রজত কান্তি রায়, ঢাকা
ঢাকার রাস্তায় জ্যামে বসে থাকতে থাকতে আপনি বিরক্ত। হঠাৎ দেখলেন, বাংলা সিনেমার এক নায়িকা আপনাকে পিস্তল তাক করে আছেন, আপনার বিরক্তি নিমেষে উধাও হয়ে যাবে। মনে হবে ‘হাউ ফানি’! কিন্তু যখন দেখবেন, ব্রুস লি আপনার সামনে কারাতে বা কুংফুর এক জটিল প্যাঁচ কষে দাঁড়িয়ে আছেন, শরীর খানিক শিরশির করে উঠবে। আর যদি কখনো দেখে ফেলেন, আপনার সামনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে এক সিংহ, আপনার পাশের রিকশাচালক এক শিয়াল আর সেই রিকশার যাত্রী রয়েল বেঙ্গল টাইগার, তাহলে ভরদুপুরেও আপনার মাথা ঝিমঝিম করতে থাকবে।
ঢাকা শহরের জ্যামে আটকে থাকা রিকশাগুলোর পেছনের ঝুল বোর্ডে কিংবা সিটে আঁকা চিত্রকর্ম আপনাকে এমনই জাদুবাস্তবতায় নিয়ে যাবে। প্রতিদিনের দেখা রিকশাচিত্রগুলো আমাদের কাছে ‘ফানি’ হলেও ইউনেসকো দেশের এই বিশেষ ঘরানার চিত্রকর্মকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কয়েক দিন আগে। বাউলগান, জামদানি বস্ত্র, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও শীতলপাটির পর দেশের পঞ্চম শিল্প হিসেবে রিকশাচিত্র ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেল।
রিকশাচিত্রের বৈশিষ্ট্য হলো এর উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার। এই রং মানুষকে আকৃষ্ট করে। এর মোটিফগুলো খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, সেখানে যেমন আছে নায়ক-নায়িকার প্রতিকৃতি, তেমনি আছে উজ্জ্বল রঙের ফুল, লতাপাতা, আছে জোড়া ময়ূর কিংবা দোয়েল। আছে দেশের বিখ্যাত সব স্থাপনা। আছে ঐতিহাসিক ঘটনাবলি। এর ক্যানভাসের আকার খুব বড় না হলেও বিষয়বস্তুর বিন্যাসে চমৎকারিত্ব আছে। আর তা আকৃষ্ট করেছে আমাদের ফ্যাশন
ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের। তাঁরা রিকশাচিত্রের মোটিফ ব্যবহার করে পোশাকের নকশা করছেন। শুধু পোশাকই নয় অবশ্য, সেখানে ফ্যাশন ও গৃহসজ্জার অনুষঙ্গ কিংবা ক্রোকারিজও আছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে এই ঐতিহ্যবাহী চিত্রশিল্পকে রিকশার ঝুল বোর্ড থেকে বের করে ফ্যাশনে ও অনুষঙ্গে ব্যবহার করার প্রবণতা শুরু হয়েছে। এ কাজে বিবি রাসেল কিংবা তৈয়বা বেগম লিপির মতো ডিজাইনার ও শিল্পীরা ছিলেন পথিকৃতের ভূমিকায়। তরুণ উদ্যোক্তা এবং ডিজাইনারদের অনেকেই এখন হাতে এঁকে কিংবা ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে রিকশাচিত্রকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করছেন বিভিন্ন পণ্যে।
ফ্যাশন অনুষঙ্গে চশমার ফ্রেমে রিকশাচিত্রের ব্যবহার এখন দেশে ট্রেডমার্ক বলা চলে। খুব সম্ভবত এর হাত ধরেই রিকশাচিত্র ফ্যাশনের মতো ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করে। এর পর সেটি নিয়ে চলে বিভিন্নজনের বিভিন্ন নিরীক্ষা। ধীরে ধীরে সেটি গৃহসজ্জার বিভিন্ন অনুষঙ্গ এবং ক্রোকারিজের জগতে প্রবেশ করে। এর উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায় ফেসবুকে বা ইনস্টাগ্রামে ঢুকলে। এসব জায়গায় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পেজ পাওয়া যাবে যাঁরা এখন রিকশাচিত্র ব্যবহার করে কাচের গ্লাস, মগ, কেটলি, কাচের বোতল, প্লেট, গয়নার বাক্স, মোবাইল কভার, ট্রে, ট্রাংক, অফিসের ফাইল বক্স ইত্যাদি নকশা করতে শুরু করেছেন। স্পষ্টতই এ কাজগুলোর শতভাগ রিকশাচিত্রীরা করেন না। করেন চারুকলায় প্রশিক্ষণ পাওয়া আধুনিক শিল্পীরা। তাতে কোনো সমস্যা নেই অবশ্য; বরং এই প্রবণতা দিন দিন রিকশাচিত্রের মতো আরবান ফোক আর্টকে ছড়িয়ে দিয়েছে, জীবিত ও সজীব রেখেছে।
রিকশাচিত্রের যতগুলো জনপ্রিয় মোটিফ রয়েছে, এগুলোর মধ্যে ফ্যাশনে বহুলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে জোড়া শালিক, জোড়া ময়ূর, গোলাপসহ বিভিন্ন ফুল, ‘ভুলো না আমায়’-এর মতো লেটারিং। অনুষঙ্গের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে মূলত বিভিন্ন ধরনের ফুল ও লতাপাতা। বিপরীতধর্মী রঙের ব্যবহার কিংবা একই রঙের বিভিন্ন শেডের ব্যবহার আধুনিক পোশাক নকশাকারদের এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ড। পোশাকে রিকশাচিত্রের মোটিফে রঙের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তা বজায় রাখা হয়। ফলে পোশাকে রিকশাচিত্র এক দারুণ চিত্রকল্প তৈরি করে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন রিকশাচিত্রীদের দিয়ে ওয়ার্কশপ করাচ্ছে নতুন শিল্পীদের এ ধারা শেখানোর জন্য। এ সময় ইউনেসকোর স্বীকৃতি রিকশাচিত্রকে আরও বেগবান করবে আশা করা যায়।
ঢাকার রাস্তায় জ্যামে বসে থাকতে থাকতে আপনি বিরক্ত। হঠাৎ দেখলেন, বাংলা সিনেমার এক নায়িকা আপনাকে পিস্তল তাক করে আছেন, আপনার বিরক্তি নিমেষে উধাও হয়ে যাবে। মনে হবে ‘হাউ ফানি’! কিন্তু যখন দেখবেন, ব্রুস লি আপনার সামনে কারাতে বা কুংফুর এক জটিল প্যাঁচ কষে দাঁড়িয়ে আছেন, শরীর খানিক শিরশির করে উঠবে। আর যদি কখনো দেখে ফেলেন, আপনার সামনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে এক সিংহ, আপনার পাশের রিকশাচালক এক শিয়াল আর সেই রিকশার যাত্রী রয়েল বেঙ্গল টাইগার, তাহলে ভরদুপুরেও আপনার মাথা ঝিমঝিম করতে থাকবে।
ঢাকা শহরের জ্যামে আটকে থাকা রিকশাগুলোর পেছনের ঝুল বোর্ডে কিংবা সিটে আঁকা চিত্রকর্ম আপনাকে এমনই জাদুবাস্তবতায় নিয়ে যাবে। প্রতিদিনের দেখা রিকশাচিত্রগুলো আমাদের কাছে ‘ফানি’ হলেও ইউনেসকো দেশের এই বিশেষ ঘরানার চিত্রকর্মকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কয়েক দিন আগে। বাউলগান, জামদানি বস্ত্র, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও শীতলপাটির পর দেশের পঞ্চম শিল্প হিসেবে রিকশাচিত্র ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেল।
রিকশাচিত্রের বৈশিষ্ট্য হলো এর উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার। এই রং মানুষকে আকৃষ্ট করে। এর মোটিফগুলো খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, সেখানে যেমন আছে নায়ক-নায়িকার প্রতিকৃতি, তেমনি আছে উজ্জ্বল রঙের ফুল, লতাপাতা, আছে জোড়া ময়ূর কিংবা দোয়েল। আছে দেশের বিখ্যাত সব স্থাপনা। আছে ঐতিহাসিক ঘটনাবলি। এর ক্যানভাসের আকার খুব বড় না হলেও বিষয়বস্তুর বিন্যাসে চমৎকারিত্ব আছে। আর তা আকৃষ্ট করেছে আমাদের ফ্যাশন
ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের। তাঁরা রিকশাচিত্রের মোটিফ ব্যবহার করে পোশাকের নকশা করছেন। শুধু পোশাকই নয় অবশ্য, সেখানে ফ্যাশন ও গৃহসজ্জার অনুষঙ্গ কিংবা ক্রোকারিজও আছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে এই ঐতিহ্যবাহী চিত্রশিল্পকে রিকশার ঝুল বোর্ড থেকে বের করে ফ্যাশনে ও অনুষঙ্গে ব্যবহার করার প্রবণতা শুরু হয়েছে। এ কাজে বিবি রাসেল কিংবা তৈয়বা বেগম লিপির মতো ডিজাইনার ও শিল্পীরা ছিলেন পথিকৃতের ভূমিকায়। তরুণ উদ্যোক্তা এবং ডিজাইনারদের অনেকেই এখন হাতে এঁকে কিংবা ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে রিকশাচিত্রকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করছেন বিভিন্ন পণ্যে।
ফ্যাশন অনুষঙ্গে চশমার ফ্রেমে রিকশাচিত্রের ব্যবহার এখন দেশে ট্রেডমার্ক বলা চলে। খুব সম্ভবত এর হাত ধরেই রিকশাচিত্র ফ্যাশনের মতো ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করে। এর পর সেটি নিয়ে চলে বিভিন্নজনের বিভিন্ন নিরীক্ষা। ধীরে ধীরে সেটি গৃহসজ্জার বিভিন্ন অনুষঙ্গ এবং ক্রোকারিজের জগতে প্রবেশ করে। এর উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায় ফেসবুকে বা ইনস্টাগ্রামে ঢুকলে। এসব জায়গায় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পেজ পাওয়া যাবে যাঁরা এখন রিকশাচিত্র ব্যবহার করে কাচের গ্লাস, মগ, কেটলি, কাচের বোতল, প্লেট, গয়নার বাক্স, মোবাইল কভার, ট্রে, ট্রাংক, অফিসের ফাইল বক্স ইত্যাদি নকশা করতে শুরু করেছেন। স্পষ্টতই এ কাজগুলোর শতভাগ রিকশাচিত্রীরা করেন না। করেন চারুকলায় প্রশিক্ষণ পাওয়া আধুনিক শিল্পীরা। তাতে কোনো সমস্যা নেই অবশ্য; বরং এই প্রবণতা দিন দিন রিকশাচিত্রের মতো আরবান ফোক আর্টকে ছড়িয়ে দিয়েছে, জীবিত ও সজীব রেখেছে।
রিকশাচিত্রের যতগুলো জনপ্রিয় মোটিফ রয়েছে, এগুলোর মধ্যে ফ্যাশনে বহুলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে জোড়া শালিক, জোড়া ময়ূর, গোলাপসহ বিভিন্ন ফুল, ‘ভুলো না আমায়’-এর মতো লেটারিং। অনুষঙ্গের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে মূলত বিভিন্ন ধরনের ফুল ও লতাপাতা। বিপরীতধর্মী রঙের ব্যবহার কিংবা একই রঙের বিভিন্ন শেডের ব্যবহার আধুনিক পোশাক নকশাকারদের এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ড। পোশাকে রিকশাচিত্রের মোটিফে রঙের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তা বজায় রাখা হয়। ফলে পোশাকে রিকশাচিত্র এক দারুণ চিত্রকল্প তৈরি করে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন রিকশাচিত্রীদের দিয়ে ওয়ার্কশপ করাচ্ছে নতুন শিল্পীদের এ ধারা শেখানোর জন্য। এ সময় ইউনেসকোর স্বীকৃতি রিকশাচিত্রকে আরও বেগবান করবে আশা করা যায়।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে