স্বপ্না রেজা
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়েই আমাদের দেশের স্বাধীনতা অর্জন। এমন সত্যকে অস্বীকার করবার, মুছে দেওয়ার কোনো রকম দুঃসাহস অন্তত বাংলাদেশে বসবাসকারী বাঙালির থাকার কথা নয়। থাকবে সেটা চিন্তাও করা যায় না। অন্তত যাঁরা বাংলাদেশি ও বাঙালি এবং যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানেন, যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন; যাঁরা এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন নিয়ে গর্ববোধ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে চলেন, শত প্রতিকূলতায়। এটা এখন বেশ পরিষ্কার ও প্রকাশ্য যে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কারও কারও ভিন্ন ধারণা আছে, যারা এমন সত্যের বিপরীতে অবস্থান করে বিরূপ মন্তব্যও প্রকাশ করে এবং এসবে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করছে না।
বলা বাহুল্য যে তারা প্রাদেশিক চেতনার গোষ্ঠী। তথা পাকিস্তানপ্রীতিতে তারা আজও মোহাচ্ছন্ন এক বাক্যে বলা যায়। আজ এদের চিনতে ও বুঝতে কষ্ট হয় না। হঠাৎ করেই তারা তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে হাজির। যদিও অনেকে মনে করে, এটা আসলে দীর্ঘদিনের এক নীলনকশা ও পরিকল্পনা, এ দেশের প্রকৃত স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতেই প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশটাকে পরাধীনতার দিকে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। আর সেই কারণে সম্ভবত এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে। বললেই নয় যে, এই স্বাধীন মাটিতে এমন একটি বিষয় বা কথা কখনো উচ্চারিত হবে, তা যেন কল্পনার অতীত।
যা হোক, যারা একাত্তরের পরে জন্মগ্রহণ করেছে এবং পারিবারিক রাজনৈতিক চেতনা বা শিক্ষায় বেড়ে উঠেছে এবং সেই রাজনৈতিক চেতনার ধারা অনুযায়ী চলতে-ফিরতে অভ্যস্ত হয়েছে; মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। তাদের অনেকের কাছেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। তারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ে সংশয় তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে কারও কারও ধারণা। তাদের অনেকেই মনে করছে যে, একাত্তর সালে মূলত ভারতের বিজয় হয়েছে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশকে আলাদা করা হয়েছে। আর সেই কারণে তখন যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা মূলত সঠিক কাজটিই করেছে। এমন বিরোধিতার প্রয়োজন ছিল বলে এই শ্রেণি মনে করে বিরোধিতাকারীদের বাহবা দিচ্ছে।
বলা যায় তারা স্বল্প জ্ঞানে এক মস্ত বিষয় বিশ্লেষণ করতে তৎপর হয়েছে। যে যেমন পারছে সেইভাবে একাত্তরকে বিশ্লেষণ করছে। এটা বেমানান, মানা যায় না। এটা যে এই দেশ ও জাতির জন্য ভয়ংকর এক পরিণতি টেনে আনছে, তা বুঝতে কিন্তু মেধা ও দূরদর্শিতা লাগে, লাগে প্রকৃত অভিজ্ঞতা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যে বার্তা দিয়েছিল জাতিকে, তাতে সংস্কার বা পরিবর্তনের একটা অঙ্গীকার ছিল। দীর্ঘদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন উচ্চমূল্য, আইনের অপশাসন, অনিয়ম, দুর্নীতি থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় সেই দিন বলা যায় সবাই ছাত্র-জনতাকে সমর্থন দিয়েছিল। জনগণ অতিরিক্ত মাত্রায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল ছাত্র-জনতার অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ড দেখে। তারা সহ্য করতে পারেনি। মূল কথা, এই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিল জাতি। মেধার ভিত্তিতে বিসিএস সরকারি চাকরি পাওয়ার দাবিটা দিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও সেখানেই থেমে যায়নি। উপরন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভুত্থান দিয়ে একটা রাজনৈতিক আন্দোলনের আদলে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যেটা একটা পর্যায়ে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। যদিও সাধারণ মানুষের ধারণা হয়েছিল, আর যাই হোক ছাত্ররা বিগত দিনের অপরাজনীতির অবসান ঘটাবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে সাধারণ মানুষের ধারণা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গায় স্থির থাকেনি। ধারণা বদলেছে এবং আন্দোলনকারী ছাত্ররাই বদলে দিয়েছে।
ছাত্ররা বিগত দিনের রাজনৈতিক দলের মতো রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু করেছে, রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, শোডাউন হচ্ছে শতাধিক গাড়ির বহরে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী যে ছাত্র বলেছিলেন তিনি ধার করে চলেন, তাঁকেই দেখা গেল শতাধিক গাড়িবহরে নিজ এলাকায় যেতে। সেই আন্দোলনকারী ছাত্রের লাখ লাখ টাকা খরচের বিষয়টি সামনে এলে তাঁর জবাব—পরিবারের প্রচুর আছে! ইতিমধ্যে ছাত্ররা রাষ্ট্র শাসনের অভিপ্রায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবার কথা ভেবেছে। ইফতার মাহফিল করছে, যেখানে প্রচুর অর্থ সরবরাহের বিষয়টি বেশ পরিষ্কার। অর্থের উৎস নিয়ে জনমনে প্রশ্ন জাগলেও তাদের তোয়াক্কা নেই। শুরুতে আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, বিসিএসে মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়া। এখন যদিও তারা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার তাগিদে যাওয়া-আসা করে না বলে অনেকেই সেই কথা আফসোস করে উল্লেখ করে থাকে। একজন প্রবীণ ব্যক্তি হতাশার সুরে বলছিলেন, ‘এখন আর সুশাসনের কথা ততটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না, যতটা ভাবি দেশটার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব শেষ অবধি রক্ষা পায় কি না।’
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে বিতর্ক, অপপ্রচার চলছে, তা কোনো ধরনের কল্যাণ বা শুভর ইঙ্গিত দেয় না। যারা একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে আসছে আজ যেন তারাই সক্রিয় বেশি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ে নিজস্ব ধারণা প্রকাশে তৎপর থাকছে। কারও কারও মতে, এ জন্য আওয়ামী সরকার অনেকাংশে দায়ী। তারা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে দলীয়করণ করেছে, এতে জনমনে প্রশান্তি এনে দেয়নি, বরং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগ নিয়েছে স্বাধীনতারবিরোধী শক্তি। অনেকে আবার মনে করে যে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে আঁতাত করছে। এমনকি ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও। যার পরিণাম আজকের এই অবস্থা।
পরিশেষে বলব, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের একটা নির্দিষ্ট ভূখণ্ড দিয়েছে, পতাকা দিয়েছে, সংবিধান দিয়েছে, আমরা পেয়েছি সার্বভৌমত্ব। আমাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য আর ইতিহাস। এসব রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। তরুণ প্রজন্মকে আমরা সঠিকভাবে সঠিক ইতিহাস জানাতে পারিনি। তবে আমার বিশ্বাস, সাধারণ অর্থে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সবাই ঘুরে দাঁড়াবে।
লেখক: স্বপ্না রেজা
কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়েই আমাদের দেশের স্বাধীনতা অর্জন। এমন সত্যকে অস্বীকার করবার, মুছে দেওয়ার কোনো রকম দুঃসাহস অন্তত বাংলাদেশে বসবাসকারী বাঙালির থাকার কথা নয়। থাকবে সেটা চিন্তাও করা যায় না। অন্তত যাঁরা বাংলাদেশি ও বাঙালি এবং যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানেন, যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন; যাঁরা এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন নিয়ে গর্ববোধ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে চলেন, শত প্রতিকূলতায়। এটা এখন বেশ পরিষ্কার ও প্রকাশ্য যে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কারও কারও ভিন্ন ধারণা আছে, যারা এমন সত্যের বিপরীতে অবস্থান করে বিরূপ মন্তব্যও প্রকাশ করে এবং এসবে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করছে না।
বলা বাহুল্য যে তারা প্রাদেশিক চেতনার গোষ্ঠী। তথা পাকিস্তানপ্রীতিতে তারা আজও মোহাচ্ছন্ন এক বাক্যে বলা যায়। আজ এদের চিনতে ও বুঝতে কষ্ট হয় না। হঠাৎ করেই তারা তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে হাজির। যদিও অনেকে মনে করে, এটা আসলে দীর্ঘদিনের এক নীলনকশা ও পরিকল্পনা, এ দেশের প্রকৃত স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতেই প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশটাকে পরাধীনতার দিকে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। আর সেই কারণে সম্ভবত এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে। বললেই নয় যে, এই স্বাধীন মাটিতে এমন একটি বিষয় বা কথা কখনো উচ্চারিত হবে, তা যেন কল্পনার অতীত।
যা হোক, যারা একাত্তরের পরে জন্মগ্রহণ করেছে এবং পারিবারিক রাজনৈতিক চেতনা বা শিক্ষায় বেড়ে উঠেছে এবং সেই রাজনৈতিক চেতনার ধারা অনুযায়ী চলতে-ফিরতে অভ্যস্ত হয়েছে; মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। তাদের অনেকের কাছেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। তারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ে সংশয় তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে কারও কারও ধারণা। তাদের অনেকেই মনে করছে যে, একাত্তর সালে মূলত ভারতের বিজয় হয়েছে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশকে আলাদা করা হয়েছে। আর সেই কারণে তখন যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা মূলত সঠিক কাজটিই করেছে। এমন বিরোধিতার প্রয়োজন ছিল বলে এই শ্রেণি মনে করে বিরোধিতাকারীদের বাহবা দিচ্ছে।
বলা যায় তারা স্বল্প জ্ঞানে এক মস্ত বিষয় বিশ্লেষণ করতে তৎপর হয়েছে। যে যেমন পারছে সেইভাবে একাত্তরকে বিশ্লেষণ করছে। এটা বেমানান, মানা যায় না। এটা যে এই দেশ ও জাতির জন্য ভয়ংকর এক পরিণতি টেনে আনছে, তা বুঝতে কিন্তু মেধা ও দূরদর্শিতা লাগে, লাগে প্রকৃত অভিজ্ঞতা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যে বার্তা দিয়েছিল জাতিকে, তাতে সংস্কার বা পরিবর্তনের একটা অঙ্গীকার ছিল। দীর্ঘদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন উচ্চমূল্য, আইনের অপশাসন, অনিয়ম, দুর্নীতি থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় সেই দিন বলা যায় সবাই ছাত্র-জনতাকে সমর্থন দিয়েছিল। জনগণ অতিরিক্ত মাত্রায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল ছাত্র-জনতার অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ড দেখে। তারা সহ্য করতে পারেনি। মূল কথা, এই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিল জাতি। মেধার ভিত্তিতে বিসিএস সরকারি চাকরি পাওয়ার দাবিটা দিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও সেখানেই থেমে যায়নি। উপরন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভুত্থান দিয়ে একটা রাজনৈতিক আন্দোলনের আদলে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যেটা একটা পর্যায়ে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। যদিও সাধারণ মানুষের ধারণা হয়েছিল, আর যাই হোক ছাত্ররা বিগত দিনের অপরাজনীতির অবসান ঘটাবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে সাধারণ মানুষের ধারণা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গায় স্থির থাকেনি। ধারণা বদলেছে এবং আন্দোলনকারী ছাত্ররাই বদলে দিয়েছে।
ছাত্ররা বিগত দিনের রাজনৈতিক দলের মতো রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু করেছে, রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, শোডাউন হচ্ছে শতাধিক গাড়ির বহরে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী যে ছাত্র বলেছিলেন তিনি ধার করে চলেন, তাঁকেই দেখা গেল শতাধিক গাড়িবহরে নিজ এলাকায় যেতে। সেই আন্দোলনকারী ছাত্রের লাখ লাখ টাকা খরচের বিষয়টি সামনে এলে তাঁর জবাব—পরিবারের প্রচুর আছে! ইতিমধ্যে ছাত্ররা রাষ্ট্র শাসনের অভিপ্রায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবার কথা ভেবেছে। ইফতার মাহফিল করছে, যেখানে প্রচুর অর্থ সরবরাহের বিষয়টি বেশ পরিষ্কার। অর্থের উৎস নিয়ে জনমনে প্রশ্ন জাগলেও তাদের তোয়াক্কা নেই। শুরুতে আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, বিসিএসে মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়া। এখন যদিও তারা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার তাগিদে যাওয়া-আসা করে না বলে অনেকেই সেই কথা আফসোস করে উল্লেখ করে থাকে। একজন প্রবীণ ব্যক্তি হতাশার সুরে বলছিলেন, ‘এখন আর সুশাসনের কথা ততটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না, যতটা ভাবি দেশটার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব শেষ অবধি রক্ষা পায় কি না।’
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে বিতর্ক, অপপ্রচার চলছে, তা কোনো ধরনের কল্যাণ বা শুভর ইঙ্গিত দেয় না। যারা একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে আসছে আজ যেন তারাই সক্রিয় বেশি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ে নিজস্ব ধারণা প্রকাশে তৎপর থাকছে। কারও কারও মতে, এ জন্য আওয়ামী সরকার অনেকাংশে দায়ী। তারা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে দলীয়করণ করেছে, এতে জনমনে প্রশান্তি এনে দেয়নি, বরং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগ নিয়েছে স্বাধীনতারবিরোধী শক্তি। অনেকে আবার মনে করে যে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে আঁতাত করছে। এমনকি ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও। যার পরিণাম আজকের এই অবস্থা।
পরিশেষে বলব, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের একটা নির্দিষ্ট ভূখণ্ড দিয়েছে, পতাকা দিয়েছে, সংবিধান দিয়েছে, আমরা পেয়েছি সার্বভৌমত্ব। আমাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য আর ইতিহাস। এসব রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। তরুণ প্রজন্মকে আমরা সঠিকভাবে সঠিক ইতিহাস জানাতে পারিনি। তবে আমার বিশ্বাস, সাধারণ অর্থে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সবাই ঘুরে দাঁড়াবে।
লেখক: স্বপ্না রেজা
কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
ঢাকার ঈদ উৎসব কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বহু শতাব্দীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক রীতিনীতির এক বর্ণিল প্রতিচ্ছবি। মুঘল আমল থেকে শুরু করে আধুনিক সময় পর্যন্ত এই উৎসবের রূপ ও রীতিতে অনেক পরিবর্তন এলেও এর মূল চেতনা আজও বহমান।
৮ ঘণ্টা আগেই-মেইল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামের যুগেও পাঠক সংবাদপত্রে চিঠি লেখেন—এটাই প্রমাণ করে, মুদ্রিত শব্দের আবেদন এখনো ফুরিয়ে যায়নি। দ্রুত বদলে যাওয়া যোগাযোগের মাধ্যমের ভিড়েও কিছু কথা থাকে, যা কাগজে ছাপা হয়ে আলো ছড়ায়।
২ দিন আগেঅপারেশন সার্চলাইটের নৃশংসতায় তখন আকাশে উড়ছে শকুন। রাজপথে চিৎকার করছে কুকুর। আকাশে ‘কা কা’ করে কর্কশ কণ্ঠে ডেকে কাকেরা বুঝিয়ে দিচ্ছে, সোনার বাংলাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে পাকিস্তানি হানাদারেরা।
২ দিন আগেসংগীত যাঁর ধ্যান, সাহিত্য যাঁর প্রাণ, আর দেশপ্রেম যাঁর জীবনদর্শন—তিনি সন্জীদা খাতুন। তাঁর নাম উচ্চারণ করলেই একধরনের আলো ছড়িয়ে পড়ে, যেটি জাতিসত্তা, চেতনাবোধ আর মননের প্রসারের আলো। তাঁর কণ্ঠে উচ্চারিত সুর, তাঁর জীবনচর্চা, তাঁর মনন ও প্রজ্ঞা—সব মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন এক অনন্য সাংস্কৃতিক চরিত্র।
২ দিন আগে