আমরা নির্বাচনের ট্রেন ছেড়ে দিয়েছি: এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ১৮
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪০
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: এএফপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা যেটা বলেছি যে আমাদের একই সঙ্গে দুটো প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। একটি হলো যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলেছি যে নির্বাচনের ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে, এখন এটি যত দ্রুত প্রস্তুত হবে, তত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাবে।’

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যত সংক্ষিপ্ত করা যায়, ততই ভালো। তিনি আরও বলেন, সংস্কারকাজের গতি নির্ধারণ করে দেবে কত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যেতে নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারকাজের গতিই নির্ধারণ করবে, নির্বাচন কত দ্রুত অনুষ্ঠিত হবে।’

শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ক্ষুদ্রঋণের অগ্রদূত ড. ইউনূস বাকুতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে গণতান্ত্রিক ভোটের দিকে এগিয়ে নেবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা যত দ্রুত প্রস্তুত হব, তত দ্রুতই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এরপর নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংবিধান সংশোধনের সম্ভাবনা, সরকার কাঠামো, সংসদ এবং নির্বাচনী বিধিমালা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, তাই আমাদের মেয়াদ যত সংক্ষিপ্ত রাখা যায়, ততই ভালো।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে গত আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে যত তাড়াতাড়ি আমরা প্রস্তুত হব, তত দ্রুত নির্বাচন দিতে পারব। যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করতে পারেন। একটা অন্তর্বর্তী সরকার আছে, তাই সময়কাল যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।’

বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেয়। পরে এই বিক্ষোভ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় এবং জাতীয় আন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশের কঠোর দমন-পীড়নে ফলে সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়। এরপর, হাসিনা ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান।

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর শাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধীদের গণগ্রেপ্তার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অন্যতম। স্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সরকারই স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে, আমরাও তাই।

আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে এটি সমাধান করতে পারব এবং শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারব।’ তবে এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘বিপ্লবের মাত্র তিন মাস পার হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত