বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ৪৫
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০: ৩৫

সবাই বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও ভর্তুকির সুযোগটা অর্থশালী-বড়লোকেরা নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা স্লট ঠিক করব—এখন থেকে যে কত পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে, তাদের জন্য এক দাম আর তার থেকে যারা বেশি ব্যবহার করবে—তাদের জন্য আলাদা দাম। ইতিমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, ওইভাবে কয়েকটা স্লট করে দেব।’ 

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে যোগদান-পরবর্তী বিষয়ে তথ্য জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুৎ শতভাগ দিই। কমিয়ে ২৮ ভাগে নিয়ে আসব! সবাই একটু টের পাক যে বিএনপি সরকারের সময় বিদ্যুতের অবস্থা কী ছিল। আমরা তো ভুলে যাই। বিদ্যুৎমন্ত্রীকে বলেছিলাম, প্রতিদিন যেন কিছুটা লোডশেডিং দেওয়া হয়। তাহলে মানুষের মনে থাকবে লোডশেডিং আছে। পয়সা দিয়ে তেল কিনে জেনারেটর চালাতে হবে। তখন আক্কেলটা ঠিক হবে যে এই অবস্থা তো ছিল। এখন তো আমরা করে দিচ্ছি, ভর্তুকি দিচ্ছি। কেন আমি ভর্তুকি দেব? বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব। ইলেকশনের পরে যদি আসতে পারি আবার করব।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব গুছিয়ে দেওয়ার পরে এখন ইলেকশনের কথা, ভোটের কথা, অর্থনীতির কথা। পাকা পাকা কথা শুনতে হয়। আমি তো শুনতে রাজি না।’ 

দেশের রিজার্ভ ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, এর আগে তো অনেক আঁতেলারাই ক্ষমতায় ছিল, জ্ঞানীগুণীরাই ছিল, তখন রিজার্ভ কত ছিল? এক বিলিয়নও ছিল না। জিরো পয়েন্ট ৭৭ মিলিয়ন ছিল। এখন যদি বলেন রিজার্ভ রক্ষা করতে হবে, তাহলে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিই? পানি দেওয়া, সার দেওয়া বন্ধ করে দিই? সব বন্ধ করে বসিয়ে রাখি। তাহলে আমার রিজার্ভ ভালো থাকবে।’ 

পাল্টা প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিজার্ভ বেশি রাখা আমার বেশি প্রয়োজন নাকি দেশের মানুষের কমফোর্ট। মানুষের ভালো-মন্দ কাজ করা। কোনটা বেশি প্রয়োজন?’ 

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষ করে গত বুধবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছিলেন। 

নিউইয়র্ক সফরে প্রধানমন্ত্রী ১৭-২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দেন। অধিবেশনের ফাঁকে অন্য উচ্চপর্যায়ের ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

শেখ হাসিনা ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে যান। লন্ডনে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। 

এ ছাড়া বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ে গঠিত এপিপিজির সভাপতি এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসাবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপির নেতৃত্বে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) এক প্রতিনিধিদলসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। 

ওয়াশিংটন ডিসিতে শেখ হাসিনা ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত