বিদ্যুৎ খাতে অনিয়ম তদন্তে কমিটি ও কোম্পানিগুলোর পুনর্গঠন করবে সরকার

খুলনা প্রতিনিধি
Thumbnail image

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে পুনর্গঠন করতে চাই। বিদ্যুৎ খাতে অনিয়মের কাঠামো ভেঙে দিতে চাই। এ খাতে ঘটা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। মনে রাখতে হবে এটা একটি নতুন বাংলাদেশ। এখানে সবার সমান সুযোগ। সংকট যেমন আছে সমাধানও তেমন আছে।’

আজ শনিবার সকালে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফকালে এ কথা বলেন উপদেষ্টা। পরে উপদেষ্টা পাওয়ার প্ল্যান্টের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। 

প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ১ টাকা ২৫ পয়সা এবং পেট্রল ও অকটেনের দাম ৬ টাকা করে কমেছে, আজ মধ্যরাত (রাত ১২টার পর) থেকে কার্যকর হবে বলে জানান জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। 

এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত নির্মাণাধীন রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প পরিদর্শন পূর্বে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময়ে তিনি জানান, ডিজেলের ১০৬ দশমিক ৭৫ টাকা থেকে ১ দশমিক ২৫ টাকা কমিয়ে ১০৫ দশমিক ২৫ টাকা, অকটেনের দাম ১৩১ টাকা থেকে ৬ টাকা কমিয়ে ১২৫ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৭ টাকা থেকে ৬ টাকা কমিয়ে ১২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

পরে উপদেষ্টা পাওয়ার প্ল্যান্টের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। 

উপদেষ্টা বলেন, এত দিন আমাদের দেশে একটি উন্নয়নের কাহিনি পড়া হচ্ছিল যে, বাংলাদেশে আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বাড়ছে এবং আমরা নিম্নআয়ের দেশ থকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছি। এখন দেখা যাচ্ছে এটা একটা ভ্রান্তি। খুলনায় প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পাওয়ার প্ল্যান্ট হয়েছে, যা জাতীয় জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে। জিডিপি বাড়লেও গ্যাসভিত্তিক এ পাওয়ার প্ল্যান্ট সহসা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা তো অনেক আগে থেকেই জানতাম বাংলাদেশে গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাবে, এখান থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আট হাজার কোটি টাকা খরচ হলো কিন্তু মানুষ এটা থেকে কোনো উপকার পাচ্ছে না। এটাই হলো উন্নয়নের ভ্রান্তি। 

রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। ছবি: পিআইডিউপদেষ্টা আরও বলেন, মানুষের জীবনের কী উন্নতি হয়েছে তা দিয়ে উন্নয়নকে পরিমাপ করতে হবে। খুলনার এই পাওয়ার প্ল্যান্টের নিকটে কেবল ভোলাতে গ্যাস আছে যা অপর্যাপ্ত। এখানে প্রয়োজন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস কিন্তু ভোলাতে অতিরিক্ত আছে কেবল একশত এমএমসিএফ গ্যাস। তিন বছর সময় নিয়ে নতুন পাইপলাইন করে এ গ্যাস খুলনায় আনলেও সেটা পর্যাপ্ত হবে না। তবুও এ পাওয়ার প্ল্যান্টকে কীভাবে আংশিকভাবে সচল করা যায় সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। 

সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো দশমিক  হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো দশমিক  নূরুল আলম, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো দশমিক  রেজাউল করিম, খুলনার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো দশমিক  ইউসুপ আলীসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। 

দুপুরে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জনপ্রতিনিধি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তা, স্থানীয় সুশীল সমাজ, ছাত্র সমন্বয়ক ও প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপদেষ্টা অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ ও অভিযোগসমূহ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন। এ মতবিনিময় সভায় স্বাগত জানান খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো দশমিক  হেলাল মাহমুদ শরীফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত