ইসলামের সুমহান বাণী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে হুদায়বিয়া সন্ধির পর রাসুল (সা.) বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজা-বাদশাহর কাছে পত্র পাঠান। এসব মিশনে তাঁর প্রিয় ও বিশ্বস্ত সাহাবিরা কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেন। কোন বাদশাহর কাছে কোন সাহাবি পত্র বহন করেছেন এবং নবীজির পত্র পেয়ে তৎকালীন বাদশাহদের কেমন প্রতিক্রিয়া ছিল, তা তুলে ধরেছেন আমজাদ ইউনুস।
আমজাদ ইউনুস
রাসুল (সা.) হুদায়বিয়া সন্ধি সম্পন্ন করার পর বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি সপ্তম হিজরিতে ছয়জন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ইসলামের দাওয়াতসংবলিত পত্র লেখেন। পত্র পাঠানোর আগে রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের পরামর্শক্রমে একটি সিলমোহর তৈরি করেন। গোলাকার আংটির মতো এই মোহরে স্বতন্ত্র লাইনে তিনটি শব্দ খোদিত ছিল—‘মুহাম্মদ, রাসুল, আল্লাহ’। প্রতিটি পত্রে নবীজি নিজ হাতে এই সিলমোহর ব্যবহার করতেন। অতঃপর তাঁর ঘনিষ্ঠ সাহাবিদের মাধ্যমে এই পত্র বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর কাছে পাঠাতেন। তাঁরা সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে এ গুরুদায়িত্ব পালন করেন। পত্রবাহক সাহাবিদের অন্যতম হলেন—
আমর ইবনে উমাইয়া জামরি
সম্রাট নাজ্জাশির কাছে পত্র নিয়ে আমর বিন উমাইয়া জামরি (রা.)-কে পাঠানো হয়। বাদশাহ পত্রটি ভক্তি নিয়ে চোখে স্পর্শ করান এবং সুউচ্চ আসন থেকে মাটিতে নেমে আসেন। অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করেন।
দাহিয়া ইবনে খলিফা কালবি
শক্তিশালী রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে দাহিয়া ইবনে খলিফা কালবি (রা.)-কে রাসুল (সা.) পত্র নিয়ে পাঠান। হিরাক্লিয়াস নবীজির পত্র পেয়ে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে তাঁর অনুচর ও নেতাদের কাছে মতামত জানতে চান। তাঁরা পরস্পরে সংঘাতে জড়ানোর ভয়ে হিরাক্লিয়াস তাঁদের চুপ করিয়ে দেন।
আবদুল্লাহ ইবনে হুজাফা সাহমি
নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে হুজাফা সাহমি (রা.)-কে পারস্য সম্রাট কিসরার কাছে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য পত্র দিয়ে পাঠান। সম্রাট রাসুলের পত্রটি টুকরা টুকরা করে ফেলেন। দূত তাঁর সামনে এর প্রতিবাদ জানালেন। তিনি দূতের সাহসিকতা দেখে হতভম্ব হয়ে যান। শেষে তিনি এ খবর এসে রাসুল (সা.)-কে জানালেন। রাসুল (সা.) এটি জানার পর মনঃকষ্ট পেলেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ, যেমন করে সে পত্র টুকরা টুকরা করল, আপনি তার রাজ্যকে সেভাবে টুকরা করে দিন।’ ক্ষণকালের মধ্যে তার রাজ্য টুকরা টুকরা হয়ে যায়।
হাতিব বিন আবি বালতাআ
রাসুল (সা.) মিসরের শাসনকর্তা ও কিবতিদের অধিপতি মুকাওকিসের কাছে পত্র নিয়ে হাতিব বিন আবি বালতাআ (রা.)-কে পাঠিয়েছিলেন। তিনি চিঠিটি সম্মানের সঙ্গে একটি দামি বাক্সে রাখেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। তবে বহু দামি উপঢৌকন রাসুল (সা.)-এর দরবারে পাঠান। মারিয়া ও সিরিন নামক দুই দাসী রাসুল (সা.)-এর জন্য তিনি উপহার হিসেবে পাঠান।
সালিত বিন আমর আমেরি
রাসুল (সা.) ইয়ামামার গভর্নর হাওজা বিন আলীর কাছে পত্র বহনের জন্য প্রতিনিধি হিসেবে সালিত বিন আমর আমেরি (রা.)-কে মনোনীত করেন। সালিত (রা.) এই মোহরাঙ্কিত পত্র নিয়ে হাওজার কাছে যান। হাওজা তাঁকে যথেষ্ট আদর-আপ্যায়ন করেন। সালিত (রা.) তাঁকে পত্রটি পাঠ করে শোনান। তখন তিনি নবীজিকে পাল্টা চিঠি লিখে ইয়ামামার দায়িত্ব দেওয়ার শর্তে ইসলাম গ্রহণের কথা বলেন। সালিত (রা.) উপঢৌকনসহ মদিনায় ফিরে এসে রাসুল (সা.)-কে তাঁর পত্রটি পাঠ করে শোনান। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যদি সে জমিনের একটি অংশ আমার কাছ থেকে চায়, তবু আমি তাকে তা দেব না। সে নিজে ধ্বংস হবে এবং তার হাতে যা কিছু আছে, সব ধ্বংস হবে।’
শুজা বিন ওহাব
রাসুল (সা.) আসাদ বিন খুজায়মাহ গোত্রের সাহাবি শুজা বিন ওহাব (রা.)-কে পত্র দিয়ে দামেস্কের গভর্নর হারিস বিন আবি শামর গাসসানির কাছে পাঠান। যখন তিনি পত্রটি হারিসের হাতে দেন, তখন তিনি বললেন, ‘আমার রাজত্ব কে ছিনিয়ে নিতে পারে? আমি তার ওপর আক্রমণ পরিচালনা করব।’ তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন না।
সূত্র: তবকাতে ইবনে সাদ ও আর রাহিকুল মাখতুম
লেখক: শিক্ষক
রাসুল (সা.) হুদায়বিয়া সন্ধি সম্পন্ন করার পর বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি সপ্তম হিজরিতে ছয়জন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ইসলামের দাওয়াতসংবলিত পত্র লেখেন। পত্র পাঠানোর আগে রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের পরামর্শক্রমে একটি সিলমোহর তৈরি করেন। গোলাকার আংটির মতো এই মোহরে স্বতন্ত্র লাইনে তিনটি শব্দ খোদিত ছিল—‘মুহাম্মদ, রাসুল, আল্লাহ’। প্রতিটি পত্রে নবীজি নিজ হাতে এই সিলমোহর ব্যবহার করতেন। অতঃপর তাঁর ঘনিষ্ঠ সাহাবিদের মাধ্যমে এই পত্র বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর কাছে পাঠাতেন। তাঁরা সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে এ গুরুদায়িত্ব পালন করেন। পত্রবাহক সাহাবিদের অন্যতম হলেন—
আমর ইবনে উমাইয়া জামরি
সম্রাট নাজ্জাশির কাছে পত্র নিয়ে আমর বিন উমাইয়া জামরি (রা.)-কে পাঠানো হয়। বাদশাহ পত্রটি ভক্তি নিয়ে চোখে স্পর্শ করান এবং সুউচ্চ আসন থেকে মাটিতে নেমে আসেন। অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করেন।
দাহিয়া ইবনে খলিফা কালবি
শক্তিশালী রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে দাহিয়া ইবনে খলিফা কালবি (রা.)-কে রাসুল (সা.) পত্র নিয়ে পাঠান। হিরাক্লিয়াস নবীজির পত্র পেয়ে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে তাঁর অনুচর ও নেতাদের কাছে মতামত জানতে চান। তাঁরা পরস্পরে সংঘাতে জড়ানোর ভয়ে হিরাক্লিয়াস তাঁদের চুপ করিয়ে দেন।
আবদুল্লাহ ইবনে হুজাফা সাহমি
নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে হুজাফা সাহমি (রা.)-কে পারস্য সম্রাট কিসরার কাছে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য পত্র দিয়ে পাঠান। সম্রাট রাসুলের পত্রটি টুকরা টুকরা করে ফেলেন। দূত তাঁর সামনে এর প্রতিবাদ জানালেন। তিনি দূতের সাহসিকতা দেখে হতভম্ব হয়ে যান। শেষে তিনি এ খবর এসে রাসুল (সা.)-কে জানালেন। রাসুল (সা.) এটি জানার পর মনঃকষ্ট পেলেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ, যেমন করে সে পত্র টুকরা টুকরা করল, আপনি তার রাজ্যকে সেভাবে টুকরা করে দিন।’ ক্ষণকালের মধ্যে তার রাজ্য টুকরা টুকরা হয়ে যায়।
হাতিব বিন আবি বালতাআ
রাসুল (সা.) মিসরের শাসনকর্তা ও কিবতিদের অধিপতি মুকাওকিসের কাছে পত্র নিয়ে হাতিব বিন আবি বালতাআ (রা.)-কে পাঠিয়েছিলেন। তিনি চিঠিটি সম্মানের সঙ্গে একটি দামি বাক্সে রাখেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। তবে বহু দামি উপঢৌকন রাসুল (সা.)-এর দরবারে পাঠান। মারিয়া ও সিরিন নামক দুই দাসী রাসুল (সা.)-এর জন্য তিনি উপহার হিসেবে পাঠান।
সালিত বিন আমর আমেরি
রাসুল (সা.) ইয়ামামার গভর্নর হাওজা বিন আলীর কাছে পত্র বহনের জন্য প্রতিনিধি হিসেবে সালিত বিন আমর আমেরি (রা.)-কে মনোনীত করেন। সালিত (রা.) এই মোহরাঙ্কিত পত্র নিয়ে হাওজার কাছে যান। হাওজা তাঁকে যথেষ্ট আদর-আপ্যায়ন করেন। সালিত (রা.) তাঁকে পত্রটি পাঠ করে শোনান। তখন তিনি নবীজিকে পাল্টা চিঠি লিখে ইয়ামামার দায়িত্ব দেওয়ার শর্তে ইসলাম গ্রহণের কথা বলেন। সালিত (রা.) উপঢৌকনসহ মদিনায় ফিরে এসে রাসুল (সা.)-কে তাঁর পত্রটি পাঠ করে শোনান। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যদি সে জমিনের একটি অংশ আমার কাছ থেকে চায়, তবু আমি তাকে তা দেব না। সে নিজে ধ্বংস হবে এবং তার হাতে যা কিছু আছে, সব ধ্বংস হবে।’
শুজা বিন ওহাব
রাসুল (সা.) আসাদ বিন খুজায়মাহ গোত্রের সাহাবি শুজা বিন ওহাব (রা.)-কে পত্র দিয়ে দামেস্কের গভর্নর হারিস বিন আবি শামর গাসসানির কাছে পাঠান। যখন তিনি পত্রটি হারিসের হাতে দেন, তখন তিনি বললেন, ‘আমার রাজত্ব কে ছিনিয়ে নিতে পারে? আমি তার ওপর আক্রমণ পরিচালনা করব।’ তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন না।
সূত্র: তবকাতে ইবনে সাদ ও আর রাহিকুল মাখতুম
লেখক: শিক্ষক
হজ ও ওমরাহ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ দুটি ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তিরাই কেবল এই মহান ফজিলত অর্জনের সুযোগ পান। কারণ পবিত্র মক্কা নগরীতে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য পৃথিবীর সব মুসলমানের হয় না।
১ দিন আগেচারটি অনুপম এমন গুণ আছে, যেগুলো সাধারণত কোনো নীতিবান বিনয়ী ব্যক্তির মধ্যে পাওয়া যায়। নবীজির মধ্যে গুণগুলো ষোলোআনা বিদ্যমান ছিল। সেগুলো হলো— অসুস্থ মানুষের সেবা-শুশ্রূষা: নবী (সা.) ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সবার খোঁজখবর নিতেন।
২ দিন আগেসাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা করা, তাঁদের গালমন্দ করা এবং তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পুষে রাখা ইসলামে অনুমোদিত নয়। কারণ আল্লাহ তাআলা সাহাবিদের প্রতি সন্তুষ্ট হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং তাঁদের ব্যাপারে এমন কথা বলা মুসলমানদের জন্য উচিত নয়, যা তাঁদের প্রতি মানুষের মনে ঘৃণা বা বিদ্বেষ উৎপাদন করে।
৩ দিন আগেআরবি ‘মিরাজ’ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বগমন। লাইলাতুল মিরাজ বা মিরাজের রজনী উপমহাদেশে শবে মিরাজ হিসেবে পরিচিত। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কুদরতিভাবে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেন এবং মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মিরাজের পটভূমি সম্পর্কে জ্ঞানীরা বলেছেন, জন্মের আগেই বাবাকে হারান প্রিয় নবী (সা.)।
৪ দিন আগে