কামরুল হাসান, ঢাকা
ডেমরা থানার ওসি ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, আমরা ডাকতাম সিরাজ ভাই। আড্ডাবাজ আর কিছুটা বোহিমিয়ান। এএসপি হয়ে অবসর নিয়ে পশ্চিম হাজীপাড়ায় এক ভায়রার বাসায় উঠলেন। সঙ্গে স্ত্রী আর কলেজপড়ুয়া একমাত্র মেয়ে রুশদানিয়া ইসলাম বুশরা। ফুলের মতো দেখতে মেয়েটির ডাকনামও ফুল। একদিন সেই মেয়েটিই খুন হয়ে গেল। শুধু খুন নয়, ধর্ষণের পরে খুন। খবর পেয়ে আমরা ছুটে গিয়ে দেখলাম, শোবার ঘরের খাটের ওপরে ঝরা বকুলের মতো পড়ে আছে মেয়েটি। পাশে সিরাজ ভাই বসে কাঁদছেন।
ডিআইটি সড়ক ধরে মৌচাক বা মালিবাগ থেকে রামপুরা টিভি স্টেশনের দিকে যেতে চৌধুরীপাড়ার আবুল হোটেলের পরই হাজীপাড়া। করাতকল পেরিয়ে বাঁয়ে পশ্চিম দিকে একটি ঢালু পথ নেমে গেছে। সেই পথমুখের ৩ নম্বর বাড়িটিই ঘটনাস্থল। ২০০০ সালের ১ জুলাই সকালে আমি যখন অকুস্থলে পৌঁছালাম, ততক্ষণে পুলিশ এসে গেছে। ডিবির কর্মকর্তারা সবকিছু তন্নতন্ন করে খুঁজছেন। তখনকার ডিসি ডিবি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান বিদেশে ছিলেন, দায়িত্বে ছিলেন শহিদুল ইসলাম। কয়েক বছর আগে এই কর্মকর্তা বিদেশে মারা যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই তরুণ এসি রুহুল আমিন ও তৌফিক মাহবুব চৌধুরী। তাঁরা দুজনই এখন ডিআইজি।
খুনি কীভাবে এই বাড়িতে ঢুকল, তা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নিহত হওয়ার পর তাঁদের ফ্ল্যাটে যেমন একটি জানালা কাটা ছিল; ঠিক সে রকমই জানালার একটি অংশ কাটা ছিল ফুলের ঘরে। পুরো বাড়িতে আর কোনো কিছু খোয়া যায়নি, শুধু ফুলের শোবার ঘরের জানালার গ্রিল কাটা। প্রথম দেখায় সবাই ধরে নিয়েছিলেন, সেই কাটা জানালা দিয়েই খুনিরা ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। এরপর একই পথ দিয়ে পালিয়ে গেছে। বাড়ির প্রতিটি ঘরে মানুষ, কিন্তু তাদের কেউ কিছু টের পাননি।
এভাবে কয়েক দিন তদন্ত চলে। তথ্য মোটাতাজা হতে থাকে। গোয়েন্দারা একমত হন, খুনিরা এই বাড়ির ভেতরেই ছিল। তাঁরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। প্রশ্ন উঠল, এত লোক থাকতে খুনিরা কেন এই কলেজপড়ুয়া মেয়েকে মারতে যাবে? ধীরে ধীরে সেটাও পরিষ্কার হয়। হাজীপাড়ার সেই বাড়িই ছিল হত্যাকাণ্ডের কারণ। বিরোধ এই সম্পদ নিয়ে।
পাঁচ রুমের একতলা এই বাড়ির মালিক ছিলেন ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এম এ সামাদ। সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় জমির দলিল করেন পিতার নামে। পরে তাঁর বাবা দানপত্র অনুযায়ী তাঁকে আবার ফিরিয়ে দেন। এম এ সামাদের সঙ্গে এই বাড়িতে থাকতেন তাঁর সৎভাই এম এ কাদের। কয়েক বছর পর কাদের বিয়ে করেন, বউ নিয়ে আলাদা বাসা নেন। ১৯৯২ সালে গৃহকর্তা সামাদের স্ত্রী মারা যান। তখন একদিন কাদের এই বাড়িতে এসে একটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। সামাদের ছেলে এতে বাধা দেন। তাঁদের শায়েস্তা করতে মামলা দিয়ে ভাই ও তাঁর ছেলেদের কারাগারে পাঠান কাদের। ’৯৫ সালে সামাদও মারা যান।
সামাদের পুত্ররা বাড়িটি ভাড়া দিয়ে আমেরিকায় চলে যান। কিন্তু কাদের ভাড়াটেদের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। এরপর সামাদের ছেলেরা কাদেরের হাত থেকে বাড়িটি বাঁচাতে তাঁদের খালু পুলিশ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামকে থাকতে দেন। সিরাজুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে গফরগাঁও থেকে বদলি হয়ে এই বাড়িতে ওঠেন।
বাড়িতে মোট পাঁচটি কক্ষের দুটিতে থাকতেন এএসপি সিরাজুল, তাঁর স্ত্রী আর একমাত্র মেয়ে ফুল। অন্য কক্ষগুলোতে থাকত কাদেরের পরিবার ও তাঁর শ্যালিকা হেনা। এক বাড়িতে দুই পরিবারের থাকা নিয়ে প্রায়ই ঠোকাঠুকি হতো। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথাবার্তাও বন্ধ হয়ে যায়।
কাদের ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। এলাকায় খুবই প্রভাবশালী। হাজীপাড়ার বাড়িতে কাদেরের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রুনু কাদের, দুই মেয়ে হৃদি ও আঁচল এবং শ্যালিকা হেনা থাকতেন। ঘটনার দিন রাতে কাদেরের দুই শ্যালক ও অন্য তিন যুবক অনেক রাত পর্যন্ত এ বাড়িতেই ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের সন্দেহ চলে যায় কাদেরের দিকে। পুলিশ এ বাড়ির গৃহকর্মী সুফিয়া ও প্রতিবেশী মিন্টুকেও আটক করে। তাঁদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, বাড়ি দখল করতে ভাড়াটে লোক দিয়ে কাদেরই মেয়েটিকে খুন করিয়েছেন। কাদের ও তাঁর স্ত্রীকে দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জেরা করা হয়। তাঁরা কেউই শেষ পর্যন্ত খুনের কথা স্বীকার করেননি।
ফুলের মা লায়লা ইসলাম ঘটনার পরদিন রমনা থানায় একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় প্রথমে কারও নাম উল্লেখ করেননি। পরে একটি সম্পূরক অভিযোগ দাখিল করেন। তাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা এম এ কাদের, তাঁর স্ত্রী রুনু কাদের, শ্যালক মো. শওকত আহমেদ ও কবির আহমেদের নাম উল্লেখ করেন। ২০০১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়। তাতে কাদেরের শ্যালিকা কানিজ ফাতেমা, গৃহকর্মী সুফিয়াসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০০৩ সালের ৩০ জুন এ মামলার রায় হয়। তাতে কাদের, শওকত ও কবিরকে মৃত্যুদণ্ড এবং রুনু কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যরা খালাস পান।
এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের করা আপিল এবং ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়। ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সেই রায় হয়। হাইকোর্ট কাদের ও তাঁর স্ত্রী রুনু কাদেরের সাজা বহাল রেখে শওকত ও কবিরকে খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দণ্ডিত ব্যক্তিরা পৃথক আপিল করেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত সেই রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এম এ কাদের এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তাঁর স্ত্রী রুনু কাদেরকে খালাস দিয়ে দেন। ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর সেই রায় হয়। রায়ে আদালত বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু রায়ের সেই কপি উচ্চ আদালত থেকে কারাগারে পৌঁছানোর আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর কাদের মারা যান।
যেদিন আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়েছিল, সেদিন ফুলের মা লায়লা ইসলামের একটি প্রতিক্রিয়া নিয়েছিলাম। তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এখন মনে হচ্ছে, ফুল নামে আদৌ কেউ জন্মগ্রহণই করেনি। এ নামে কেউ ছিল না, কেউ খুনও হয়নি। বিচারের নামে এত দিন যা হলো, সব নাটক। আপিল আদালত ছিল সেই নাটকের শেষ দৃশ্য।
লায়লা ইসলামের এ কথার আমি কোনো জবাব দিতে পারিনি।
আরও পড়ুন:
ডেমরা থানার ওসি ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, আমরা ডাকতাম সিরাজ ভাই। আড্ডাবাজ আর কিছুটা বোহিমিয়ান। এএসপি হয়ে অবসর নিয়ে পশ্চিম হাজীপাড়ায় এক ভায়রার বাসায় উঠলেন। সঙ্গে স্ত্রী আর কলেজপড়ুয়া একমাত্র মেয়ে রুশদানিয়া ইসলাম বুশরা। ফুলের মতো দেখতে মেয়েটির ডাকনামও ফুল। একদিন সেই মেয়েটিই খুন হয়ে গেল। শুধু খুন নয়, ধর্ষণের পরে খুন। খবর পেয়ে আমরা ছুটে গিয়ে দেখলাম, শোবার ঘরের খাটের ওপরে ঝরা বকুলের মতো পড়ে আছে মেয়েটি। পাশে সিরাজ ভাই বসে কাঁদছেন।
ডিআইটি সড়ক ধরে মৌচাক বা মালিবাগ থেকে রামপুরা টিভি স্টেশনের দিকে যেতে চৌধুরীপাড়ার আবুল হোটেলের পরই হাজীপাড়া। করাতকল পেরিয়ে বাঁয়ে পশ্চিম দিকে একটি ঢালু পথ নেমে গেছে। সেই পথমুখের ৩ নম্বর বাড়িটিই ঘটনাস্থল। ২০০০ সালের ১ জুলাই সকালে আমি যখন অকুস্থলে পৌঁছালাম, ততক্ষণে পুলিশ এসে গেছে। ডিবির কর্মকর্তারা সবকিছু তন্নতন্ন করে খুঁজছেন। তখনকার ডিসি ডিবি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান বিদেশে ছিলেন, দায়িত্বে ছিলেন শহিদুল ইসলাম। কয়েক বছর আগে এই কর্মকর্তা বিদেশে মারা যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই তরুণ এসি রুহুল আমিন ও তৌফিক মাহবুব চৌধুরী। তাঁরা দুজনই এখন ডিআইজি।
খুনি কীভাবে এই বাড়িতে ঢুকল, তা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নিহত হওয়ার পর তাঁদের ফ্ল্যাটে যেমন একটি জানালা কাটা ছিল; ঠিক সে রকমই জানালার একটি অংশ কাটা ছিল ফুলের ঘরে। পুরো বাড়িতে আর কোনো কিছু খোয়া যায়নি, শুধু ফুলের শোবার ঘরের জানালার গ্রিল কাটা। প্রথম দেখায় সবাই ধরে নিয়েছিলেন, সেই কাটা জানালা দিয়েই খুনিরা ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। এরপর একই পথ দিয়ে পালিয়ে গেছে। বাড়ির প্রতিটি ঘরে মানুষ, কিন্তু তাদের কেউ কিছু টের পাননি।
এভাবে কয়েক দিন তদন্ত চলে। তথ্য মোটাতাজা হতে থাকে। গোয়েন্দারা একমত হন, খুনিরা এই বাড়ির ভেতরেই ছিল। তাঁরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। প্রশ্ন উঠল, এত লোক থাকতে খুনিরা কেন এই কলেজপড়ুয়া মেয়েকে মারতে যাবে? ধীরে ধীরে সেটাও পরিষ্কার হয়। হাজীপাড়ার সেই বাড়িই ছিল হত্যাকাণ্ডের কারণ। বিরোধ এই সম্পদ নিয়ে।
পাঁচ রুমের একতলা এই বাড়ির মালিক ছিলেন ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এম এ সামাদ। সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় জমির দলিল করেন পিতার নামে। পরে তাঁর বাবা দানপত্র অনুযায়ী তাঁকে আবার ফিরিয়ে দেন। এম এ সামাদের সঙ্গে এই বাড়িতে থাকতেন তাঁর সৎভাই এম এ কাদের। কয়েক বছর পর কাদের বিয়ে করেন, বউ নিয়ে আলাদা বাসা নেন। ১৯৯২ সালে গৃহকর্তা সামাদের স্ত্রী মারা যান। তখন একদিন কাদের এই বাড়িতে এসে একটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। সামাদের ছেলে এতে বাধা দেন। তাঁদের শায়েস্তা করতে মামলা দিয়ে ভাই ও তাঁর ছেলেদের কারাগারে পাঠান কাদের। ’৯৫ সালে সামাদও মারা যান।
সামাদের পুত্ররা বাড়িটি ভাড়া দিয়ে আমেরিকায় চলে যান। কিন্তু কাদের ভাড়াটেদের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। এরপর সামাদের ছেলেরা কাদেরের হাত থেকে বাড়িটি বাঁচাতে তাঁদের খালু পুলিশ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামকে থাকতে দেন। সিরাজুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে গফরগাঁও থেকে বদলি হয়ে এই বাড়িতে ওঠেন।
বাড়িতে মোট পাঁচটি কক্ষের দুটিতে থাকতেন এএসপি সিরাজুল, তাঁর স্ত্রী আর একমাত্র মেয়ে ফুল। অন্য কক্ষগুলোতে থাকত কাদেরের পরিবার ও তাঁর শ্যালিকা হেনা। এক বাড়িতে দুই পরিবারের থাকা নিয়ে প্রায়ই ঠোকাঠুকি হতো। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথাবার্তাও বন্ধ হয়ে যায়।
কাদের ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। এলাকায় খুবই প্রভাবশালী। হাজীপাড়ার বাড়িতে কাদেরের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রুনু কাদের, দুই মেয়ে হৃদি ও আঁচল এবং শ্যালিকা হেনা থাকতেন। ঘটনার দিন রাতে কাদেরের দুই শ্যালক ও অন্য তিন যুবক অনেক রাত পর্যন্ত এ বাড়িতেই ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের সন্দেহ চলে যায় কাদেরের দিকে। পুলিশ এ বাড়ির গৃহকর্মী সুফিয়া ও প্রতিবেশী মিন্টুকেও আটক করে। তাঁদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, বাড়ি দখল করতে ভাড়াটে লোক দিয়ে কাদেরই মেয়েটিকে খুন করিয়েছেন। কাদের ও তাঁর স্ত্রীকে দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জেরা করা হয়। তাঁরা কেউই শেষ পর্যন্ত খুনের কথা স্বীকার করেননি।
ফুলের মা লায়লা ইসলাম ঘটনার পরদিন রমনা থানায় একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় প্রথমে কারও নাম উল্লেখ করেননি। পরে একটি সম্পূরক অভিযোগ দাখিল করেন। তাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা এম এ কাদের, তাঁর স্ত্রী রুনু কাদের, শ্যালক মো. শওকত আহমেদ ও কবির আহমেদের নাম উল্লেখ করেন। ২০০১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়। তাতে কাদেরের শ্যালিকা কানিজ ফাতেমা, গৃহকর্মী সুফিয়াসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০০৩ সালের ৩০ জুন এ মামলার রায় হয়। তাতে কাদের, শওকত ও কবিরকে মৃত্যুদণ্ড এবং রুনু কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যরা খালাস পান।
এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের করা আপিল এবং ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়। ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সেই রায় হয়। হাইকোর্ট কাদের ও তাঁর স্ত্রী রুনু কাদেরের সাজা বহাল রেখে শওকত ও কবিরকে খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দণ্ডিত ব্যক্তিরা পৃথক আপিল করেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত সেই রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এম এ কাদের এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তাঁর স্ত্রী রুনু কাদেরকে খালাস দিয়ে দেন। ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর সেই রায় হয়। রায়ে আদালত বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু রায়ের সেই কপি উচ্চ আদালত থেকে কারাগারে পৌঁছানোর আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর কাদের মারা যান।
যেদিন আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়েছিল, সেদিন ফুলের মা লায়লা ইসলামের একটি প্রতিক্রিয়া নিয়েছিলাম। তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এখন মনে হচ্ছে, ফুল নামে আদৌ কেউ জন্মগ্রহণই করেনি। এ নামে কেউ ছিল না, কেউ খুনও হয়নি। বিচারের নামে এত দিন যা হলো, সব নাটক। আপিল আদালত ছিল সেই নাটকের শেষ দৃশ্য।
লায়লা ইসলামের এ কথার আমি কোনো জবাব দিতে পারিনি।
আরও পড়ুন:
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় ভ্রমণের ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদের সতর্ক করেছে সরকার। স্ক্যাম চক্রের প্রতারণা এড়াতে নিয়োগ যাচাই এবং সাইবার নিরাপত্তা মেনে চলার পরামর্শ।
১ ঘণ্টা আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আইওএমের কর্মকর্তারা। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান ফেরত আসা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
৮ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তাঁরা।
৮ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সময়ের দাবি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের চাওয়া দ্রুত নির্বাচন। এ অবস্থায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়
৮ ঘণ্টা আগে