও সেই পরিমাণই আরোপ করব। ট্রাম্পের মতে, উভয় দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করতে হবে।

ভারত অবশ্য ইতিমধ্যে কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মার্কিন রপ্তানিকারক উপকার হতে পারে। বিশেষত, উচ্চমূল্যের মোটরসাইকেল ও গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে এবং বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ভারতের কাছে কয়েক মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করা হবে, যার মধ্যে সম্ভাব্য এফ–৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমানও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে চায়। ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য হলো, ভারতকে আমেরিকান প্রযুক্তির প্রতি নির্ভরশীল করে তোলা এবং প্রতিরক্ষা খাতে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা গড়ে তোলা।

আন্তর্জাতিক কৌশলগত সম্পর্ক

এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায়। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ভারত–যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব কেবল বাণিজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা নিরাপত্তা এবং কৌশলগত বিষয়ে আরও গভীর হবে। এই লক্ষ্যে তারা কোয়াডকে (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের জোট) আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২০ সালের গালোয়ান উপত্যকায় ভারত–চীন সীমান্তরক্ষীদের সংঘর্ষের পর ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ভারত চায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও স্থিতিশীল হোক এবং এর মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারুক।

বাংলাদেশ ইস্যু

চীনের প্রভাব ঠেকাতে ভারতকে আরও সহযোগিতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের ইঙ্গিত মিলেছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে। সম্প্রতি বাংলাদেশে গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। ভারত ঘনিষ্ঠ শেখ হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেট’–এর কোনো হাত ছিল না—এ প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক।

জবাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’-এর কোনো ভূমিকা নেই। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়টি আমি মোদির কাছেই ছেড়ে দিতে চাই!’

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেটের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের ডিপ স্টেটের এখানে (বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে) কোনো ভূমিকা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) বিষয়টা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এটা নিয়ে (ভারত) শত শত বছর ধরে কাজ করছে। বস্তুত, আমি এ রকমই পড়েছি।’ ‘কাজেই বাংলাদেশের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর ওপরই ছেড়ে দেব।’ এই বলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাশে বসা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করেন।

অভিবাসন নীতি

অভিবাসন ইস্যুতেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এই ইস্যুটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। ফলে তিনি এতে ছাড় দিতে চান না। এরই মধ্যে শতাধিক অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি কোনো দর-কষাকষিতে যাচ্ছেন না নরেন্দ্র মোদি।

মোদি ঘোষণা করেছেন, অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের দেশে ফেরত নিতে ভারত প্রস্তুত রয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, মানবপাচার চক্রের কারণে অনেকেই অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে।

যেখানে ভারতের মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ২৪ শতাংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। টাকার অঙ্কের সেটি প্রায় ৯০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

সংখ্যালঘু ও মানবাধিকার ইস্যু উপেক্ষিত

ওয়াশিংটন ডিসিতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করলেও ব্রিফিংয়ে এবং অনলাইন বিবৃতিতে মানবাধিকার ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলো উপেক্ষিত রয়ে গেছে।

ওয়াশিংটনের বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের মানবাধিকার সংক্রান্ত ইস্যুগুলো ওয়াশিংটনের কূটনীতিতে কম গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ, যেমন চীনের প্রভাব মোকাবিলা এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করা, মানবাধিকার আলোচনার চেয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কঠোর অবস্থান নেবে বলে আশা করা যায় না। তাঁর পররাষ্ট্রনীতি মূলত স্বার্থভিত্তিক, যেখানে মানবাধিকারের মতো মূল্যবোধভিত্তিক বিষয়গুলোর জন্য বিশেষ স্থান নেই।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন, বাক্‌স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাতের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ভারত এই প্রতিবেদনগুলোকে ‘গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন মানবাধিকার ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নেওয়ার ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। কিন্তু একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

মুম্বাই হামলার অভিযুক্তকে ফেরতের প্রতিশ্রুতি

মুম্বইয়ে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে অভিযুক্ত তাহাউর হুসেন রানাকে প্রত্যর্পণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইসলামিক সন্ত্রাস রুখতে যৌথভাবে কাজ করবে ভারত–আমেরিকা।’

কানাডার নাগরিক রানা এখন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে রয়েছে। মুম্বাইয়ে ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে ছয় মার্কিন নাগরিকও ছিলেন। ২০১৩ সালে তাঁকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয় আমেরিকার আদালত। ২০২০ সালে স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় তাঁকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু ভারতের প্রত্যর্পণের আবেদনে হত্যা মামলায় ফের তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছর আগস্টে মার্কিন কোর্ট অব আপিল ফর নাইনথ সার্কিট তাহাউরের প্রত্যর্পণে সায় দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।

নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।

দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।

এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।

রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।

সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।

চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।

এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মস্কোতে গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল সারভারভ নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।

তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।

রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।

৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।

চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।

নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘হিন্দু রাষ্ট্র’ সংবিধানে থাকতে হবে না, এটি সূর্যোদয়ের মতোই সত্য: আরএসএস প্রধান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কলকাতায় আরএসএসের শতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘১০০ ব্যাখ্যান মালা’ অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় আরএসএসের শতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘১০০ ব্যাখ্যান মালা’ অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত। ছবি: সংগৃহীত

ভারত একটি ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ এবং এর জন্য কোনো সাংবিধানিক অনুমোদনের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর মতে, এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য এবং সূর্য পূর্বদিকে ওঠার মতোই ধ্রুব।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) কলকাতায় আরএসএসের শতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘১০০ ব্যাখ্যান মালা’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবিধানে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ শব্দ জোড়ানোর কোনো পরিকল্পনা বা দাবি সংঘের আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মোহন ভাগবত বলেন, ‘সূর্য পূর্বদিকে ওঠে; আমরা জানি না কত দিন ধরে এটি ঘটছে। এর জন্য কি আমাদের সাংবিধানিক অনুমোদনের প্রয়োজন আছে? হিন্দুস্তান একটি হিন্দু রাষ্ট্র। যারা এই দেশকে মাতৃভূমি মনে করে এবং ভারতীয় সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করে, তারা সবাই এই দর্শনের অংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসদ যদি কখনো সংবিধান সংশোধন করে এই শব্দটি যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তা ভালো। কিন্তু তারা তা করুক বা না করুক—তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। কারণ, সত্য এটাই যে আমাদের দেশ একটি হিন্দু রাষ্ট্র।’

জাতপাত নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে আরএসএস প্রধান স্পষ্ট করে বলেন, ‘জন্মভিত্তিক বর্ণপ্রথা বা জাতপাত হিন্দুত্বের বৈশিষ্ট্য নয়।’

আরএসএসকে প্রায়ই মুসলিমবিরোধী হিসেবে গণ্য করা হয়। এই প্রসঙ্গে মোহন ভাগবত মানুষকে সরাসরি সংঘের শাখা বা অফিসগুলো ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ অত্যন্ত স্বচ্ছ। আপনারা যেকোনো সময় এসে দেখে যান। যদি আমাদের কার্যক্রমে মুসলিমবিরোধী কিছু খুঁজে পান, তবে আপনাদের ধারণা বজায় রাখুন। কিন্তু যদি তা না দেখেন, তবে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন।’

তিনি দাবি করেন, মানুষ এখন বুঝতে পারছে যে আরএসএস হিন্দুদের সুরক্ষার কথা বলে এবং তারা কট্টর জাতীয়তাবাদী, কিন্তু তারা ‘মুসলিমবিরোধী’ নয়।

উল্লেখ্য, ভারতের সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ (Secular) শব্দটি ছিল না। ১৯৭৬ সালে জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা গান্ধী সরকারের আনা ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে এটি যুক্ত করা হয়। অন্যদিকে, আরএসএস দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে, ভারতের সংস্কৃতি এবং জনতাত্ত্বিক কাঠামোর কারণেই এটি প্রাকৃতিকভাবে একটি হিন্দু রাষ্ট্র।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত