Ajker Patrika

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন /মাসকাটে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক আজ

আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৩৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। ছবি: সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে চলমান টানাপোড়েনের মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এই বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওমানের মাসকাটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৮ম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওমান সরকারের যৌথ আয়োজনে এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে আঞ্চলিক সম্মেলনে প্রায় ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এই বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে এই সম্মেলনে দেশটির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত ঝাই জুন অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

২০১৯ সালের পর এই প্রথম কোনো চীনা কর্মকর্তাকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণন এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর গত শুক্রবারই মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার পর মাসকাটে পৌঁছেছেন।

আজ রোববার ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ বদর বিন হামাদ আল বুসাইদি এবং সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণনের সঙ্গে জয়শংকরের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

জয়শংকরের বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। বলা হচ্ছে, এটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং ঢাকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উত্তপ্ত।

গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এরপর থেকেই ভারত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোও বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার–প্রচারণায় অংশ নিয়েছে।

ড. ইউনূস সরকার, ভারতকে একাধিকবার বলেছে যেন, দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা রাজনৈতিক বিবৃতি না দেন বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ না দেন। কিন্তু শেখ হাসিনা এটি করেই যাচ্ছেন, আর বাংলাদেশের প্রতিবাদের জবাবে ভারত সরকার দায়সারা বিবৃতি দিচ্ছে।

এ ছাড়া সীমান্ত নিরাপত্তা, পানি বণ্টন, বন্যা ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, মেডিকেল ভিসা ইত্যাদি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনাও অব্যাহত। গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রীর ঢাকা সফরেও এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জয়শংকর এবং তৌহিদ হোসেনের বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া হবে, পাশাপাশি আগামী ২–৪ এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক আঞ্চলিক সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি এবং ড. ইউনূসের সম্ভাব্য বৈঠকের প্রস্তুতিও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।

জয়শংকর এই সম্মেলনে আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে এসেছে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ মাসকাটে আসছেন এমন এক সময়ে যখন আদানি গ্রুপের সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি চুক্তি থেকে সরে গেছে দেশটির সরকার।

মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ খলিল চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) কার্যকর করেছে। এখন ভারতের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে আশা করছে নয়াদিল্লি।

নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অর্জু দেউবা দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা ওলির ভারত সফরের তারিখ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। গত ডিসেম্বরে ওলি চীনে দ্বিপক্ষীয় সফর করেছিলেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফরে ভারতকে বাদ দেওয়ার বিরল ঘটনা ঘটিয়েছেন ওলি।

এ ছাড়া মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধনঞ্জয় রামফুলের সঙ্গে জয়শংকরের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে মরিশাস ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেখানে ভারত একটি ‘নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ’ ভূমিকা পালন করেছে বলে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের। তবে নতুন মরিশাস সরকার এই চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভারত হতাশ হয়েছে। জয়শংকর রামফুলের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন।

এই সম্মেলনটি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সম্মেলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে ২৯টি দেশের মন্ত্রী এবং ৪৫টি দেশ ও আঞ্চলিক সংগঠন যেমন: সার্ক, আইওআরও, বিমসটেক এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল (জিসিসি)–এর ২০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে ভারত ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও ক্ষমতাসীন বিজেপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেন, ‘ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষের আবাসস্থল, এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, যেখানে ৭০ শতাংশ বৈশ্বিক কন্টেইনার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিয়ের আসরে কনে বদল, মেয়ের জায়গায় মা

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

বদলির পর ঠাকুরগাঁওয়ের ওসির পোস্ট: ‘বুঝলে বুঝ, না বুঝলে খেয়ে নে তরমুজ’

কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ বাংলাদেশের কাছে তুলল পাকিস্তান

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত