ড. মঞ্জুরে খোদা
বাংলাদেশে বাম আন্দোলনের বিকাশ ও ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল কিন্তু তাকে কাজে লাগানো যায়নি। এই সংকট নিয়ে অনেক আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সংকট না কমে বরং বেড়েছে। বাম দলগুলোও আরও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রভাব ও আকৃতির দিক থেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও যা আছে তা নিয়ে এভাবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে না রেখে ক্ষমতা দখলের রোডম্যাপ ও কৌশল ভাবতে হবে।
একই আদর্শের কেন এত দল, বিভেদ ও ভিন্নতা
বাংলাদেশে কতগুলো বাম দল আছে তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া মুশকিল। আবার একই নামে একাধিক দল থাকা এবং কে কাকে বাম মনে করে সেটি নিয়েও বিতর্ক ও জটিলতা আছে। একই মার্কসীয় দর্শনের দলগুলোর মধ্যেও আছে ভয়াবহ দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, একই মতাদর্শের কেন এত দল? কেন এক দল নয়? আর দলের ভেতরে যদি উপদল থাকে সেখানে তো শত প্রশ্ন? এইসব বিতর্ক নেতা-কর্মীদের জন্য প্রচণ্ড বিব্রতকর। এতে দলে, মানুষে বিভ্রান্তি ও হতাশা বাড়ে, অনেক ক্ষেত্রে তা তামাশা ও হাস্যরসে পরিণত হয়। লক্ষ করেছি, দেশের প্রধান সমস্যা-সংকটের কথায়-চিন্তায় তাদের তেমন কোনো ভিন্নতা নেই। সমাধানের পথ-উপায় কি খুব বিপরীত? সেটা যদি না হয় তাহলে দ্বন্দ্বটা আসলে কোথায়?
বাম দল অনেক থাকলেও সবার অবস্থা এক নয়। অধিকাংশ দলের বিকাশ-বিস্তার নেই, যুগ যুগ ধরে ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় কোনোভাবে টিকে আছে। কেন এমনটা হচ্ছে? সেটা কি উপযুক্ত কর্মসূচির অভাব, নেতৃত্বের সংকট, সময়কে বুঝতে না পারা, না অন্য কোনো কারণ? নাকি ব্যক্তির স্বার্থ-সুবিধা, নেতৃত্ব-কর্তৃত্বই প্রধান কারণ?
বামরা কি জানে তাদের শক্তি ও সক্ষমতা
বাংলাদেশের সংকট বিষয়ে বামরা অবগত। তারা এও জানে যে কারও একার পক্ষে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তার জন্য বড় সংগঠন ও ঐক্য দরকার। কিন্তু তাদের এই জানার অর্থ কী, যদি না তা চর্চা ও চেষ্টায় থাকে? মোটা দাগে বাংলাদেশে বাম দলগুলোর তিনটি ধারা-প্রবণতা লক্ষণীয়। একটি ধারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে, আরেকটি বিএনপি ধারার সঙ্গে আন্দোলন ও ক্ষমতার অংশীদার হতে আগ্রহী এবং অন্যটি এই দুই ধারার মাঝামাঝি বা কোনোটিতে নেই। বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে-প্রয়োজনে জোট-ঐক্যের চর্চা নতুন নয়, অতীতেও ছিল। নিজস্ব শক্তির ওপর ভরসা করে সেটা না করতে পারলে অন্যের অনুগ্রহের ওপর থাকতে হয় এবং তার পরিণতি সুখকর নয়, তার প্রমাণও অনেক।
বামরা তাদের শক্তি-সক্ষমতা সম্পর্কে কতটা অবগত জানি না, তবে বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে তারা দেশে একটি অঘটন ঘটিয়ে ফেলার মতো অবস্থা রাখে। সেটা করতে পারার কারণ দেশের মাদ্রাসাগুলো প্রায় শতভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণে। ইসলামি দলগুলোর যে জমায়েত ক্ষমতা আছে, বাম দলগুলোর সে অবস্থা আছে কি না সন্দেহ। তবে ইসলামপন্থীদের তুলনায় বামদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান ও প্রভাব অধিক। তারপরও বাংলাদেশে কোনো বাম দলই দাবি করতে পারবে না যে তাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে সংসদে একটি আসন পেতে পারে। এর বাইরে প্রধান দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কথা না হয় বাদই দিলাম, তাহলে বামরা কোন ভাবনায় বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত?
নির্বাচনের দাবি ও বামদের অবস্থা-বাস্তবতা
বাংলাদেশের বামপন্থী দলগুলোর একটি বড় সংকট হচ্ছে নিজেদের নির্ভুল ও বিশুদ্ধ ভাবার প্রবণতা। সে কারণে দলগুলোর মধ্য এক ধরনের দূরত্ব বিদ্যমান। বর্তমান সংকটের সময়ও কি সেই অবস্থা বজায় থাকবে, নাকি নিজেরা অধিক দায়িত্বশীল হয়ে সেই দূরত্ব দূর করবে; সেই প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ?
৩ জানুয়ারি সিপিবির জনসভা থেকে এই মাসের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের পরিষ্কার সময় ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে। ধরে নিলাম সরকার শিগগিরই নির্বাচনের একটি দিনক্ষণ ঘোষণা করল, তাতে সিপিবি বা বামপন্থীদের কী লাভ? দেশে এ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে কি বামদের কোনো অবস্থান ছিল? এর মধ্যে চারটি বাদে বাকি নির্বাচনগুলো ছিল নানা মাত্রায় বিতর্কিত। কিন্তু যে কয়েকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও কি বামদের আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ছিল?
অতীতে দেখা গেছে, নির্বাচন এলে বাম দলগুলো বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। কোন দল জোটে গেলে কী সুবিধা পাবে সেটাই মুখ্য, সেখানে নীতি-আদর্শ সামান্য কাজ করে। কেউ জোট, মহাজোটে, কোনো কোনো বাম নিজেরা জোট করেছে, আবার নিশ্চিত পরাজয় জেনেও নিজেরাও নিজেদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। এমনটাই চলছে যুগ যুগ ধরে। তাতে সাময়িক স্বার্থ-সুবিধা, আত্মতৃপ্তি, রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ছাড়া কোনো লাভ হয়নি। তারপরও কি যে যার আমিত্ব, শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকা নিয়ে থাকবে? সেটা না করে তারা যদি তাদের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে অবিচল থাকত, তাহলে যুগ যুগ ধরে ব্যর্থতার গ্লানি বহন করতে হতো না। অবশ্য তারা নিজেদের কোনোভাবে ব্যর্থ মনে করেন কি না সেটাও প্রশ্ন।
বৃহত্তর ঐক্যের সংকট কোথায়
বামরা জনগণের ঐক্যের কথা বলবে কিন্তু নিজেদের বিভেদ-বিতর্ক বন্ধের কোনো চেষ্টা-উদ্যোগ নেই। তাহলে কোন নৈতিকতায় তারা ঐক্যের কথা বলে? সবাই চায় দেশে একটি বিকল্প রাজনীতি গড়ে উঠুক। জনগণের সেই চাওয়া যুগ যুগ ধরেই ছিল। কতটা দুর্নিবার ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় জুলাই অভ্যুত্থানে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দলমত-নির্বিশেষে লাখো জনতা সেদিন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল। এক অভূতপূর্ণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মানুষ তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছে না। দেশে এখন এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। ইতিমধ্যে আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব-অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দেশে যে অভূতপূর্ণ ঐক্যের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তা হাতছাড়া প্রায়।
পূর্বের দ্বি-দলীয় ধারার স্থানে এখন ত্রি-দলীয় ও বহুদলীয় ধারা তৈরি হয়েছে এবং সবগুলো ডান ও অতি দক্ষিণপন্থী ধারা। এর বাইরে গণমানুষের পক্ষের একটি মধ্যবাম বিকল্প তৈরির ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হলেও শক্তিশালী জোট-সংগঠনের অভাবে তা আবারও হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। মানুষ হতাশার যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই আছে। অথচ এই সুযোগকে কাজে লাগাতে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতসহ সদ্য গজিয়ে ওঠা অভিন্ন চেতনার কিছু দল-সংগঠন তৎপর। অভ্যুত্থানে অংশীদার ছাত্রদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা ক্ষমতা দখলে তৎপর।
বাংলাদেশে বাম আন্দোলনের বিকাশ ও ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল কিন্তু তাকে কাজে লাগানো যায়নি। এই সংকট নিয়ে অনেক আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সংকট না কমে বরং বেড়েছে। বাম দলগুলোও আরও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রভাব ও আকৃতির দিক থেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও যা আছে তা নিয়ে এভাবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে না রেখে ক্ষমতা দখলের রোডম্যাপ ও কৌশল ভাবতে হবে।
একই আদর্শের কেন এত দল, বিভেদ ও ভিন্নতা
বাংলাদেশে কতগুলো বাম দল আছে তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া মুশকিল। আবার একই নামে একাধিক দল থাকা এবং কে কাকে বাম মনে করে সেটি নিয়েও বিতর্ক ও জটিলতা আছে। একই মার্কসীয় দর্শনের দলগুলোর মধ্যেও আছে ভয়াবহ দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, একই মতাদর্শের কেন এত দল? কেন এক দল নয়? আর দলের ভেতরে যদি উপদল থাকে সেখানে তো শত প্রশ্ন? এইসব বিতর্ক নেতা-কর্মীদের জন্য প্রচণ্ড বিব্রতকর। এতে দলে, মানুষে বিভ্রান্তি ও হতাশা বাড়ে, অনেক ক্ষেত্রে তা তামাশা ও হাস্যরসে পরিণত হয়। লক্ষ করেছি, দেশের প্রধান সমস্যা-সংকটের কথায়-চিন্তায় তাদের তেমন কোনো ভিন্নতা নেই। সমাধানের পথ-উপায় কি খুব বিপরীত? সেটা যদি না হয় তাহলে দ্বন্দ্বটা আসলে কোথায়?
বাম দল অনেক থাকলেও সবার অবস্থা এক নয়। অধিকাংশ দলের বিকাশ-বিস্তার নেই, যুগ যুগ ধরে ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় কোনোভাবে টিকে আছে। কেন এমনটা হচ্ছে? সেটা কি উপযুক্ত কর্মসূচির অভাব, নেতৃত্বের সংকট, সময়কে বুঝতে না পারা, না অন্য কোনো কারণ? নাকি ব্যক্তির স্বার্থ-সুবিধা, নেতৃত্ব-কর্তৃত্বই প্রধান কারণ?
বামরা কি জানে তাদের শক্তি ও সক্ষমতা
বাংলাদেশের সংকট বিষয়ে বামরা অবগত। তারা এও জানে যে কারও একার পক্ষে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তার জন্য বড় সংগঠন ও ঐক্য দরকার। কিন্তু তাদের এই জানার অর্থ কী, যদি না তা চর্চা ও চেষ্টায় থাকে? মোটা দাগে বাংলাদেশে বাম দলগুলোর তিনটি ধারা-প্রবণতা লক্ষণীয়। একটি ধারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে, আরেকটি বিএনপি ধারার সঙ্গে আন্দোলন ও ক্ষমতার অংশীদার হতে আগ্রহী এবং অন্যটি এই দুই ধারার মাঝামাঝি বা কোনোটিতে নেই। বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে-প্রয়োজনে জোট-ঐক্যের চর্চা নতুন নয়, অতীতেও ছিল। নিজস্ব শক্তির ওপর ভরসা করে সেটা না করতে পারলে অন্যের অনুগ্রহের ওপর থাকতে হয় এবং তার পরিণতি সুখকর নয়, তার প্রমাণও অনেক।
বামরা তাদের শক্তি-সক্ষমতা সম্পর্কে কতটা অবগত জানি না, তবে বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে তারা দেশে একটি অঘটন ঘটিয়ে ফেলার মতো অবস্থা রাখে। সেটা করতে পারার কারণ দেশের মাদ্রাসাগুলো প্রায় শতভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণে। ইসলামি দলগুলোর যে জমায়েত ক্ষমতা আছে, বাম দলগুলোর সে অবস্থা আছে কি না সন্দেহ। তবে ইসলামপন্থীদের তুলনায় বামদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান ও প্রভাব অধিক। তারপরও বাংলাদেশে কোনো বাম দলই দাবি করতে পারবে না যে তাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে সংসদে একটি আসন পেতে পারে। এর বাইরে প্রধান দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কথা না হয় বাদই দিলাম, তাহলে বামরা কোন ভাবনায় বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত?
নির্বাচনের দাবি ও বামদের অবস্থা-বাস্তবতা
বাংলাদেশের বামপন্থী দলগুলোর একটি বড় সংকট হচ্ছে নিজেদের নির্ভুল ও বিশুদ্ধ ভাবার প্রবণতা। সে কারণে দলগুলোর মধ্য এক ধরনের দূরত্ব বিদ্যমান। বর্তমান সংকটের সময়ও কি সেই অবস্থা বজায় থাকবে, নাকি নিজেরা অধিক দায়িত্বশীল হয়ে সেই দূরত্ব দূর করবে; সেই প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ?
৩ জানুয়ারি সিপিবির জনসভা থেকে এই মাসের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের পরিষ্কার সময় ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে। ধরে নিলাম সরকার শিগগিরই নির্বাচনের একটি দিনক্ষণ ঘোষণা করল, তাতে সিপিবি বা বামপন্থীদের কী লাভ? দেশে এ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে কি বামদের কোনো অবস্থান ছিল? এর মধ্যে চারটি বাদে বাকি নির্বাচনগুলো ছিল নানা মাত্রায় বিতর্কিত। কিন্তু যে কয়েকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও কি বামদের আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ছিল?
অতীতে দেখা গেছে, নির্বাচন এলে বাম দলগুলো বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। কোন দল জোটে গেলে কী সুবিধা পাবে সেটাই মুখ্য, সেখানে নীতি-আদর্শ সামান্য কাজ করে। কেউ জোট, মহাজোটে, কোনো কোনো বাম নিজেরা জোট করেছে, আবার নিশ্চিত পরাজয় জেনেও নিজেরাও নিজেদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। এমনটাই চলছে যুগ যুগ ধরে। তাতে সাময়িক স্বার্থ-সুবিধা, আত্মতৃপ্তি, রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ছাড়া কোনো লাভ হয়নি। তারপরও কি যে যার আমিত্ব, শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকা নিয়ে থাকবে? সেটা না করে তারা যদি তাদের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে অবিচল থাকত, তাহলে যুগ যুগ ধরে ব্যর্থতার গ্লানি বহন করতে হতো না। অবশ্য তারা নিজেদের কোনোভাবে ব্যর্থ মনে করেন কি না সেটাও প্রশ্ন।
বৃহত্তর ঐক্যের সংকট কোথায়
বামরা জনগণের ঐক্যের কথা বলবে কিন্তু নিজেদের বিভেদ-বিতর্ক বন্ধের কোনো চেষ্টা-উদ্যোগ নেই। তাহলে কোন নৈতিকতায় তারা ঐক্যের কথা বলে? সবাই চায় দেশে একটি বিকল্প রাজনীতি গড়ে উঠুক। জনগণের সেই চাওয়া যুগ যুগ ধরেই ছিল। কতটা দুর্নিবার ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় জুলাই অভ্যুত্থানে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দলমত-নির্বিশেষে লাখো জনতা সেদিন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল। এক অভূতপূর্ণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মানুষ তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছে না। দেশে এখন এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। ইতিমধ্যে আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব-অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দেশে যে অভূতপূর্ণ ঐক্যের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তা হাতছাড়া প্রায়।
পূর্বের দ্বি-দলীয় ধারার স্থানে এখন ত্রি-দলীয় ও বহুদলীয় ধারা তৈরি হয়েছে এবং সবগুলো ডান ও অতি দক্ষিণপন্থী ধারা। এর বাইরে গণমানুষের পক্ষের একটি মধ্যবাম বিকল্প তৈরির ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হলেও শক্তিশালী জোট-সংগঠনের অভাবে তা আবারও হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। মানুষ হতাশার যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই আছে। অথচ এই সুযোগকে কাজে লাগাতে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতসহ সদ্য গজিয়ে ওঠা অভিন্ন চেতনার কিছু দল-সংগঠন তৎপর। অভ্যুত্থানে অংশীদার ছাত্রদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা ক্ষমতা দখলে তৎপর।
কয়েক দিন আগে অর্থ আত্মসাতের একটি খবর পাঠ করলাম। অবশ্য তা আমাদের দেশের নয়। দেশের অর্থ আত্মসাতের খবর প্রতিদিন কাগজে ছাপা হয়, পড়ি আর বিস্মিত হই। ক্ষুব্ধ হই। অসহায়ত্ব প্রকাশ করি। এই প্রেক্ষাপটে যখন ভিন্ন দেশের খবর পড়ি, তখনো কিছুটা অবাকই হই।
৫ ঘণ্টা আগেসাবেক জ্যেষ্ঠ নির্বাহী, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা আমেরিকার প্রভাবশালী দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থার বিশাল ঘাটতি সত্ত্বেও অনেকেই ভেবেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফার জয় একটি বিচ্যুতি। তারপর অবশ্য ট্রাম্পের দ্বিতীয় বিজয় বা যাকে ট্রাম্প-২.০ বলা হচ্ছে, সেই নির্বাচন একটি বিষয় নিশ
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ৫ আগস্টের পর ব্যাপকভাবে প্রকাশ্যে আসা শুরু করে। বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা সরকারের ২৬টি ক্যাডারে সবাই একই পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করলেও ধীরে ধীরে ক্যাডারভেদে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে।
৫ ঘণ্টা আগেছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের পর এক অভাবনীয় পরিস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট আর ক্ষমতার দম্ভে অতিষ্ঠ মানুষ চেয়েছিল দেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট বন্ধ হবে। জিনিসপত্রের দাম সহনীয় থাকবে। সবাই খেয়ে-পরে নিরাপদে বসবাস করতে...
১ দিন আগে