তসবিহদানার সংস্কৃতি যেখান থেকে

নাঈমুল হাসান তানযীম
Thumbnail image

জিকির করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের তসবিহদানা ব্যবহার করে থাকি। এই তসবিহদানার ব্যবহার মূলত অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। আফগানিস্তান, ইরান, তাজিকিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ—এসব দেশে এটি তসবিহ নামে পরিচিত। আরবিতে মিসবাহা ও সুবহা এবং তুর্কি, বসনীয় ও আলবেনীয় ভাষায় একে তেসপি বলা হয়।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুসলমানরা জিকির গোনার কাজে পাথর ও আঙুলের গিঁট ব্যবহার করতেন। ১৭ শতকের ধর্মপ্রচারক মুহম্মদ বাকির মজলিশির বয়ান মতে, ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দে উহুদ যুদ্ধের পর রাসুল (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা (রা.) প্রতি দুই-তিন দিনের মধ্যে একবার শহীদদের কবরে যেতেন এবং সেই সময়ে হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিবের কবরের মাটি দিয়ে একটি তসবিহ তৈরি করেন। এর পর থেকে তসবিহ তৈরি ও ব্যবহার শুরু হয়। যদিও এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে।

মূলত তসবিহ হলো ইসলামে জিকির গোনার একটি সহজ মাধ্যম বা উপকরণ। আল্লাহর ৯৯টি নাম বা দৈনিক নামাজের পর দোয়া গুনতেও এটি ব্যবহার করা হয়। সচরাচর কাঠ বা প্লাস্টিকের পুঁতি দিয়ে তৈরি হলেও জলপাইয়ের বীজ, হাতির দাঁত, মুক্তা ও স্বল্পমূল্যের পাথর যেমন ইন্দ্রগোপ, গোমেদ, আম্বর প্রভৃতি দিয়েও এটি তৈরি করা হয়।

এ ধরনের তসবিহ বা জপমালায় সাধারণত ৯৯টি পাথর থাকে, যা দিয়ে আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করা হয় এভাবে—৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবর। কারও কারও মতে, ৯৯টি পাথর আল্লাহর ৯৯টি নামকে নির্দেশ করে।

ছোট ছোট তসবিহতে অনেক সময় ৩৩টি পাথর থাকে। এভাবে তিনবার সম্পূর্ণ তসবিহ শেষ করে ৯৯ বারের চক্র পূর্ণ হয়। বিভিন্ন সুফিবাদী ধারায় জিকির গোনার সুবিধার্থে ১০০, ২০০ বা ১ হাজার পাথরের তসবিহও ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিতে, দুশ্চিন্তা কমাতেও তসবিহ ব্যবহার করা হয়, এমনকি কোনো কোনো দেশে একে সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়।

হাজারীবাগ, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত