সুলতান মাহমুদ
জমি কেনার আগে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। তা নাহলে ভবিষ্যতে নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। মামলা মোকদ্দমাসহ জমি পর্যন্ত বেহাত হয়ে যেতে পারে। জমি কিনেও হতে পারেন প্রতারণার শিকার। তাই জমি কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে।
১। বিক্রেতার কাছ থেকে জমি সংক্রান্ত সব কাগজপত্রের ফটোকপি (যেমন: সিএস, আরএস/বিএস বা ঢাকা সিটি জরিপের খতিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র।) সংগ্রহ করে নিজে বা অভিজ্ঞ কারও সহায়তায় যাচাই করতে হবে।
২। জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, ওই দাগে জমির মোট পরিমাণ জানতে হবে।
৩। বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে জমি মালিক হয়ে থাকলে তাঁর ক্রয় দলিল বা ভায়া দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।
৪। বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা তিনি যাঁর মাধ্যমে প্রাপ্ত তাঁর যোগসূত্র মিলিয়ে দেখতে হবে।
৫। খতিয়ান বা দলিলের মাধ্যমে মালিকানা স্বত্ব পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যেমন: সিএস/এসএ খতিয়ান, আরএস/বিএস খতিয়ান ও ঢাকা সিটি জরিপের খতিয়ান পাশাপাশি মিলিয়ে দেখতে হবে জেলা, মৌজা, থানা, দাগ নম্বর ইত্যাদি মিলে কি না।
৬। যদি না মিলে তবে ওই মৌজার সিএস নকশা, আরএস/বিএস ও ঢাকা সিটি জরিপের নকশা জোগাড় করে সেগুলোর তুলনা করে দেখতে হবে সিএস দাগ ভেঙে কয়টি আরএস দাগ বা সিটি জরিপের দাগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সেগুলো কী কী।
৭। ভূমি রেকর্ড রুম থেকে ওই খতিয়ানগুলোর সই মোহর নকল (খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি বা পর্চা) নিয়ে মালিকের নাম নিশ্চিত হতে হবে। যদি সিএস খতিয়ানে মালিকের নামের সঙ্গে এসএ বা আরএস খতিয়ানের মিল পাওয়া না যায় তবে দেখতে হবে সিএস–এর মালিক জমিটি কী করলেন।
৮। জমি যদি বিক্রি, দান (কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি স্বেচ্ছায় কোনো মূল্য বা বিনিময় ছাড়া অন্যকে দেওয়া), হেবা (কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কোনো বিনিময় ছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর), এওয়াজ বদল বা কোনোরূপ হস্তান্তর করে থাকেন তবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে তল্লাশি দিতে হবে এবং হস্তান্তর দলিলের সই মোহর নকল বের করতে হবে।
৯। বিক্রেতার জমিটি তাঁর অন্যান্য শরিকের সঙ্গে অংশনামা (বণ্টননামা) হয়েছে কি না তা দেখতে হবে। বিক্রেতা যদি বলেন যে আপসমূলে বণ্টন হয়েছে, কিন্তু রেজিস্ট্রি হয়নি, তবে ফারায়েজ অনুযায়ী বিক্রেতা যেটুকু অংশের দাবিদার শুধু সেটুকু কেনাই নিরাপদ।
১০। বিক্রেতা যদি তাঁর কেনা জমি বিক্রি করতে চান তবে রেকর্ডীয় মালিক থেকে পরবর্তীতে হস্তান্তরিত সব বায়া দলিলসমূহে (জমিটি যার কাছ থেকে কেনা হয়েছে সেই মালিকের দলিল) বর্ণিত স্বত্ব ঠিক আছে কি না তা দেখতে হবে। ওই দলিলে বর্ণিত খতিয়ান ও দাগ নম্বর বের করে তাও বিশ্লেষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিস থেকে সই মোহর নকল নিয়ে তা যাচাই করতে হবে।
১১। জমিটি খাস, পরিত্যক্ত, অর্পিত সম্পত্তি (পূর্বের নাম শত্রু সম্পত্তি) কি না বা সরকার কোনো কারণে অধিগ্রহণ করেছে কি না যাচাই করতে হবে।
১২। জমি বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব বা বিক্রয়ের বৈধ অধিকার আছে কি না তা দেখতে হবে। অর্থাৎ জমির মালিক নাবালক বা অপ্রকৃতিস্থ কি না লক্ষ্য রাখতে হবে। নাবালক হলে আদালতের মাধ্যমে অভিভাবক নিযুক্ত করে বিক্রয়ের অনুমতি নিতে হবে।
১৩। কেনার আগে সব অংশীদারকে নোটিশ দিতে হবে যাতে পরবর্তীতে ‘অগ্রক্রয় মোকদ্দমা’ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।
১৪। বিক্রেতা ওই জমির ব্যাপারে কাউকে আমমোক্তার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) নিযুক্ত করেছেন কি না তা দেখতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক কিংবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখেছেন কি না। আর জমিটি নিয়ে কোনো মামলা বিচারাধীন আছে কি না কিংবা কোনো প্রকার মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে কি না তাও দেখতে হবে।
১৫। জমির মালিকানা স্বত্ব সঠিক পাওয়ার পর সিএস/আরএস/বিএস/ঢাকা সিটি জরিপের নকশা নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে নকশা অনুযায়ী ওই জমিটি সেই দাগের কি না।
১৬। বিক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট জমিটি বর্তমানে কার দখলে আছে, কিনতে গেলে কোনো কারণে ভোগ দখলে বাধাগ্রস্ত হবে কি না কিংবা রাস্তা বা পথাধিকারের কোনো বাধা নিষেধ আছে কি না তাও সরেজমিনে যাচাই করে নিতে হবে।
১৭। সবকিছু সঠিক পাওয়া গেলে রেজিস্ট্রি করার জন্য দলিল প্রস্তুত করতে হবে। দলিল লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।
জমি কেনার পরে করণীয়
১। ক্রেতা কেনার সময় জমি মেপে দখল বুঝে নেবেন। মাপার সময় সম্ভব হলে সংলগ্ন জমির মালিকসহ দু–একজন প্রতিবেশীকে উপস্থিত রাখুন।
২। জমি কেনার পর নিজের পরিবার পরিজন, নিকটাত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে মাঝে মাঝে দেখতে যান। যাতে করে পরবর্তীতে ওই জমির অবস্থান চিহ্নিত করতে কোনো সমস্যা না হয়।
৩। জমি কেনার পর অবশ্যই সীমানা প্রাচীর দিতে হবে, সেটি পাকা হোক বা কাঁচা।
৪। মালিকানার বিবরণসহ সাইনবোর্ড ঝুলাবেন।
৫। একই সঙ্গে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এসি (ল্যান্ড) অফিসে গিয়ে নামজারি করাবেন এবং হাল সন পর্যন্ত সব খাজনা পরিশোধ করবেন।
আরও খবর পড়ুন:
জমি কেনার আগে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। তা নাহলে ভবিষ্যতে নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। মামলা মোকদ্দমাসহ জমি পর্যন্ত বেহাত হয়ে যেতে পারে। জমি কিনেও হতে পারেন প্রতারণার শিকার। তাই জমি কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে।
১। বিক্রেতার কাছ থেকে জমি সংক্রান্ত সব কাগজপত্রের ফটোকপি (যেমন: সিএস, আরএস/বিএস বা ঢাকা সিটি জরিপের খতিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র।) সংগ্রহ করে নিজে বা অভিজ্ঞ কারও সহায়তায় যাচাই করতে হবে।
২। জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, ওই দাগে জমির মোট পরিমাণ জানতে হবে।
৩। বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে জমি মালিক হয়ে থাকলে তাঁর ক্রয় দলিল বা ভায়া দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।
৪। বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা তিনি যাঁর মাধ্যমে প্রাপ্ত তাঁর যোগসূত্র মিলিয়ে দেখতে হবে।
৫। খতিয়ান বা দলিলের মাধ্যমে মালিকানা স্বত্ব পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যেমন: সিএস/এসএ খতিয়ান, আরএস/বিএস খতিয়ান ও ঢাকা সিটি জরিপের খতিয়ান পাশাপাশি মিলিয়ে দেখতে হবে জেলা, মৌজা, থানা, দাগ নম্বর ইত্যাদি মিলে কি না।
৬। যদি না মিলে তবে ওই মৌজার সিএস নকশা, আরএস/বিএস ও ঢাকা সিটি জরিপের নকশা জোগাড় করে সেগুলোর তুলনা করে দেখতে হবে সিএস দাগ ভেঙে কয়টি আরএস দাগ বা সিটি জরিপের দাগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সেগুলো কী কী।
৭। ভূমি রেকর্ড রুম থেকে ওই খতিয়ানগুলোর সই মোহর নকল (খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি বা পর্চা) নিয়ে মালিকের নাম নিশ্চিত হতে হবে। যদি সিএস খতিয়ানে মালিকের নামের সঙ্গে এসএ বা আরএস খতিয়ানের মিল পাওয়া না যায় তবে দেখতে হবে সিএস–এর মালিক জমিটি কী করলেন।
৮। জমি যদি বিক্রি, দান (কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি স্বেচ্ছায় কোনো মূল্য বা বিনিময় ছাড়া অন্যকে দেওয়া), হেবা (কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কোনো বিনিময় ছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর), এওয়াজ বদল বা কোনোরূপ হস্তান্তর করে থাকেন তবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে তল্লাশি দিতে হবে এবং হস্তান্তর দলিলের সই মোহর নকল বের করতে হবে।
৯। বিক্রেতার জমিটি তাঁর অন্যান্য শরিকের সঙ্গে অংশনামা (বণ্টননামা) হয়েছে কি না তা দেখতে হবে। বিক্রেতা যদি বলেন যে আপসমূলে বণ্টন হয়েছে, কিন্তু রেজিস্ট্রি হয়নি, তবে ফারায়েজ অনুযায়ী বিক্রেতা যেটুকু অংশের দাবিদার শুধু সেটুকু কেনাই নিরাপদ।
১০। বিক্রেতা যদি তাঁর কেনা জমি বিক্রি করতে চান তবে রেকর্ডীয় মালিক থেকে পরবর্তীতে হস্তান্তরিত সব বায়া দলিলসমূহে (জমিটি যার কাছ থেকে কেনা হয়েছে সেই মালিকের দলিল) বর্ণিত স্বত্ব ঠিক আছে কি না তা দেখতে হবে। ওই দলিলে বর্ণিত খতিয়ান ও দাগ নম্বর বের করে তাও বিশ্লেষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিস থেকে সই মোহর নকল নিয়ে তা যাচাই করতে হবে।
১১। জমিটি খাস, পরিত্যক্ত, অর্পিত সম্পত্তি (পূর্বের নাম শত্রু সম্পত্তি) কি না বা সরকার কোনো কারণে অধিগ্রহণ করেছে কি না যাচাই করতে হবে।
১২। জমি বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব বা বিক্রয়ের বৈধ অধিকার আছে কি না তা দেখতে হবে। অর্থাৎ জমির মালিক নাবালক বা অপ্রকৃতিস্থ কি না লক্ষ্য রাখতে হবে। নাবালক হলে আদালতের মাধ্যমে অভিভাবক নিযুক্ত করে বিক্রয়ের অনুমতি নিতে হবে।
১৩। কেনার আগে সব অংশীদারকে নোটিশ দিতে হবে যাতে পরবর্তীতে ‘অগ্রক্রয় মোকদ্দমা’ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।
১৪। বিক্রেতা ওই জমির ব্যাপারে কাউকে আমমোক্তার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) নিযুক্ত করেছেন কি না তা দেখতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক কিংবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখেছেন কি না। আর জমিটি নিয়ে কোনো মামলা বিচারাধীন আছে কি না কিংবা কোনো প্রকার মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে কি না তাও দেখতে হবে।
১৫। জমির মালিকানা স্বত্ব সঠিক পাওয়ার পর সিএস/আরএস/বিএস/ঢাকা সিটি জরিপের নকশা নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে নকশা অনুযায়ী ওই জমিটি সেই দাগের কি না।
১৬। বিক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট জমিটি বর্তমানে কার দখলে আছে, কিনতে গেলে কোনো কারণে ভোগ দখলে বাধাগ্রস্ত হবে কি না কিংবা রাস্তা বা পথাধিকারের কোনো বাধা নিষেধ আছে কি না তাও সরেজমিনে যাচাই করে নিতে হবে।
১৭। সবকিছু সঠিক পাওয়া গেলে রেজিস্ট্রি করার জন্য দলিল প্রস্তুত করতে হবে। দলিল লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।
জমি কেনার পরে করণীয়
১। ক্রেতা কেনার সময় জমি মেপে দখল বুঝে নেবেন। মাপার সময় সম্ভব হলে সংলগ্ন জমির মালিকসহ দু–একজন প্রতিবেশীকে উপস্থিত রাখুন।
২। জমি কেনার পর নিজের পরিবার পরিজন, নিকটাত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে মাঝে মাঝে দেখতে যান। যাতে করে পরবর্তীতে ওই জমির অবস্থান চিহ্নিত করতে কোনো সমস্যা না হয়।
৩। জমি কেনার পর অবশ্যই সীমানা প্রাচীর দিতে হবে, সেটি পাকা হোক বা কাঁচা।
৪। মালিকানার বিবরণসহ সাইনবোর্ড ঝুলাবেন।
৫। একই সঙ্গে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এসি (ল্যান্ড) অফিসে গিয়ে নামজারি করাবেন এবং হাল সন পর্যন্ত সব খাজনা পরিশোধ করবেন।
আরও খবর পড়ুন:
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে