অপরূপ এক গাঁয়ে

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
Thumbnail image

বসন্ত আসছে। শীতের ম্লান-জবুথবু গ্রামগুলো সেজে  উঠছে ভিন্নতর সৌন্দর্যে। শেষ মাঘের কিছুটা ঠান্ডায় গ্রামের কথা মনে উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে হালকা কুয়াশা ভেদ করে ওঠা সূর্যের কথা, রাতভর টিনের চালে শিশিরের পতনের কথা কিংবা গাছিদের রস ভর্তি মাটির ভাঁড় কাঁধে হনহন করে চলে যাওয়ার কথা।

শিশিরভেজা দুই পা; তবু দেখতে ভালো লাগে খেতের আলে সাদা বকের উঁকিঝুঁকি। শহরে ইটের খাঁচায় বন্দী মনটা কেমন জানি উচাটন করে।

শীতের গ্রাম ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা মিটিয়ে ফেলুন দ্রুতই। ঘুরে আসুন স্বপ্নের কোনো গ্রাম থেকে। মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার খলসি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অপরূপ এক গ্রাম। চকচকে মেঠো পথের পাড় ঘেঁষে সবজির ঘ্রাণ, মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ সাম্রাজ্য। ফসলের মাঠ পেরিয়ে গাঁয়ের কাছাকাছি পথের ধারে প্রাচীন বটগাছ। থমকে দাঁড়ায় আগন্তুক, বসে জিরিয়ে নেন হাটফেরত গ্রামবাসী। সরিষা ফুলের খেতগুলো বাদে বাকি গ্রাম সবুজে মোড়ানো। গ্রামের মানুষের সহজ-সরল জীবনযাত্রা।

এ গাঁয়ের কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে যমুনার শাখানদী। ক্ষীণকায় জলধারায় হাঁসের জলকেলি, পাখিদের কোলাহল আর সাঁঝের বেলায় ঝিঁঝি পোকার একনাগাড়ে ডেকে চলা। ৪টি পাড়ায় ৬ শতাধিক লোকের বাস। বেশির ভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। নদীর মাছ, খেজুরগাছের রস বিক্রি, টাটকা সবজি আর গবাদিপশু পালন তাদের আরেক উপার্জনের খাত। গাঁয়ের মোড়ে রয়েছে চায়ের দুটি টংঘর।

সকালের সোনারোদে গাভির দুধ দিয়ে তৈরি ধোঁয়া ওঠা চা আর খেজুর রস-গুড়ের স্বাদ নেওয়া যাবে। ফিরে যাওয়ার সময় কিনতে পারেন শীতকালীন শাকসবজি, দেশি হাঁস-মুরগি। পেয়ে যেতে পারেন নদীতে সদ্য ধরা টাটকা মাছ কেনার সুযোগ।

ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কুস্তা এলাকা হয়ে দৌলতপুর উপজেলার খলসি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে অনায়াসেই পৌঁছানো যায়। নাশতা-খাবার এবং থাকা মানিকগঞ্জ কিংবা ঘিওরেই করতে হবে। এরপর আঁকাবাঁকা পথ, নদীর পাড় আর খেতের আল ধরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ মিলবে। এ গ্রামে ঝগড়াঝাঁটি হয় না বললেই চলে। গ্রামের প্রবীণ মানুষেরা অন্তত তা-ই বলবে আপনাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত