সন্দেহ নেই, ড. ইউনূস একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ। খুবই সম্মানিত তিনি। কিন্তু সেই সম্মানিত মানুষটি যখন গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসান, তখন সেটা কি আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে বিব্রত করে না? মানুষ এরই মধ্যে এসব প্রশ্ন করতে শুরু করেছে।
মাসুদ কামাল
একটা ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করি।
আমরা অনেক ভাই-বোন ছিলাম, সব মিলিয়ে আটজন। আব্বা সরকারি চাকরি করতেন। তাঁর স্বল্প বেতনে আমাদের চলতে হিমশিম খেতে হতো। আম্মা খুব হিসাব করে সংসার চালাতেন। প্রতিদিনের বাজার করার দায়িত্ব আমাদের ভাইদের ওপর পড়ত। সপ্তাহে দু-তিন দিন আমাকে বাজার করতে হতো। বাজার করে বাসায় ফেরার পর আম্মা হিসাব নিতেন। চুলচেরা হিসাব। বাজারে গেলে আমরা সবাই টুকটাক পয়সা মারতাম। ঠিক মারতাম না, হয়তো চার আনার বাদাম কিনতাম, তারপর সেটা খেতে খেতে বাসায় ফিরতাম। আম্মাকে সেই চার আনার হিসাবও দিতে হতো। আব্বার তখন যে আয় ছিল, সংসার চালাতে গিয়ে প্রতিদিন বাজার থেকে বাদাম-বুট বাবদ চার আনা বাড়তি খরচ আম্মার জন্য খুব স্বস্তিদায়ক ছিল না। তবু সেটা তিনি মেনে নিতেন। অনেক পরে, যখন আমরা একটু বড় হয়েছি, তিনি সেই বাড়তি চার আনা মেনে নেওয়ার কারণটা ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলতেন, ‘আমি যদি তখন সেটা মেনে না নিতাম, তবু তোরা ঠিকই খরচটা করতি, না জানিয়ে করতি। তখন সেটা চুরি হয়ে যেত। আমি তোদের চোর বানাতে চাইনি। আর চুরিতে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে, বড় হয়ে আরও বড় চুরিতেও তোদের হাত কাঁপত না। কাজেই হিসাবটা জরুরি।’
এই যে ঘটনার কথা বললাম, সেটা আজ থেকে ৫০ বছর আগের কথা। হিসাব দেওয়ার সেই শিক্ষা এত বছর পরেও আমার কাছে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হয়। আমি কোথায় কত ব্যয় করছি, যা ব্যয় করছি সেটা কীভাবে আয় করছি—সেসবের হিসাব থাকা উচিত। আর আপনি যদি পাবলিক ফিগার হন, তাহলে সেই হিসাব জনগণের কাছেও দেওয়ার সাহস থাকা উচিত। সরকার, সরকারের কর্মচারী—সবারই হিসাব দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক দল, দলের নেতা-কর্মী; এঁদের দিকে আমরা তাকিয়ে থাকি। তাঁরা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের দায়িত্ব নেন। জীবনযাপনকে সহজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁদের সেই প্রতিশ্রুতি প্রদান কিংবা দায়িত্ব গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা সবই সন্দেহযুক্ত হয়ে যায়, যদি তাঁরা জনগণের কাছে হিসাবটা না দেন। কাজের, সাফল্যের ও ব্যর্থতার হিসাব দিতে হবে জনগণের কাছে। একই সঙ্গে জনগণ কিন্তু এসব দল, নেতা, কর্মচারী সবার নীতি-দুর্নীতির বিষয়েও জানতে চায়। তাই সেই হিসাবও দিতে হয়। গণতান্ত্রিক সমাজে এই হিসাব দেওয়াটা একরকম বাধ্যতামূলক। হিসাবে সন্তুষ্ট না হলে মানুষ তাঁকে ত্যাগ করবে, আর ভোট দেবে না। গত দেড় দশক অবশ্য দেশে এই বাস্তবতা ছিল না। বলতে গেলে ভোটই ছিল না। কাজেই জনগণ কী চায়, কী চায় না, কাকে ভালোবাসে, কাকে ঘৃণা করে, সেসব বোঝারও কোনো উপায় ছিল না। আমরা এমন এক শাসকের অধীনে ছিলাম, যিনি নিজের মতো করে ভোটের নাটক করতেন। যাঁকে চাইতেন তাঁকেই বিজয়ী ঘোষণা করতেন। গণতন্ত্রের বারোটা বাজানোর মাধ্যমে নিজের এবং দলেরও বারোটা বাজিয়ে জনরোষের ভয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি।
এখন আমরা একটা গণতান্ত্রিক সমাজের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। কিন্তু যাঁদের মাধ্যমে গণতন্ত্র আসবে বলে আশা করছি, তাঁরা কি হিসাব দেওয়ার সেই গণতান্ত্রিক আচরণটি করতে পারছেন? গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র-তরুণেরা বেশ দাপটের সঙ্গে বিচরণ করছেন। তাঁরা অনেক কিছু পাল্টে দেবেন বলে অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রত্যাশিত ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে কতটুকু? বরং মর্মান্তিক বাস্তবতা হচ্ছে—সেই তরুণ ছাত্রনেতাদের জীবনযাপনেই যেন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন। তাঁরা দামি দামি গাড়িতে চড়ছেন, সমাবেশ বা ইফতারে বিপুল অর্থ ব্যয় করছেন। কিন্তু এই অর্থ কোথা থেকে আসছে, সে হিসাব আর দিচ্ছেন না।
সম্প্রতি তাঁদের এক নেতা নিজ জেলা শহরে গিয়ে যে ব্যাপক শোডাউন করলেন, তা নিয়ে মিডিয়াতে প্রচুর লেখালেখি হলো। তাঁর নিজ দলেরই সিনিয়র কয়েকজন প্রশ্ন তুললেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। তাঁরা জানতে চাইলেন—কদিন আগেও যাঁর পকেটে কোনো টাকা থাকত না, তিনি কী করে এত ব্যয়ে শোডাউন করেন? এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য চলছে। হয়তো আরও কিছুদিন চলবে। কিন্তু জনগণের হিসাব কি মিলবে?
দেশে বর্তমানে একটা অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে, তার শীর্ষে রয়েছেন ড. ইউনূসের মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বলেছিল—সরকারের সবাইকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে। ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া তাঁর এক ভাষণেও উচ্চারণ করেছিলেন এই কথা। হিসাব দিয়েছেন কেউ? তাঁর উপদেষ্টামণ্ডলীর কেউ দিয়েছেন? একজন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, তিনি পদত্যাগের পর তাঁর সম্পদের একটা হিসাব প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আর কেউ করেননি কেন? হয়তো করেছেন, কিন্তু যদি তাঁরা সে রকম কোনো হিসাব দিয়েও থাকেন, সেটা আমরা জানতে পারছি না কেন? যেকোনো হিসাব দেওয়া সার্থক হবে তখনই, যখন সেটা পাবলিক করা হবে। জনগণ না জানতে পারা পর্যন্ত সেটাকে আসলে কোনো হিসাবই বলা যাবে না। তাহলে পাবলিকলি হিসাব দেওয়া হচ্ছে না কেন?
এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। প্রশ্নটি যিনি করতে পারতেন, সেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কি আদৌ তা করতে চান? আমার মনে হয় চান না। কারণ, চাইলে তো তিনি নিজেই আগে তাঁর সম্পদের হিসাবটি দিতেন। যতদূর জানি তিনি নিজেও তাঁর সম্পদের হিসাব দেননি। কেন দেননি? সে প্রশ্নের জবাবও দেননি। সন্দেহ নেই, ড. ইউনূস একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ। খুবই সম্মানিত তিনি। কিন্তু সেই সম্মানিত মানুষটি যখন গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসান, তখন সেটা কি আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে বিব্রত করে না? মানুষ এরই মধ্যে এসব প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। মানুষ জানতে চাইছে—নিজ সম্পদের হিসাব না দিয়ে তিনি উল্টো কেন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তাঁর ওপর আরোপিত বিভিন্ন অর্থনৈতিক মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করে নিচ্ছেন? হিসাব যখন দেবেনই না, তখন কেনই-বা আগের সরকারগুলোর মতো গতানুগতিক ধারায় হিসাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে গেলেন? সরকারের এসব কথাবার্তা, কথা দিয়ে কথা না রাখা—সবই মানুষকে বিরক্ত করে। সরকার কি সেই বিরক্তিগুলো উপলব্ধি করতে পারে? উপলব্ধি করতে পারা উচিত। কারণ, জনগণের বিরক্তি যে খুবই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে, সেটা বুঝতে বেশি অতীতে যাওয়ার দরকার পড়ে না।
লেখক: মাসুদ কামাল
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
একটা ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করি।
আমরা অনেক ভাই-বোন ছিলাম, সব মিলিয়ে আটজন। আব্বা সরকারি চাকরি করতেন। তাঁর স্বল্প বেতনে আমাদের চলতে হিমশিম খেতে হতো। আম্মা খুব হিসাব করে সংসার চালাতেন। প্রতিদিনের বাজার করার দায়িত্ব আমাদের ভাইদের ওপর পড়ত। সপ্তাহে দু-তিন দিন আমাকে বাজার করতে হতো। বাজার করে বাসায় ফেরার পর আম্মা হিসাব নিতেন। চুলচেরা হিসাব। বাজারে গেলে আমরা সবাই টুকটাক পয়সা মারতাম। ঠিক মারতাম না, হয়তো চার আনার বাদাম কিনতাম, তারপর সেটা খেতে খেতে বাসায় ফিরতাম। আম্মাকে সেই চার আনার হিসাবও দিতে হতো। আব্বার তখন যে আয় ছিল, সংসার চালাতে গিয়ে প্রতিদিন বাজার থেকে বাদাম-বুট বাবদ চার আনা বাড়তি খরচ আম্মার জন্য খুব স্বস্তিদায়ক ছিল না। তবু সেটা তিনি মেনে নিতেন। অনেক পরে, যখন আমরা একটু বড় হয়েছি, তিনি সেই বাড়তি চার আনা মেনে নেওয়ার কারণটা ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলতেন, ‘আমি যদি তখন সেটা মেনে না নিতাম, তবু তোরা ঠিকই খরচটা করতি, না জানিয়ে করতি। তখন সেটা চুরি হয়ে যেত। আমি তোদের চোর বানাতে চাইনি। আর চুরিতে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে, বড় হয়ে আরও বড় চুরিতেও তোদের হাত কাঁপত না। কাজেই হিসাবটা জরুরি।’
এই যে ঘটনার কথা বললাম, সেটা আজ থেকে ৫০ বছর আগের কথা। হিসাব দেওয়ার সেই শিক্ষা এত বছর পরেও আমার কাছে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হয়। আমি কোথায় কত ব্যয় করছি, যা ব্যয় করছি সেটা কীভাবে আয় করছি—সেসবের হিসাব থাকা উচিত। আর আপনি যদি পাবলিক ফিগার হন, তাহলে সেই হিসাব জনগণের কাছেও দেওয়ার সাহস থাকা উচিত। সরকার, সরকারের কর্মচারী—সবারই হিসাব দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক দল, দলের নেতা-কর্মী; এঁদের দিকে আমরা তাকিয়ে থাকি। তাঁরা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের দায়িত্ব নেন। জীবনযাপনকে সহজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁদের সেই প্রতিশ্রুতি প্রদান কিংবা দায়িত্ব গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা সবই সন্দেহযুক্ত হয়ে যায়, যদি তাঁরা জনগণের কাছে হিসাবটা না দেন। কাজের, সাফল্যের ও ব্যর্থতার হিসাব দিতে হবে জনগণের কাছে। একই সঙ্গে জনগণ কিন্তু এসব দল, নেতা, কর্মচারী সবার নীতি-দুর্নীতির বিষয়েও জানতে চায়। তাই সেই হিসাবও দিতে হয়। গণতান্ত্রিক সমাজে এই হিসাব দেওয়াটা একরকম বাধ্যতামূলক। হিসাবে সন্তুষ্ট না হলে মানুষ তাঁকে ত্যাগ করবে, আর ভোট দেবে না। গত দেড় দশক অবশ্য দেশে এই বাস্তবতা ছিল না। বলতে গেলে ভোটই ছিল না। কাজেই জনগণ কী চায়, কী চায় না, কাকে ভালোবাসে, কাকে ঘৃণা করে, সেসব বোঝারও কোনো উপায় ছিল না। আমরা এমন এক শাসকের অধীনে ছিলাম, যিনি নিজের মতো করে ভোটের নাটক করতেন। যাঁকে চাইতেন তাঁকেই বিজয়ী ঘোষণা করতেন। গণতন্ত্রের বারোটা বাজানোর মাধ্যমে নিজের এবং দলেরও বারোটা বাজিয়ে জনরোষের ভয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি।
এখন আমরা একটা গণতান্ত্রিক সমাজের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। কিন্তু যাঁদের মাধ্যমে গণতন্ত্র আসবে বলে আশা করছি, তাঁরা কি হিসাব দেওয়ার সেই গণতান্ত্রিক আচরণটি করতে পারছেন? গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র-তরুণেরা বেশ দাপটের সঙ্গে বিচরণ করছেন। তাঁরা অনেক কিছু পাল্টে দেবেন বলে অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রত্যাশিত ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে কতটুকু? বরং মর্মান্তিক বাস্তবতা হচ্ছে—সেই তরুণ ছাত্রনেতাদের জীবনযাপনেই যেন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন। তাঁরা দামি দামি গাড়িতে চড়ছেন, সমাবেশ বা ইফতারে বিপুল অর্থ ব্যয় করছেন। কিন্তু এই অর্থ কোথা থেকে আসছে, সে হিসাব আর দিচ্ছেন না।
সম্প্রতি তাঁদের এক নেতা নিজ জেলা শহরে গিয়ে যে ব্যাপক শোডাউন করলেন, তা নিয়ে মিডিয়াতে প্রচুর লেখালেখি হলো। তাঁর নিজ দলেরই সিনিয়র কয়েকজন প্রশ্ন তুললেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। তাঁরা জানতে চাইলেন—কদিন আগেও যাঁর পকেটে কোনো টাকা থাকত না, তিনি কী করে এত ব্যয়ে শোডাউন করেন? এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য চলছে। হয়তো আরও কিছুদিন চলবে। কিন্তু জনগণের হিসাব কি মিলবে?
দেশে বর্তমানে একটা অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে, তার শীর্ষে রয়েছেন ড. ইউনূসের মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বলেছিল—সরকারের সবাইকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে। ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া তাঁর এক ভাষণেও উচ্চারণ করেছিলেন এই কথা। হিসাব দিয়েছেন কেউ? তাঁর উপদেষ্টামণ্ডলীর কেউ দিয়েছেন? একজন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, তিনি পদত্যাগের পর তাঁর সম্পদের একটা হিসাব প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আর কেউ করেননি কেন? হয়তো করেছেন, কিন্তু যদি তাঁরা সে রকম কোনো হিসাব দিয়েও থাকেন, সেটা আমরা জানতে পারছি না কেন? যেকোনো হিসাব দেওয়া সার্থক হবে তখনই, যখন সেটা পাবলিক করা হবে। জনগণ না জানতে পারা পর্যন্ত সেটাকে আসলে কোনো হিসাবই বলা যাবে না। তাহলে পাবলিকলি হিসাব দেওয়া হচ্ছে না কেন?
এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। প্রশ্নটি যিনি করতে পারতেন, সেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কি আদৌ তা করতে চান? আমার মনে হয় চান না। কারণ, চাইলে তো তিনি নিজেই আগে তাঁর সম্পদের হিসাবটি দিতেন। যতদূর জানি তিনি নিজেও তাঁর সম্পদের হিসাব দেননি। কেন দেননি? সে প্রশ্নের জবাবও দেননি। সন্দেহ নেই, ড. ইউনূস একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ। খুবই সম্মানিত তিনি। কিন্তু সেই সম্মানিত মানুষটি যখন গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসান, তখন সেটা কি আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে বিব্রত করে না? মানুষ এরই মধ্যে এসব প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। মানুষ জানতে চাইছে—নিজ সম্পদের হিসাব না দিয়ে তিনি উল্টো কেন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তাঁর ওপর আরোপিত বিভিন্ন অর্থনৈতিক মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করে নিচ্ছেন? হিসাব যখন দেবেনই না, তখন কেনই-বা আগের সরকারগুলোর মতো গতানুগতিক ধারায় হিসাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে গেলেন? সরকারের এসব কথাবার্তা, কথা দিয়ে কথা না রাখা—সবই মানুষকে বিরক্ত করে। সরকার কি সেই বিরক্তিগুলো উপলব্ধি করতে পারে? উপলব্ধি করতে পারা উচিত। কারণ, জনগণের বিরক্তি যে খুবই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে, সেটা বুঝতে বেশি অতীতে যাওয়ার দরকার পড়ে না।
লেখক: মাসুদ কামাল
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
চীনের অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা পাওয়া গেলে তিস্তা নদীর ড্রেজিং, নদী ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব। চীনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশের কৃষি, জ্বালানি ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।
৭ ঘণ্টা আগেঢাকার ঈদ উৎসব কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বহু শতাব্দীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক রীতিনীতির এক বর্ণিল প্রতিচ্ছবি। মুঘল আমল থেকে শুরু করে আধুনিক সময় পর্যন্ত এই উৎসবের রূপ ও রীতিতে অনেক পরিবর্তন এলেও এর মূল চেতনা আজও বহমান।
১ দিন আগেই-মেইল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামের যুগেও পাঠক সংবাদপত্রে চিঠি লেখেন—এটাই প্রমাণ করে, মুদ্রিত শব্দের আবেদন এখনো ফুরিয়ে যায়নি। দ্রুত বদলে যাওয়া যোগাযোগের মাধ্যমের ভিড়েও কিছু কথা থাকে, যা কাগজে ছাপা হয়ে আলো ছড়ায়।
৩ দিন আগেঅপারেশন সার্চলাইটের নৃশংসতায় তখন আকাশে উড়ছে শকুন। রাজপথে চিৎকার করছে কুকুর। আকাশে ‘কা কা’ করে কর্কশ কণ্ঠে ডেকে কাকেরা বুঝিয়ে দিচ্ছে, সোনার বাংলাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে পাকিস্তানি হানাদারেরা।
৩ দিন আগে