Ajker Patrika

আরও ১০০ পণ্য শুল্কমুক্ত করাসহ যুক্তরাষ্ট্রকে যেসব সুবিধা দিতে চায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৩: ২২
বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার ও পারস্পরিক শুল্ক ভারসাম্য তৈরির লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারকে একটি চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিদ্যমান শুল্কবৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে। চিঠিতে বর্তমান শুল্ক পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যতে শুল্কমুক্ত পণ্যের তালিকা সম্প্রসারণ এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর নানা প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন কর্তৃক পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা (জিএসপি) প্রত্যাহার করে সব বাংলাদেশি রপ্তানিপণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে মাত্র ৬ দশমিক ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করছে।

বিশেষভাবে কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের মতো পণ্যে শুল্কহার যথাক্রমে ০ শতাংশ ও ১ শতাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত পণ্যের তালিকায় রয়েছে ১৯০টি পণ্য। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই তালিকায় নতুন করে আরও ১০০টি পণ্য যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।

২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্টের (টিআইসিএফএ) কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, উভয় দেশই বাণিজ্য ও বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী এবং যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে, তা দূর করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণে একমত।

বাংলাদেশ সরকার শুল্কহার হ্রাস, অশুল্ক বাধা দূরীকরণ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে এরই মধ্যে নানা সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আমদানি নীতিমালার হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সুরক্ষা এবং ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট নিবন্ধনব্যবস্থার উন্নয়ন।

এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানি চুক্তি, মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে দেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, সয়াবিন, গম ও তুলা আমদানিতে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি মার্কিন প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডকে স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করার কাজ চলছে।

চিঠির শেষ অংশে উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পর্ক মজবুত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত