আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
‘ভাই, কষ্টের কথা কারে কমু। আপনে তবু জিগাইলেন। আমি কেমনে সংসার চালাই, বাড়ির সবাই কেমন আছে? আইজ তুরি কেউ জিগায়ও নাই। মাস শেষে যা পাই, দোকানের বাকি আর চাইল কিনতেই শেষ। বাজার, পোলাপানের খরচ, পোশাক-আশাকের কথা ভাবতেই শরীর দুর্বল অইয়া যায়। ঋণ পরিশোধের ভয়ে কারও কাছে হাত পাতবারও পারি না। বাধ্য অইয়া মাঝেমধ্যেই রোজা থাইকা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি’—দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরশহরের টেংরি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আল আমিন।
টাঙ্গাইল সদর, মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, কালিহাতী উপজেলার অন্তত ২৫টি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জীবনযুদ্ধের করুণ কাহিনির কথা জানা গেছে। এসব ইমামের কারও বেতন মাসিক, কারও বাৎসরিক। মাসিক বেতনধারীরা পান ২ থেকে ৭ হাজার টাকা। বাৎসরিক বেতনধারীরা পান ৭০ থেকে ৯০ হাজার। মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের বেতন আরও কম। অনেক মসজিদ কমিটির লোকজন তাঁদের সঙ্গে বাড়ির কাজের লোকের মতো আচরণ করেন। অনেকে বাসার বাজার-সদাইও করান। চাকরি হারানোর ভয়ে আপত্তি করতে সাহস পান না সমাজের অবহেলিত এসব সম্মানিত মানুষ।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা যে সম্মানী পান, তা দিয়ে সংসার চালানো দুষ্কর। তারপরও বাধ্য হয়ে বুকে পাথরচাপা দিয়ে হাসিমুখে প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তাঁরা। তাঁদের সমস্যার কথা কমিটির লোকজনও আমলে নিতে চান না। কমিটির মর্জির ওপর নির্ভর করে চাকরিও।
টাঙ্গাইলের ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ৮ হাজারের অধিক মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদগুলোতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম মিলিয়ে ২০ হাজারের অধিক ধর্মীয় ব্যক্তি কর্মরত আছেন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার খারজানা ঘোনারপাড় বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম কালাচান মৌলভি মুন্সি ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে ইমামতি করেন। বর্তমানে তাঁর সম্মানী মাসিক ২ হাজার টাকা। কালাচান মুন্সি বলেন, ‘আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য ইমামতি করি। কী পাইলাম, কী পাইলাম না, তা ভাবি না। গেরস্থালি করেই সংসার চলে।’
মুয়াজ্জিন আবুল বাশার বলেন, ‘আমি যে সম্মানী পাই, তা বলার মতো না। মসজিদের কাছেই দোকান দিয়েছি। তা দিয়াই সংসার চলে।’
মধুপুর উপজেলার মাগুন্তিনগর গ্রামের মাওলানা আরিফ আদনান বলেন, ‘মসজিদ কমিটির লোকজন ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের প্রয়োজন-অপ্রয়োজন ভাবার সময় পান না। তাঁরা রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গ্রুপিং, সামাজিক দ্বন্দ্ব আর মসজিদের উন্নয়ন নিয়ে মেতে থাকেন। ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতনের কথা তুললেই নানা সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি ইমামকে চাকরিচ্যুতও করেন অনেকে।’
ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘ব্রিটিশ শাসকেরা ধর্মীয় মূল্যবোধের লোকজনকে অবহেলিত রাখার যে চেষ্টা চালিয়েছিল, তা এখনো অব্যাহত আছে। ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের সমস্যার কথা শোনা এবং দুঃখের কথা ভাবার কেউ নেই।’
ঘাটাইলের চাপড়ী, রসুলপুর, মধুপুরের কাঁকড়গুনি, মাগুন্তিনগর, অরণখোলা, হাগুড়াকুড়ি এলাকার কয়েকটি মসজিদের ইমাম জানান, তাঁদের মাসিক বেতন দেওয়া হয় না। বছরে দেওয়া হয় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। দুই ঈদে তা পরিশোধ করা হয়। অন্য সময়ে তাঁরা কোনো বেতন-ভাতা পান না।
টাঙ্গাইলের স্থানীয় সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি ও শিক্ষাবিদ বজলুর রশিদ খান বলেন, ‘আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের এবং শেষ বিদায় জানাজার সঙ্গী ইমামদের মাসিক আয় খুবই কম। ইমাম-মুয়াজ্জিনরা যে টাকা সম্মানী পান, তা দিয়ে কোনোভাবে চার সদস্যের সংসার চালানো অসম্ভব। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের বেতনের কথা ভাবা উচিত।’
টাঙ্গাইল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদ নির্মাণ, পরিচালনা, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম ও খতিবদের দেখভালের কোনো দায়িত্বই আমাদের কাজের আওতাভুক্ত নয়। তবে ইমামদের জন্য সীমিত আকারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। অবশ্য মডেল মসজিদ প্রকল্পের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খাদেমের বেতন ওই প্রকল্পের আওতাভুক্ত। সেখানে ইমামের বেতন ১৫ হাজার, মুয়াজ্জিনের বেতন ১০ হাজার এবং খাদেমের বেতন ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন কমিটির লোকজনই দিয়ে থাকেন।’
‘ভাই, কষ্টের কথা কারে কমু। আপনে তবু জিগাইলেন। আমি কেমনে সংসার চালাই, বাড়ির সবাই কেমন আছে? আইজ তুরি কেউ জিগায়ও নাই। মাস শেষে যা পাই, দোকানের বাকি আর চাইল কিনতেই শেষ। বাজার, পোলাপানের খরচ, পোশাক-আশাকের কথা ভাবতেই শরীর দুর্বল অইয়া যায়। ঋণ পরিশোধের ভয়ে কারও কাছে হাত পাতবারও পারি না। বাধ্য অইয়া মাঝেমধ্যেই রোজা থাইকা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি’—দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরশহরের টেংরি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আল আমিন।
টাঙ্গাইল সদর, মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, কালিহাতী উপজেলার অন্তত ২৫টি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জীবনযুদ্ধের করুণ কাহিনির কথা জানা গেছে। এসব ইমামের কারও বেতন মাসিক, কারও বাৎসরিক। মাসিক বেতনধারীরা পান ২ থেকে ৭ হাজার টাকা। বাৎসরিক বেতনধারীরা পান ৭০ থেকে ৯০ হাজার। মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের বেতন আরও কম। অনেক মসজিদ কমিটির লোকজন তাঁদের সঙ্গে বাড়ির কাজের লোকের মতো আচরণ করেন। অনেকে বাসার বাজার-সদাইও করান। চাকরি হারানোর ভয়ে আপত্তি করতে সাহস পান না সমাজের অবহেলিত এসব সম্মানিত মানুষ।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা যে সম্মানী পান, তা দিয়ে সংসার চালানো দুষ্কর। তারপরও বাধ্য হয়ে বুকে পাথরচাপা দিয়ে হাসিমুখে প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তাঁরা। তাঁদের সমস্যার কথা কমিটির লোকজনও আমলে নিতে চান না। কমিটির মর্জির ওপর নির্ভর করে চাকরিও।
টাঙ্গাইলের ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ৮ হাজারের অধিক মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদগুলোতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম মিলিয়ে ২০ হাজারের অধিক ধর্মীয় ব্যক্তি কর্মরত আছেন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার খারজানা ঘোনারপাড় বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম কালাচান মৌলভি মুন্সি ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে ইমামতি করেন। বর্তমানে তাঁর সম্মানী মাসিক ২ হাজার টাকা। কালাচান মুন্সি বলেন, ‘আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য ইমামতি করি। কী পাইলাম, কী পাইলাম না, তা ভাবি না। গেরস্থালি করেই সংসার চলে।’
মুয়াজ্জিন আবুল বাশার বলেন, ‘আমি যে সম্মানী পাই, তা বলার মতো না। মসজিদের কাছেই দোকান দিয়েছি। তা দিয়াই সংসার চলে।’
মধুপুর উপজেলার মাগুন্তিনগর গ্রামের মাওলানা আরিফ আদনান বলেন, ‘মসজিদ কমিটির লোকজন ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের প্রয়োজন-অপ্রয়োজন ভাবার সময় পান না। তাঁরা রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গ্রুপিং, সামাজিক দ্বন্দ্ব আর মসজিদের উন্নয়ন নিয়ে মেতে থাকেন। ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতনের কথা তুললেই নানা সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি ইমামকে চাকরিচ্যুতও করেন অনেকে।’
ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘ব্রিটিশ শাসকেরা ধর্মীয় মূল্যবোধের লোকজনকে অবহেলিত রাখার যে চেষ্টা চালিয়েছিল, তা এখনো অব্যাহত আছে। ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের সমস্যার কথা শোনা এবং দুঃখের কথা ভাবার কেউ নেই।’
ঘাটাইলের চাপড়ী, রসুলপুর, মধুপুরের কাঁকড়গুনি, মাগুন্তিনগর, অরণখোলা, হাগুড়াকুড়ি এলাকার কয়েকটি মসজিদের ইমাম জানান, তাঁদের মাসিক বেতন দেওয়া হয় না। বছরে দেওয়া হয় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। দুই ঈদে তা পরিশোধ করা হয়। অন্য সময়ে তাঁরা কোনো বেতন-ভাতা পান না।
টাঙ্গাইলের স্থানীয় সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি ও শিক্ষাবিদ বজলুর রশিদ খান বলেন, ‘আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের এবং শেষ বিদায় জানাজার সঙ্গী ইমামদের মাসিক আয় খুবই কম। ইমাম-মুয়াজ্জিনরা যে টাকা সম্মানী পান, তা দিয়ে কোনোভাবে চার সদস্যের সংসার চালানো অসম্ভব। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের বেতনের কথা ভাবা উচিত।’
টাঙ্গাইল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদ নির্মাণ, পরিচালনা, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম ও খতিবদের দেখভালের কোনো দায়িত্বই আমাদের কাজের আওতাভুক্ত নয়। তবে ইমামদের জন্য সীমিত আকারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। অবশ্য মডেল মসজিদ প্রকল্পের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খাদেমের বেতন ওই প্রকল্পের আওতাভুক্ত। সেখানে ইমামের বেতন ১৫ হাজার, মুয়াজ্জিনের বেতন ১০ হাজার এবং খাদেমের বেতন ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন কমিটির লোকজনই দিয়ে থাকেন।’
৭ ধরনের গুনাহকে বিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে তা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে উপদেশ দিয়েছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। (রিয়াদুস সালেহিন: ১৮০২) কাজগুলো হলো—
১৮ ঘণ্টা আগেসড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
২ দিন আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
৩ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৪ দিন আগে