Ajker Patrika

বার কাউন্সিল সভায় বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালেন বিএনপি-আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বার কাউন্সিল সভায় বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালেন বিএনপি-আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্ধিত সভায় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বার কাউন্সিলের সভাকক্ষে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান।  

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, তাঁদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। দুপুর ১টার দিকে মঞ্চে বসে থাকা বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও এ কে এম বদরুল আনোয়ার দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘আমি সাতবার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। বার কাউন্সিলে প্রায়ই সর্বোচ্চ ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হবে না কেন?’ 

ব্যারিস্টার কাজল বলেন, ‘আমি তিনবারের সম্পাদক। বার কাউন্সিলে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কেন আমাদের বক্তব্য দিতে দেওয়া হলো না? আর আওয়ামী লীগের নয়জন বক্তব্য দিলেন।’ 

বিরতি শেষে শুরুতে বক্তব্য দেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন। তারপর ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের তিনবার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি, দুইবার দায়িত্ব পালন করেছি। চলতি সেশনেও নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু নির্বাচনের ৪৫ দিন পর জোর করে অন্যজনের নাম সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমি এখনো সম্পাদক।’ এ সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা ‘না না, আপনি সম্পাদক নন। মিথ্যাচার করবেন না’ ইত্যাদি বলতে থাকেন। এতে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। 

আজ শনিবার বার কাউন্সিলে বর্ধিত সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। এতে ৬৪ জেলার বারের সভাপতি–সম্পাদক ও তাঁদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ৬৪ জেলার আইনজীবীদের প্রতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বার্তা দেয়, যেকোনো মূল্যে বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। কোনো ঘটনা ঘটলে আইনজীবী–বিচারক কেউ যেন কারও সঙ্গে অসদাচরণ না করে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড ভিজিল্যান্স কমিটিকে তা জানাতে হবে। 

বার কাউন্সিলের কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড ভিজিল্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ রাজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বার্তা হচ্ছে, আদালতকে সম্মান করতে হবে। আমরা এমনটাই আইনজীবীদের বলেছি। আর প্রায় সব আইনজীবীই বলেছেন প্রশিক্ষণের অভাবে বার ও বেঞ্চের দূরত্ব বাড়ছে। তারা আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও তাঁদের সহযোগীদের দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলেন আইনজীবীরা।’

 
এর আগে খুলনায় এক বিচারকের সঙ্গে তিন আইনজীবীর অসদাচরণের ঘটনায় গত বছরের ২৩ নভেম্বর সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সব জেলা আইনজীবী সমিতিকে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সে সময়। ওই ঘটনার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নীলফামারীতে বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই বার কাউন্সিলের বর্ধিত সাধারণ সভা ডাকা হয়। 

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সাধারণ সভায় সারা দেশের বারের নেতারা ছাড়াও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান এবং বার কাউন্সিলের অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।  
 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত