জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন কাজী নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ১৩
Thumbnail image
কাজী নজরুল ইসলাম। ফাইল ছবি

অবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৭২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশে আসার তারিখ থেকে তাঁকে বাংলাদেশের ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে সম্বোধন করে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন পাস করেছিল। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি, অবশেষে সেটি হলো।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ডিসেম্বরে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি ঘোষণা করা হয়েছে এবং এটি সবার অবগতির জন্য প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবির মর্যাদার বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও স্বীকৃত। বাংলাদেশের জনগণ তাঁর ঢাকায় আগমনের তারিখ থেকে জাতীয় কবি ঘোষণা করে সরকারি প্রজ্ঞাপন প্রত্যাশা করে আসছিল। উপদেষ্টা পরিষদ প্রত্যাশা অনুযায়ী এ প্রস্তাব অনুমোদন করে।

কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালের ২৪ মে কলকাতা থেকে সরকারি উদ্যোগে সপরিবার ঢাকায় আনা হয়। তাঁর বসবাসের জন্য ধানমন্ডির ২৮ নম্বর (পুরোনো) সড়কের ৩৩০-বি বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরপর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। একুশে পদক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বেসামরিক সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। পরে তাঁকে ‘জাতীয় কবি’ সম্বোধন করে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন ২০১৮ পাস করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘কাজী নজরুল ইসলাম সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃত হইলেও জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।’

১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অন্যান্য ব্যক্তির সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি-লিট) উপাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) এক সমাবর্তন উৎসবে এই উপাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

অসুস্থতার জন্য কবিকে এই উৎসবে আনা সম্ভব হয়নি। পরে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গভবনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলামকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী নজরুলের উদ্দেশে একটি মানপত্রও পাঠ করেন।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকায় মারা যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাঁর সমাধি রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত