আমিনুল ইসলাম হুসাইনী
রমজান আত্মশুদ্ধির মাস। আত্মশুদ্ধির জন্য রোজা হলো নিয়ামক। রোজার রয়েছে অকল্পনীয় ফজিলত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ বলেন, রোজা এর ব্যতিক্রম। কারণ রোজা আমার জন্য, আর আমিই এর প্রতিদান দেব।’ (মুসলিম: ২৭৬৩)
অন্য এক হাদিসে রোজাকে ঢালের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ঢাল যেমন যোদ্ধাকে প্রতিপক্ষের আঘাত থেকে রক্ষা করে, তেমনি রোজাও বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবে। হাদিসে আরও বলা হয়েছে, ‘রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম।’ রমজানের রোজা এতই গুরুত্ববহ যে, এর কোনো বিকল্প হয় না। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)
এত এত ফজিলত জানার পরও আমরা অনেকেই ঠুনকো অজুহাতে রোজা ছেড়ে দেই। অনেক মা-বাবা তাদের ছেলেমেয়েদের রোজা রাখতে নিষেধ করেন। তাদের ধারণা—রোজা রেখে পড়তে কষ্ট হবে। পরীক্ষার অজুহাতেও অনেকে রোজা রাখে না বা সন্তানদের রোজা রাখতে দেয় না। এমন না যে, ছেলেমেয়ে খুবই ছোট কিংবা নাবালক। নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। ভার্সিটি পড়ুয়া বে-রোজাদারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আফসোস, দুনিয়ার পরীক্ষার জন্য আমাদের এত ভাবনা, এত ফিকির। অথচ পরকাল নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। অনন্তকালের জিন্দেগির জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। কি বোকা আমরা! কত গাফেল! এই দুনিয়াটাই যে মুমিনের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্র, সে খবর জানি?
রোজা রেখে পড়াশোনা করতে পারবে না, পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে না—এমন ধারণা ভুল। আল্লাহর অনেক বান্দা রোজা রেখেই কঠোর পরিশ্রমের কাজ করেন। গ্রামে অনেক মানুষ রোজা রেখে মাটি কাটেন। কৃষি কাজ করেন। শহরে গার্মেন্টস, কল-কারখানায় বহু শ্রমিক রোজা রেখে কাজ করেন। কই, তাদের তো সমস্যা হচ্ছে না।
রোজার কারণে সাময়িক ক্লান্তি এলেও হৃদয় মিনারে যখন প্রতিধ্বনিত হয়—‘ধৈর্য্য ধারণকারীরাই অগণিত সওয়াবের অধিকারী হবে’, তখন দেহমনে দোল খায় প্রশান্তির আবেশ। প্রাণে আসে নতুন উদ্যম। সবচেয়ে বড় কথা, রমজানের রোজাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
আল্লাহ তাআলার এই হুকুম অমান্য করার সাহস হয় কী করে? খুব বড় ধরনের অসুখ কিংবা কষ্টদায়ক সফর এবং নারীদের খোদাপ্রদত্ত নির্দিষ্ট কিছুদিনের অপারগতা ছাড়া রোজা কাজা করার অনুমতি নেই। তাই পরীক্ষা বা সামান্য ক্লান্তির অজুহাতে রোজার মতো গণিমত ছেড়ে দেওয়া বড়ই বোকামি। রোজাকে ভয়ের কিছু নেই। পবিত্র কোরআনে তো বলাই হয়েছে, ‘পূর্ববর্তীরাও রোজা রেখেছেন’। তাদের যেহেতু ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও হবে না। বরং উপকারই হবে। এই উপকার যেমন পরকালীন, তেমনি দুনিয়ার জীবনেরও।
রোজার রয়েছে শারীরিক ও মানসিক উপকার। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, রোজা মানবদেহে তারুণ্যকে ধরে রাখে এবং রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। চর্বি কমায়। আরও অনেক উপকার হয় রোজা রাখলে। মনে রাখবেন, রোজা যেহেতু আল্লাহ জন্য রাখা হবে, সেহেতু আল্লাহই সাহায্য করবেন। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। রোজা রেখে পরীক্ষা দিন। আল্লাহই সফলতার শীর্ষে আরোহণ করাবেন। সামান্য ক্লান্তির ভয়ে রোজা ছেড়ে দেবেন না। একটু সবুর করতে পারলেই মহাপুরস্কারে ধন্য হবেন। জান্নাতের সেই সংবর্ধনার দৃশ্যটি ভেবে দেখুন। হাশরের মাঠে কোটি কোটি মানুষ। তাদের মধ্য থেকে একদল মুমিনকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ সংবর্ধনা। তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘রাইয়ান’ নামের দরজাটি জান্নাতের সবচেয়ে দামি দরজা। সবচেয়ে বর্ণিল এই দরজা দিয়ে কেবল তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবেন, যারা রমজানের রোজা রেখেছেন।
লেখক: খতিব, কসবা জামে মসজিদ, রেল স্টেশন রোড, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
রমজান আত্মশুদ্ধির মাস। আত্মশুদ্ধির জন্য রোজা হলো নিয়ামক। রোজার রয়েছে অকল্পনীয় ফজিলত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ বলেন, রোজা এর ব্যতিক্রম। কারণ রোজা আমার জন্য, আর আমিই এর প্রতিদান দেব।’ (মুসলিম: ২৭৬৩)
অন্য এক হাদিসে রোজাকে ঢালের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ঢাল যেমন যোদ্ধাকে প্রতিপক্ষের আঘাত থেকে রক্ষা করে, তেমনি রোজাও বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবে। হাদিসে আরও বলা হয়েছে, ‘রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম।’ রমজানের রোজা এতই গুরুত্ববহ যে, এর কোনো বিকল্প হয় না। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)
এত এত ফজিলত জানার পরও আমরা অনেকেই ঠুনকো অজুহাতে রোজা ছেড়ে দেই। অনেক মা-বাবা তাদের ছেলেমেয়েদের রোজা রাখতে নিষেধ করেন। তাদের ধারণা—রোজা রেখে পড়তে কষ্ট হবে। পরীক্ষার অজুহাতেও অনেকে রোজা রাখে না বা সন্তানদের রোজা রাখতে দেয় না। এমন না যে, ছেলেমেয়ে খুবই ছোট কিংবা নাবালক। নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। ভার্সিটি পড়ুয়া বে-রোজাদারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আফসোস, দুনিয়ার পরীক্ষার জন্য আমাদের এত ভাবনা, এত ফিকির। অথচ পরকাল নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। অনন্তকালের জিন্দেগির জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। কি বোকা আমরা! কত গাফেল! এই দুনিয়াটাই যে মুমিনের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্র, সে খবর জানি?
রোজা রেখে পড়াশোনা করতে পারবে না, পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে না—এমন ধারণা ভুল। আল্লাহর অনেক বান্দা রোজা রেখেই কঠোর পরিশ্রমের কাজ করেন। গ্রামে অনেক মানুষ রোজা রেখে মাটি কাটেন। কৃষি কাজ করেন। শহরে গার্মেন্টস, কল-কারখানায় বহু শ্রমিক রোজা রেখে কাজ করেন। কই, তাদের তো সমস্যা হচ্ছে না।
রোজার কারণে সাময়িক ক্লান্তি এলেও হৃদয় মিনারে যখন প্রতিধ্বনিত হয়—‘ধৈর্য্য ধারণকারীরাই অগণিত সওয়াবের অধিকারী হবে’, তখন দেহমনে দোল খায় প্রশান্তির আবেশ। প্রাণে আসে নতুন উদ্যম। সবচেয়ে বড় কথা, রমজানের রোজাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
আল্লাহ তাআলার এই হুকুম অমান্য করার সাহস হয় কী করে? খুব বড় ধরনের অসুখ কিংবা কষ্টদায়ক সফর এবং নারীদের খোদাপ্রদত্ত নির্দিষ্ট কিছুদিনের অপারগতা ছাড়া রোজা কাজা করার অনুমতি নেই। তাই পরীক্ষা বা সামান্য ক্লান্তির অজুহাতে রোজার মতো গণিমত ছেড়ে দেওয়া বড়ই বোকামি। রোজাকে ভয়ের কিছু নেই। পবিত্র কোরআনে তো বলাই হয়েছে, ‘পূর্ববর্তীরাও রোজা রেখেছেন’। তাদের যেহেতু ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও হবে না। বরং উপকারই হবে। এই উপকার যেমন পরকালীন, তেমনি দুনিয়ার জীবনেরও।
রোজার রয়েছে শারীরিক ও মানসিক উপকার। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, রোজা মানবদেহে তারুণ্যকে ধরে রাখে এবং রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। চর্বি কমায়। আরও অনেক উপকার হয় রোজা রাখলে। মনে রাখবেন, রোজা যেহেতু আল্লাহ জন্য রাখা হবে, সেহেতু আল্লাহই সাহায্য করবেন। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। রোজা রেখে পরীক্ষা দিন। আল্লাহই সফলতার শীর্ষে আরোহণ করাবেন। সামান্য ক্লান্তির ভয়ে রোজা ছেড়ে দেবেন না। একটু সবুর করতে পারলেই মহাপুরস্কারে ধন্য হবেন। জান্নাতের সেই সংবর্ধনার দৃশ্যটি ভেবে দেখুন। হাশরের মাঠে কোটি কোটি মানুষ। তাদের মধ্য থেকে একদল মুমিনকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ সংবর্ধনা। তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘রাইয়ান’ নামের দরজাটি জান্নাতের সবচেয়ে দামি দরজা। সবচেয়ে বর্ণিল এই দরজা দিয়ে কেবল তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবেন, যারা রমজানের রোজা রেখেছেন।
লেখক: খতিব, কসবা জামে মসজিদ, রেল স্টেশন রোড, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
একজন মুমিনের জন্য তার জীবনকে ইসলামের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালিত করা এবং ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ, তা ত্যাগ করা আবশ্যক। হাদিস শরিফে এটাকে উত্তম ধার্মিকতা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন...
২১ মিনিট আগেআসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
১ দিন আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
২ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
২ দিন আগে