গুঠিয়ার ঐতিহ্যবাহী সন্দেশ

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!

ছানা দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির আছে হরেক রকম স্থানীয় সংস্করণ। যশোর, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের মতো গুঠিয়ার সন্দেশও বিখ্যাত। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম গুঠিয়া। এখানকার সন্দেশ স্বাদে অনন্য। এসব সন্দেশে লেগে থাকে দুধের ঘ্রাণ। গুঠিয়ার এ সন্দেশের ঐতিহ্য প্রায় ৫০ বছরের।

১৯৬২ সালের কথা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া থেকে সন্দেশ তৈরির কৌশল শিখে আসেন গুঠিয়ার স্থানীয় সতীশ চন্দ্র দাস নামের এক ময়রা। এসেই তিনি বাণিজ্যিকভাবে সন্দেশ তৈরি শুরু করেন নিজের মিষ্টির দোকানে। তাঁর কাছ থেকে অন্যরা সেই রেসিপি শিখে নেন। সতীশ গুঠিয়া ছেড়ে বরিশালেও দোকান দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তিনি মারা গেছেন বেশ অনেক দিন আগে। কিন্তু তাঁর সন্দেশ তৈরির রেসিপি ছড়িয়ে পড়ে গুঠিয়াসহ অন্যান্য জায়গায়।

শোনা যায়, সেই রেসিপিতে এখনো অন্যরা সন্দেশ তৈরি করে চলেছেন গুঠিয়া এবং এর আশপাশের এলাকায়।

এখানকার সন্দেশের গুণগত মান ভালো হওয়ার কারণ—টাটকা দুধে তৈরি ছানা। সন্দেশ বানানোর সময় সেই ছানা দেওয়া হয় পরিমাণে বেশি। এই সন্দেশ কিছুটা কম মিষ্টির। ফলে মুখে দিলে ছানার স্বাদ টের পাওয়া যায়।

সন্দেশ তৈরির প্রক্রিয়া

৬ থেকে ৭ কেজি দুধ জ্বাল দিয়ে বানানো হয় ১ কেজি ছানা। সেই ছানার সঙ্গে ১ কেজি চিনি মিশিয়ে অল্প জ্বালে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পাক করে ঢিমে আঁচে ৫ মিনিট রাখলেই এর কাঁচামাল তৈরি হয়ে যায়। তারপর পরিমাণমতো নিয়ে সন্দেশের আকার দেওয়া হয়।

দরদাম

প্রতি কেজি সন্দেশ বিক্রি হয় ৭০০ টাকা। ১ কেজিতে প্রায় ২৫ পিস থাকে। গুঠিয়ায় এখন মাত্র ৬ থেকে ৭ জন বিক্রেতা আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত