বৃষ্টির নামাজ আদায় করবেন যেভাবে

মুফতি আবু দারদা
Thumbnail image

কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মচঞ্চলতা। এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে মানুষ। এমন সংকটময় মুহূর্তে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ পড়ার নির্দেশ দেয় ইসলাম। নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে তাঁর রহমতের প্রার্থনা করার বিধান হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমা করবেন। তোমাদের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’ (সুরা নুহ: ১০-১১)

আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না। রোদ-বৃষ্টিও তাঁরই রহমত ও মহান কুদরতের প্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বাতাস পাঠান, এরপর তা মেঘমালা সঞ্চালিত করে। এরপর তিনি মেঘমালা যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে তা থেকে বৃষ্টি নেমে আসে। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৩৮)
 
সালাতুল ইসতিসকার পদ্ধতি
ইসলামের পরিভাষায় বৃষ্টির এই বিশেষ নামাজকে সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টিপ্রার্থনার নামাজ বলা হয়। ফিকহের কিতাবে এই নামাজের বিশেষ পদ্ধতির কথা এসেছে। খোলা ময়দানে আজান-একামত ছাড়া উঁচু স্বরে কেরাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের পর ইমাম খুতবা দেবেন। খুতবায় বেশি বেশি ইস্তিগফার ও কোরআন তিলাওয়াত করবেন। এরপর দুই হাত উঠিয়ে মিনতির সঙ্গে দোয়া করবেন এবং হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়বেন। মুসল্লিরাও তখন কায়মনোবাক্যে তাঁর সঙ্গে শরিক হয়ে দোয়া-প্রার্থনা পড়বেন।

বৃষ্টির নামাজ আদায় করতে বিনয়ের সঙ্গে যাওয়া সুন্নত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই যে বান্দার সব প্রয়োজন পূরণ করেন—এই বিশ্বাস অন্তরে জাগ্রত রাখতে হবে। 
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই সাদামাটাভাবে, বিনয়-নম্রতা এবং আকুতিসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে নামাজের মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।’ (আবু দাউদ)

বৃষ্টির নামাজের দোয়া
বৃষ্টির নামাজ আদায়ের সময় নিচের দোয়াটি পাঠ করা খুবই কল্যাণকর। এই দোয়া নবী (সা.) নিজেই বৃষ্টির জন্য পাঠ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, লোকজন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে অনাবৃষ্টির কষ্টের কথা বললে তিনি ঈদগাহে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে এই দোয়া করেন। এরপর আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি বর্ষণ হতে শুরু করে। বৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষের ছোটাছুটি দেখে নবীজি হেসে ফেলেন। (আবু দাউদ: ১১৭৩)

দোয়াটি হলো—আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আর-রাহমানির রাহিম। মালিকি ইয়াউমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফয়ালু মা ইউরিদ। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল গানিয়্যু ওয়া নাহলুল ফুকারাউ। আনজিল আলাইনাল গাইছা ওয়াজআল মা আনজালতা লানা কুওয়্যাতান ওয়া বালাগান 
ইলা হিন।

অর্থ: সব প্রশংসা পৃথিবীর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি পরম করুণাময়, দয়ালু ও শেষ বিচারের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি যা ইচ্ছা করেন। হে আল্লাহ, তুমিই একমাত্র মাবুদ, তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি ধনী, আমরা গরিব। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করো এবং আমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করো, তা আমাদের জন্য শক্তিময় ও কল্যাণ দান করো।’ (আবু দাউদ: ১১৭৩)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যৌন সম্পর্কের পর বিয়েতে অস্বীকৃতি: আজিজুল হক কলেজের শিক্ষক নেতাকে বদলি

সাইফ আলী খানের পরিবারের ১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি যাচ্ছে ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে

সাইফের ওপর হামলার সন্দেহভাজন সাজ্জাদকে ছেলে দাবি করলেন ঝালকাঠির রুহুল আমিন

সিএসইতে লেনদেনের সময় পরিবর্তন, শেয়ারবাজারে কারসাজির আশঙ্কা

ওবায়দুর হত্যা: গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যানকে বিশেষ অতিথি করে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত