হুসাইন আহমদ
রোজা মানুষের দৈহিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটায়। রোজা সংযম, সহিষ্ণুতা ও আত্মশুদ্ধি শেখায়। এ জন্য রমজান মাসকে মহানবী (সা.) বছরের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মাস বলে অভিহিত করেছেন। কোরআন-হাদিসে রোজা ও রমজান মাসের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সেসব ফজিলত কমবেশি আমাদের জানা থাকলেও রোজাকে পবিত্র ও ত্রুটিমুক্ত রাখার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আমরা তুলনামূলক কম জানি। অথচ রোজার সওয়াব ও প্রতিদান লাভের জন্য তা জানা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। নবী (সা.) বলেছেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা থেকে উপোস থাকা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না। আর অনেক রাত জেগে ইবাদতকারী এমন আছে, যাদের রাত জাগা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না।’ (মিশকাত: ১১৭)
রোজা অবস্থায় যেসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দিক এখানে তুলে ধরা হলো—
অজু-গোসল
রোজা অবস্থায় অজু ও গোসলের সময় সতর্ক থাকতে হবে। নাক-কান ও গলার ভেতরে যাতে কোনোভাবে পানি ঢুকে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ যদি পানি পেটে চলে যায়, তবে ওই রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তবে হ্যাঁ, অনিচ্ছাকৃত হওয়ায় কাফফারা লাগবে না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬ / ২৬০, ফতোয়ায়ে খানিয়া: ১ / ২০৯, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১ / ২০২)
ইনজেকশন
রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া। শারীরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য ছাড়া অন্য যেকোনো কারণে ইনজেকশন নিলে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা মাংসে নেওয়া হোক বা রগে নেওয়া হোক। কারণ ইনজেকশনের সাহায্যে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশকৃত ওষুধ মাংস বা রগের মাধ্যমেই প্রবেশ করানো হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক প্রবেশপথ। তাই এটি রোজা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ নয়। (ইবনে আবিদিন: ২ / ৩৯৫, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৩ / ২১৪)
ইনসুলিন
রোজা অবস্থায় ইনসুলিন ব্যবহার করলে সমস্যা নেই। রোজা রেখে ইনসুলিন নিলে রোজা ভাঙবে না। কারণ ইনসুলিন রোজা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করানো হয় না এবং খালি জায়গায়ও প্রবেশ করানো হয় না। (ইবনে আবিদিন: ৩ / ৩৬৭; ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান: ৩২৭)
চোখের ড্রপ
রোজা অবস্থায় চোখে ড্রপ বা তরল ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ চোখ থেকে সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছার কোনো পথ নেই। তবে চোখ থেকে নাক হয়ে গলায় কোনো কিছু পৌঁছে যেতে পারে, এর কিছুটা আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। স্বাভাবিকভাবে সমস্যা নেই। যেমন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার করেছেন। (ইবনে মাজাহ: ১৬৮৭)
নাকের ড্রপ
রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ দেওয়া যাবে না। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, নাকে কোনো ধরনের ড্রপ বা ওষুধ ব্যবহার করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছে যেতে পারে। তাই রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ বা তেল ব্যবহার করা যাবে না। রোজা ভেঙে যাবে। যেমন রাসুল (সা.) হজরত লাকিত ইবনে সাবুরাকে (রা.) বলেছেন, ‘তুমি অজু পরিপূর্ণ করো, তোমার আঙুলগুলো খিলাল করো এবং নাকে ভালো করে পানি দাও। তবে হ্যাঁ, রোজাদার হলে নাকে পানি দিও না।’ (তিরমিজি: ৭৭৮)
ডায়াবেটিস পরীক্ষা
রোজা অবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যাবে। কারণ রোজা অবস্থায় রক্ত দিলে রোজা ভাঙে না। তবে এ পরিমাণ রক্ত দেওয়া মাকরুহ, যার কারণে শরীর অধিক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোজা রাখা কষ্টকর হয়ে যায়। এরপর ডায়াবেটিসের সুগার মাপার জন্য সুচ ঢুকিয়ে যে রক্ত নেওয়া হয়, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (বুখারি: ১৯৩৬ ও ১৯৪০, আল-বাহরুর রায়েক: ২ / ২৭৩)
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক
রোজা মানুষের দৈহিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটায়। রোজা সংযম, সহিষ্ণুতা ও আত্মশুদ্ধি শেখায়। এ জন্য রমজান মাসকে মহানবী (সা.) বছরের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মাস বলে অভিহিত করেছেন। কোরআন-হাদিসে রোজা ও রমজান মাসের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সেসব ফজিলত কমবেশি আমাদের জানা থাকলেও রোজাকে পবিত্র ও ত্রুটিমুক্ত রাখার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আমরা তুলনামূলক কম জানি। অথচ রোজার সওয়াব ও প্রতিদান লাভের জন্য তা জানা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। নবী (সা.) বলেছেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা থেকে উপোস থাকা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না। আর অনেক রাত জেগে ইবাদতকারী এমন আছে, যাদের রাত জাগা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না।’ (মিশকাত: ১১৭)
রোজা অবস্থায় যেসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দিক এখানে তুলে ধরা হলো—
অজু-গোসল
রোজা অবস্থায় অজু ও গোসলের সময় সতর্ক থাকতে হবে। নাক-কান ও গলার ভেতরে যাতে কোনোভাবে পানি ঢুকে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ যদি পানি পেটে চলে যায়, তবে ওই রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তবে হ্যাঁ, অনিচ্ছাকৃত হওয়ায় কাফফারা লাগবে না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬ / ২৬০, ফতোয়ায়ে খানিয়া: ১ / ২০৯, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১ / ২০২)
ইনজেকশন
রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া। শারীরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য ছাড়া অন্য যেকোনো কারণে ইনজেকশন নিলে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা মাংসে নেওয়া হোক বা রগে নেওয়া হোক। কারণ ইনজেকশনের সাহায্যে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশকৃত ওষুধ মাংস বা রগের মাধ্যমেই প্রবেশ করানো হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক প্রবেশপথ। তাই এটি রোজা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ নয়। (ইবনে আবিদিন: ২ / ৩৯৫, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৩ / ২১৪)
ইনসুলিন
রোজা অবস্থায় ইনসুলিন ব্যবহার করলে সমস্যা নেই। রোজা রেখে ইনসুলিন নিলে রোজা ভাঙবে না। কারণ ইনসুলিন রোজা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করানো হয় না এবং খালি জায়গায়ও প্রবেশ করানো হয় না। (ইবনে আবিদিন: ৩ / ৩৬৭; ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান: ৩২৭)
চোখের ড্রপ
রোজা অবস্থায় চোখে ড্রপ বা তরল ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ চোখ থেকে সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছার কোনো পথ নেই। তবে চোখ থেকে নাক হয়ে গলায় কোনো কিছু পৌঁছে যেতে পারে, এর কিছুটা আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। স্বাভাবিকভাবে সমস্যা নেই। যেমন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার করেছেন। (ইবনে মাজাহ: ১৬৮৭)
নাকের ড্রপ
রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ দেওয়া যাবে না। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, নাকে কোনো ধরনের ড্রপ বা ওষুধ ব্যবহার করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছে যেতে পারে। তাই রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ বা তেল ব্যবহার করা যাবে না। রোজা ভেঙে যাবে। যেমন রাসুল (সা.) হজরত লাকিত ইবনে সাবুরাকে (রা.) বলেছেন, ‘তুমি অজু পরিপূর্ণ করো, তোমার আঙুলগুলো খিলাল করো এবং নাকে ভালো করে পানি দাও। তবে হ্যাঁ, রোজাদার হলে নাকে পানি দিও না।’ (তিরমিজি: ৭৭৮)
ডায়াবেটিস পরীক্ষা
রোজা অবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যাবে। কারণ রোজা অবস্থায় রক্ত দিলে রোজা ভাঙে না। তবে এ পরিমাণ রক্ত দেওয়া মাকরুহ, যার কারণে শরীর অধিক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোজা রাখা কষ্টকর হয়ে যায়। এরপর ডায়াবেটিসের সুগার মাপার জন্য সুচ ঢুকিয়ে যে রক্ত নেওয়া হয়, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (বুখারি: ১৯৩৬ ও ১৯৪০, আল-বাহরুর রায়েক: ২ / ২৭৩)
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক
একজন মুমিনের জন্য তার জীবনকে ইসলামের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালিত করা এবং ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ, তা ত্যাগ করা আবশ্যক। হাদিস শরিফে এটাকে উত্তম ধার্মিকতা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন...
৮ মিনিট আগেআসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
১ দিন আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
২ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
২ দিন আগে