Ajker Patrika

প্রমোদতরিতে চড়ে ৩ বছরে বিশ্বভ্রমণের যে পরিণতি হলো

আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২১: ৫৩
প্রমোদতরিতে চড়ে ৩ বছরে বিশ্বভ্রমণের যে পরিণতি হলো

‘ফাইর ফেস্টিভ্যাল’ নামে সংগীত উৎসবটিকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালে বাহামার একটি দ্বীপে এই উৎসব হওয়ার কথা ছিল। কান্দিল জেনার, বেলা হাদিদ ও হেইলি বল্ডউইনের মতো বিশ্বের নামীদামি তারকারা এই উৎসবের বিজ্ঞাপন প্রচার করেছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এই উৎসবে যোগ দিতে নিবন্ধন করলেও উৎসবের কয়েক দিন আগেই এটি বাতিল করে দেওয়া হয়। তবে এর জন্য অবশ্য উৎসবের উদ্যোক্তা বিলি ম্যাকফারর‍্যান্ডসে প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। বর্তমানে তিনি জেলে আছেন।

ফাইর ফেস্টিভ্যালের মতোই সম্প্রতি ঘটে গেছে আরেকটি ঘটনা। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের নিয়ে তিন বছরের জন্য সমুদ্রে ভেসে যাওয়ার কথা ছিল একটি প্রমোদতরির। এই যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করে নিবন্ধন করেছিলেন অসংখ্য মানুষ। তাঁদের বেশির ভাগই অবসরজীবনে পা রেখেছিলেন। কিন্তু শুরু হওয়ার সপ্তাখানেক আগেই যাত্রাটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এ অবস্থায় প্রমোদতরিতে বিশ্বভ্রমণের জন্য অর্থ প্রদান করা ব্যক্তিরা তাঁদের অর্থ ফেরত এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তুরস্কভিত্তিক ‘মিরে ক্রুইজ’ নামে একটি সংস্থা ওই ভ্রমণের উদ্যোগ নিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা তাই ওই কোম্পানির কাছে অর্থ ফেরত চাইছেন।

অর্থ ফেরত চাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শিরেন থমাস নামে এক নারীর কথাই ধরা যাক। বিশ্বভ্রমণে যেতে যিনি তাঁর বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু যাত্রা বাতিল হয়ে যাওয়ায় এখন তিনি বিপদে পড়েছেন। ওয়াশিংটন পোস্টকে শিরেন বলেন, ‘তারা শুধু আমাদের আশা এবং স্বপ্নকেই স্তব্ধ করেনি। কিংবা শুধু আমাদের জীবনকেই ব্যাঘাতগ্রস্ত করেনি, তারা এখনো আমাদের সময় নষ্ট করে যাচ্ছে।’

শিরেন আরও বলেন, ‘এটা সবচেয়ে ভালো হতো যদি তারা এসে তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করত। কিন্তু তারা এটাও করেনি।’

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, গত বছরের মার্চে সমুদ্রপথে ১ হাজার ৯৫ দিনে ১৪০টি দেশ ঘুরে দেখার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল মিরে ক্রুইজ। কথা ছিল, গত বছরের নভেম্বরে এই যাত্রা শুরু হবে। কিন্তু ওই ঘোষণার পরপরই কোম্পানিতে অশান্তি শুরু হয় এবং যাত্রার জন্য কোনো জাহাজ ঠিক করা সম্ভব হয়নি বলেও জানায় মিরে কর্তৃপক্ষ। তারা এটাও জানিয়ে দেয় যে ডিসেম্বর থেকে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধনকারীদের সব টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

এদিকে চলতি মাসে মিরে ক্রুজ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জানায়, ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংকের সমস্যার কারণে তাদের অর্থ ফেরত দিতে বিলম্ব হচ্ছে। তারপরও সম্ভাব্য যাত্রীদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জনের একটি দল ফ্লোরিডার এক অ্যাটর্নিকে তাঁদের অভিযোগ এবং উদ্বেগের কথা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ ফেরত না পাওয়ায় তাঁদের অনেকেই আক্ষরিক অর্থে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। অনেককে বাড়ি ছেড়ে দিতে হয়েছে। অনেকেই বিশ্বভ্রমণে যাওয়ার জন্য তাঁদের চাকরি ছেড়েছেন, গাড়ি বিক্রি করেছেন, আবার কেউ সঞ্চয় ভাঙিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন যাত্রী তাঁদের অর্থের কিছু অংশ ফেরত পেয়েছেন।

পুরো বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকলেও অনেক যাত্রী আবার ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। তাঁদের মধ্যে জর্জ ফক্স নামে একজন ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছিলেন, তিনি এখনো আশা করেন যে ওই ভ্রমণটি শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত