নিফাকের মর্ম, স্তর ও পরিণাম

মাহমুদ হাসান ফাহিম
Thumbnail image

নিফাক অর্থ দ্বিমুখিতা। পরিভাষায় প্রকাশ্যে ইসলাম চর্চা করা; কিন্তু গোপনে অন্তরে কুফরি বা ইসলামের প্রতি অবিশ্বাস লালন করাকে নিফাক বা মুনাফেকি বলা হয়। প্রকাশ্যে ভালো কথা, ভালো কাজ এবং ভালো আচরণ আর গোপনে এসবের বিপরীত অভ্যাস লালন করাই হচ্ছে মুনাফেকি। মুনাফেকি দুই প্রকার। এক. বিশ্বাসগত মুনাফেকি। দুই. আমলগত মুনাফেকি। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

বিশ্বাসগত মুনাফেকি আবার ছয় প্রকারে বিভক্ত, এর যেকোনো একটি কারও মধ্যে পাওয়া গেলে পবিত্র কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী সে জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে নিক্ষিপ্ত হবে।

এক. রাসুল (সা.)-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। দুই. রাসুল (সা.) যে বার্তা নিয়ে আগমন করেছেন তার সামান্যতম অংশকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। তিন. রাসুল (সা.)-কে ঘৃণা বা অপছন্দ করা। চার. রাসুল (সা.)-এর আনা দ্বীন বা কিতাবের সামান্যতম অংশকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা। পাঁচ. দ্বীনের অবনতিতে খুশি হওয়া। ছয়. দ্বীন ও ইসলামের বিজয় দেখে অসন্তুষ্ট হওয়া।

আর আমলগত মুনাফেকি পাঁচভাবে হয়ে থাকে। দুটি হাদিসের আলোকে তা প্রমাণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি।

এক. কথা বলার ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে। দুই. ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে। তিন. আমানত রাখলে খিয়ানত করে। (বুখারি: ৩৩; মুসলিম: ৫৯)

অন্য এক বর্ণনায় আরও দুটি নিদর্শনের কথা এসেছে, এক. ঝগড়া করলে অকথ্য গালি দেয়, দুই. চুক্তিতে উপনীত হলে তার খেলাপ কাজ করে। (মুসলিম: ৫৮; নাসায়ি: ৫০২০)

এ জাতীয় নিফাকের কারণে কেউ ইমানহারা হয় না ঠিক; কিন্তু এ জাতীয় নিফাক আকিদাগত নিফাকের কাছাকাছি পৌঁছার মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। এই আমলি নিফাক আস্তে আস্তে মানুষের আকিদা বিশ্বাসে বদ্ধমূল হয়ে যায় এবং একসময় বিশ্বাসগত নিফাকে রূপান্তরিত হয়। সুতরাং মুমিনের কর্তব্য হবে, এ জাতীয় নিফাক থেকেও নিজেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে রাখা। (আল-ওয়াজিবাতুল মুতাহাত্তিমাত)

মাহমুদ হাসান ফাহিম, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত