নতুন বছরে ফিট থাকতে জেনে নিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭: ৫৯
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৩৫

অনেকে নতুন বছর শরীর ফিট রাখার পরিকল্পনা করেছেন। এটি শুধু সুস্বাস্থ্যই নয়, সৌন্দর্যচর্চারও অংশ। বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফিট থাকতে কী করণীয়, তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ফিট থাকতে প্রতিদিন শরীরচর্চা করতে হবে
বাপ্পা শান্তনু,
সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক এভারগ্রিন ইয়োগা
বাড়তি ওজন কমাতে ব্যায়াম ও ডায়েটের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। খাওয়া কমিয়ে অল্প সময়ে ওজন কমলেও খাবার স্বাভাবিক হলে ওজন বেড়ে যায়। আবার অল্প সময়ে ওজন কমাতে গিয়ে কঠিন ডায়েট করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ফল পেতে ডায়েট চার্ট মানা, সঙ্গে প্রতিদিন শরীরচর্চা করা চাই। যেকোনো ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে অন্তত ১০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। এরপর ওয়ার্মআপ ১০ মিনিট। এ সময় যেন শরীরের ঘাম ঝরে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর পছন্দমতো যোগব্যায়াম, হাঁটা, দৌড়ানো বা অন্য কোনো ব্যায়াম করা যেতে পারে। যেকোনো ব্যায়াম সকালবেলা করা ভালো। তবে ব্যায়ামে অভ্যস্ত হয়ে না থাকলে যোগব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। রোজ সকালে শুধু পানি খেয়ে এক ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে। তবে নিতান্তই না পারলে অন্তত আধা ঘণ্টা করতে হবে।

সকালে সময় না পেলে বিকেল বা সন্ধ্যায় ব্যায়াম করা যেতে পারে। কিন্তু রাত ৮টার পর ব্যায়াম করবেন না। তাতে ঘুমের সমস্যা হয়ে শরীরের ক্ষতি হবে। যাঁরা একদমই নতুন ব্যায়াম করছেন, তাঁদের প্রথম দিকে যোগব্যায়ামের বিভিন্ন আসন ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড করতে হবে। পরে শরীরের ক্ষমতা অনুযায়ী ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫টি আসন করাই যথেষ্ট। যোগব্যায়ামের মধ্যে উত্তানপাদাসন, মন্ডুকাসন, ধনুরাসন, নৌকাসন, অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন করা যেতে পারে। এগুলো ওজন ও পেটের চর্বি কমায় এবং হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। প্রতিটি আসনের পর ৩০ সেকেন্ড বা ১ মিনিট বিশ্রাম নেওয়া যথেষ্ট।

ওজন কমাতে ব্যায়ামের সঙ্গে সুষম খাবারের বিকল্প নেই
নেহা রেজওয়ান,
ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার, ভোগ ফিউচার ফিটনেস জিম
ওজন কমানোর জন্য অনেকে সারা দিন প্রায় না খেয়ে থাকেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডায়েট মানেই না খেয়ে থাকা নয়। ওজন কমানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে সুষম খাবার খাওয়া। বেশি পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। চর্বি বা চর্বিজাতীয় খাবার, তেলে ভাজা খাবার খাদ্যতালিকা থেকে পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন কম করে হলেও এক থেকে দেড় ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে। এ সময়টুকুর মধ্যে আপনি হাঁটতে, দৌড়াতে বা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। তবে শারীরিক কোনো অসুবিধা বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে ব্যায়ামের ব্যাপারে অবশ্যই একজন ফিটনেস ট্রেইনারের পরামর্শ নেবেন।

এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে প্ল্যাংক জ্যাক, স্কিপিং, জাম্পিং জ্যাকস, বডি ওয়েট স্কোয়াটস, লাংজেস, হিপ এক্সটেনশন, লেগ সুইংস, পুশআপ ৩ থেকে ৫ সেট করে করতে পারেন। পাশাপাশি মেদ কমাতে বেসিক পেটের ব্যায়াম করতে হবে। অনেকে হরমোনজনিত ওবিসিটিতে ভোগেন। এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ওজন কমাতে ইচ্ছেমতো ডায়েট করা যাবে না
ইতি খন্দকার
, পুষ্টিবিদ
ওজন কমাতে বিভিন্ন ধরনের ডায়েট আছে। এগুলোর মধ্যে আছে ব্যালান্সড ডায়েট, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং, পেলিও, ভেগান, লো কার্ব, আলট্রা লো ফ্যাট, এইচসিজি, জোন, এটকিনস, ডুকান ডায়েট ইত্যাদি। সব ধরনের ডায়েট সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। বয়স, ওজন ও উচ্চতার পাশাপাশি রোগভেদে ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। তাই নিজ থেকে হুট করে যেকোনো ডায়েট শুরু করা যাবে না। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই বয়স, ওজন ও উচ্চতা জেনে, বিএমআই জেনে প্রতিদিনের যে ক্যালরি প্রয়োজন, সেটা নির্ধারণ করতে হবে। ওজন কমাতে চাওয়া মানুষটির কোনো খাবারে অ্যালার্জি আছে কি না, কোনো অসুখে ভুগছেন কি না এবং আগেও কোনো অসুখ ছিল কি না, এসব ইতিহাস জেনে ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে।

বয়সের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ফাস্ট ফুড, কোল্ড ড্রিংকস, চিনি, মিষ্টিজাতীয় খাবার ইত্যাদি খাওয়া একেবারে বাদ দিতে হবে। দৈনিক ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। যাঁদের চা খাওয়ার অভ্যাস আছে, তাঁরা চিনি ছাড়া মসলা চা, গ্রিন টি অথবা ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন। যাঁদের প্রেশার লো, তাঁরা গ্রিন টি ঘন ঘন খাবেন না। চেষ্টা করতে হবে রঙিন সবজি ও সালাদ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে। পুষ্টিবিদের পরামর্শে দৈনিক খাদ্যতালিকা তৈরি করে কোন খাবারগুলো আপনার ক্যালরির পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত