ইমরান খান
শ্রাবণ মাস। রাত ৩টায় উঠে আউশ ধান সিদ্ধ করলেন আলেয়া। এবার উঠানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সুপারির খোল দিয়ে সরিয়ে ছাই ছিটিয়ে কিছুটা শুকিয়ে হোগলা পাতার চাটাইয়ে সেই ধান শুকাতে দিলেন। মৃদু রোদে সিদ্ধ ধানের গরম না কাটতেই শুরু ঝুম বৃষ্টি। এর মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করে ধান তুলে আনলেন ঘরে। এভাবে অন্তত চার-পাঁচ দিনের পরিশ্রমে ধান শুকানো হলো সারা। স্বামী-সন্তান মিলে এই ধান ভানার পর আবার কুলায় ঝেড়ে কুঁড়া মুক্ত করার পালা। এত কিছুর মাঝে রান্না-সন্তান পালন মিলিয়ে গোসল-খাওয়ার ঠিক নেই।
এই আলেয়া এক গ্রামীণ নারীর প্রতীকী চরিত্র। আজ বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবসে এই চরিত্রের দিকে তাকালে লিকলিকে শরীর নিয়ে সক্ষমতার চেয়ে অনেক ভারী কাজ করা নারীর অবয়বের দেখা মিলবে, যে কাঁখে তুলে নেয় অন্তত ২০ কেজি ওজনের এক ঢাউস কলসি। পরিবারের প্রয়োজনে পুরুষের সঙ্গে মাঠে কাজ করে সমান তালে। সাধ্য থাকলে শহরে পাড়ি জমায় গার্মেন্টসে কাজের উদ্দেশ্যে। পাথর ভাঙে, অন্যের বাসায় কাজ করে। ঘরে নিজে রান্না করলেও যার চিন্তা, সবার খাওয়া শেষে কিছু থাকলে নিজের পাতে তুলবেন। স্বামী সন্তানের অসুস্থতায় রাত জেগে সেবা করতে প্রস্তুত থাকলেও নিজের অসুস্থতা বছরের পর বছর দাঁত চেপে সহ্য করার অসীম ক্ষমতা রাখেন। মাসের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়েও তাঁরা খুব কমই জানেন, ভাবেন। এর ফলও চোকাতে হয় নানা রোগে ভুগে। এত কিছুর মধ্যেও তিনি কাঁথা সেলাই করেন, আঙিনায় সবজি চাষ ও মাড়-কুড়া খাইয়ে দু-চারটি হাঁস-মুরগি পালন করেন কিছুটা বাড়তি আয়ের আশায়। দরকারে ডিম বেচা টাকাটিও তুলে দেন তেল-লবণ-পেঁয়াজ কিংবা সন্তানের কলম কেনার জন্য।
২০১৭ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। এদের ৮৬ শতাংশ গ্রামে বাস করেন। মোট নারীর ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। ২০১০ সালে এ অংশগ্রহণ ছিল ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ। গ্রামীণ নারীরা দিনের মোট সময়ের মধ্যে ৫৩ শতাংশ ব্যয় করেন কৃষি ও ক্ষুদ্রশিল্প খাতে। বিপরীতে পুরুষ ব্যয় করে দিনের ৪৭ শতাংশ সময়। এরপরও নারীদের কৃষি বা সাংসারিক কাজে কোনো স্বীকৃতি নেই। আর পারিশ্রমিকের তো প্রশ্নই ওঠে না। বাইরের কাজে পারিশ্রমিক থাকলেও তা পুরুষের তুলনায় অনেক কম। জাতীয় শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, পুরুষের সমান কাজ করলেও নারী শ্রমিক মজুরি পান কম। উদাহরণস্বরূপ, গ্রামাঞ্চলে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকেরা গড়ে ১৮৪ টাকা পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ১৭০ টাকা। জীবনমানেও এক জোড়া কাপড়-পেটিকোট-ব্লাউজ আর স্যান্ডেলে কাটিয়ে দেয় বছর।
এই নারীদের একটি বড় অংশই অল্প বয়সে বউ হয়ে এসেছে স্বামীর ঘরে। যেখানে শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদ-দেবরদের চেয়ে ‘মানিয়ে নেওয়ার’ দায়িত্বটি তাঁর ওপরেই বেশি থাকে। নতুন বাড়িতে সবার মন জুগিয়ে চলতে হয় তাঁকে। এর নড়চড় হলেই নির্যাতনের খড়্গ। এই নির্যাতনও আবার তাঁকে মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। বাবার বাড়ি, আর শ্বশুর বাড়ির দোলাচলে যার নিজের একটি বাড়ি, আয় না থাকায় একে নিয়তি হিসেবেই মেনে নেয়। কিছুটা প্রতিবাদী হলেই ওঠে ‘বেয়াদব বউ’ তকমা। দিন শেষে কম গ্রামীণ নারীই পায় স্বামীর সঙ্গে মন খুলে দুকথা বলার ফুসরত। এর বাইরে কারণে-অকারণে, সময়ে-অসময়ে স্ত্রীকে মারধর করা তো বহু নারীর নিত্যদিনের রুটিন। সন্তানের সামনে স্বামীর মারধরের শিকার হওয়ার মতো ঘটনাও অহরহ। এসব ঘটনা শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি এক বড় মানসিক নির্যাতনও।
বাংলাদেশে বেশির ভাগ পরিবারই পিতৃপ্রধান। নারীদের দিক থেকে দেখলে স্বামীরা পরিবারের কর্তা। পরিবারে এত পরিশ্রম-ত্যাগের পরও পারিবারিক সিদ্ধান্তে নারীর হস্তক্ষেপের সুযোগ খুব কম পরিবারেই হয়। সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। সন্তান ধারণের পর বেশির ভাগ নারী বাবার বাড়িতে চলে যান। মূলত কাজ থেকে মুক্তি, পুষ্টিকর খাদ্য, নিরাপদ প্রসবের আশায় এই স্থানান্তর। এ থেকে অনেকটাই পরিষ্কার যে, নারী নিজে কিংবা তার বাবা-মা পুরোপুরি এই ভরসা পায় না যে, এই বিশেষ সময়ে স্বামীর বাড়িতে ভালো থাকতে পারবে। চূড়ান্ত ধাপে মেয়ে সন্তান জন্ম দিলে শ্বশুর বাড়ি থেকে কথা শোনা অবধারিত। কন্যা সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে এই প্রচলন কিছুটা কমেছে বলা যায়। তবে ছেলে সন্তান হলে শ্বশুরবাড়িতে নারীর অবস্থান শক্ত হওয়ার ধারণা এখনো এক চরম বাস্তবতা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৫০ শতাংশই জীবনে কখনো না কখনো সঙ্গীর হাতে শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নারী নির্যাতনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই নির্যাতনের কথা বাবা-মায়ের সঙ্গে বলতে গেলেও শুনতে হয়ে ‘মানিয়ে চলো’ বুলি। অমানুষিক নির্যাতনের মধ্যেও বিচ্ছেদের কথা ভাবতে পারে খুব কম নারীই। একপর্যায়ে ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ টার্মের সঙ্গে পরিচিত না থাকা এই নারীদের অনেকেই বেছে নেয় আত্মহননের পথ; যা কোনো সমাধান নয়। এর প্রমাণ উঠে এসেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণায়ও। সংস্থাটির জরিপ বলছে—২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের আত্মহত্যার ৮৬ শতাংশ ঘটেছে পারিবারিক সহিংসতার কারণে।
গ্রামীণ নারীদের স্বার্থে কিছু সংস্থা বিশ্বব্যাপী নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সত্যিকারের গ্রামীণ নারীরা খুব কমই এসব সুবিধা পান। বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীরা প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, নিরাপত্তা সংকট, মজুরিসহ নানা বৈষম্যের শিকার হন। কৃষি ও গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি না থাকায় পরিবারেও অবস্থান সৃষ্টি হয় না। সারা দিন কাজ করলেও বাইরে থেকে আসা স্বামীর সেবা একরকম বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়। অল্প কিছু টাকার প্রয়োজন হলেও স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
সব মিলিয়ে দেশে নারীমুক্তি-ক্ষমতায়নের বুলি গ্রামীণ নারীর প্রেক্ষাপটে অনেকটাই মেলে না। এ গ্রামীণ নারীদের মুক্তির উদ্দেশ্যে কবে যে কোন বেগম রোকেয়া এসে সবাইকে জেগে ওঠার ডাক দেবেন, তা এখনো কেউ জানে না। তবে এক রাঙা ভোরের অপেক্ষায় আছি আমরা সবাই।
শ্রাবণ মাস। রাত ৩টায় উঠে আউশ ধান সিদ্ধ করলেন আলেয়া। এবার উঠানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সুপারির খোল দিয়ে সরিয়ে ছাই ছিটিয়ে কিছুটা শুকিয়ে হোগলা পাতার চাটাইয়ে সেই ধান শুকাতে দিলেন। মৃদু রোদে সিদ্ধ ধানের গরম না কাটতেই শুরু ঝুম বৃষ্টি। এর মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করে ধান তুলে আনলেন ঘরে। এভাবে অন্তত চার-পাঁচ দিনের পরিশ্রমে ধান শুকানো হলো সারা। স্বামী-সন্তান মিলে এই ধান ভানার পর আবার কুলায় ঝেড়ে কুঁড়া মুক্ত করার পালা। এত কিছুর মাঝে রান্না-সন্তান পালন মিলিয়ে গোসল-খাওয়ার ঠিক নেই।
এই আলেয়া এক গ্রামীণ নারীর প্রতীকী চরিত্র। আজ বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবসে এই চরিত্রের দিকে তাকালে লিকলিকে শরীর নিয়ে সক্ষমতার চেয়ে অনেক ভারী কাজ করা নারীর অবয়বের দেখা মিলবে, যে কাঁখে তুলে নেয় অন্তত ২০ কেজি ওজনের এক ঢাউস কলসি। পরিবারের প্রয়োজনে পুরুষের সঙ্গে মাঠে কাজ করে সমান তালে। সাধ্য থাকলে শহরে পাড়ি জমায় গার্মেন্টসে কাজের উদ্দেশ্যে। পাথর ভাঙে, অন্যের বাসায় কাজ করে। ঘরে নিজে রান্না করলেও যার চিন্তা, সবার খাওয়া শেষে কিছু থাকলে নিজের পাতে তুলবেন। স্বামী সন্তানের অসুস্থতায় রাত জেগে সেবা করতে প্রস্তুত থাকলেও নিজের অসুস্থতা বছরের পর বছর দাঁত চেপে সহ্য করার অসীম ক্ষমতা রাখেন। মাসের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়েও তাঁরা খুব কমই জানেন, ভাবেন। এর ফলও চোকাতে হয় নানা রোগে ভুগে। এত কিছুর মধ্যেও তিনি কাঁথা সেলাই করেন, আঙিনায় সবজি চাষ ও মাড়-কুড়া খাইয়ে দু-চারটি হাঁস-মুরগি পালন করেন কিছুটা বাড়তি আয়ের আশায়। দরকারে ডিম বেচা টাকাটিও তুলে দেন তেল-লবণ-পেঁয়াজ কিংবা সন্তানের কলম কেনার জন্য।
২০১৭ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। এদের ৮৬ শতাংশ গ্রামে বাস করেন। মোট নারীর ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। ২০১০ সালে এ অংশগ্রহণ ছিল ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ। গ্রামীণ নারীরা দিনের মোট সময়ের মধ্যে ৫৩ শতাংশ ব্যয় করেন কৃষি ও ক্ষুদ্রশিল্প খাতে। বিপরীতে পুরুষ ব্যয় করে দিনের ৪৭ শতাংশ সময়। এরপরও নারীদের কৃষি বা সাংসারিক কাজে কোনো স্বীকৃতি নেই। আর পারিশ্রমিকের তো প্রশ্নই ওঠে না। বাইরের কাজে পারিশ্রমিক থাকলেও তা পুরুষের তুলনায় অনেক কম। জাতীয় শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, পুরুষের সমান কাজ করলেও নারী শ্রমিক মজুরি পান কম। উদাহরণস্বরূপ, গ্রামাঞ্চলে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকেরা গড়ে ১৮৪ টাকা পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ১৭০ টাকা। জীবনমানেও এক জোড়া কাপড়-পেটিকোট-ব্লাউজ আর স্যান্ডেলে কাটিয়ে দেয় বছর।
এই নারীদের একটি বড় অংশই অল্প বয়সে বউ হয়ে এসেছে স্বামীর ঘরে। যেখানে শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদ-দেবরদের চেয়ে ‘মানিয়ে নেওয়ার’ দায়িত্বটি তাঁর ওপরেই বেশি থাকে। নতুন বাড়িতে সবার মন জুগিয়ে চলতে হয় তাঁকে। এর নড়চড় হলেই নির্যাতনের খড়্গ। এই নির্যাতনও আবার তাঁকে মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। বাবার বাড়ি, আর শ্বশুর বাড়ির দোলাচলে যার নিজের একটি বাড়ি, আয় না থাকায় একে নিয়তি হিসেবেই মেনে নেয়। কিছুটা প্রতিবাদী হলেই ওঠে ‘বেয়াদব বউ’ তকমা। দিন শেষে কম গ্রামীণ নারীই পায় স্বামীর সঙ্গে মন খুলে দুকথা বলার ফুসরত। এর বাইরে কারণে-অকারণে, সময়ে-অসময়ে স্ত্রীকে মারধর করা তো বহু নারীর নিত্যদিনের রুটিন। সন্তানের সামনে স্বামীর মারধরের শিকার হওয়ার মতো ঘটনাও অহরহ। এসব ঘটনা শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি এক বড় মানসিক নির্যাতনও।
বাংলাদেশে বেশির ভাগ পরিবারই পিতৃপ্রধান। নারীদের দিক থেকে দেখলে স্বামীরা পরিবারের কর্তা। পরিবারে এত পরিশ্রম-ত্যাগের পরও পারিবারিক সিদ্ধান্তে নারীর হস্তক্ষেপের সুযোগ খুব কম পরিবারেই হয়। সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। সন্তান ধারণের পর বেশির ভাগ নারী বাবার বাড়িতে চলে যান। মূলত কাজ থেকে মুক্তি, পুষ্টিকর খাদ্য, নিরাপদ প্রসবের আশায় এই স্থানান্তর। এ থেকে অনেকটাই পরিষ্কার যে, নারী নিজে কিংবা তার বাবা-মা পুরোপুরি এই ভরসা পায় না যে, এই বিশেষ সময়ে স্বামীর বাড়িতে ভালো থাকতে পারবে। চূড়ান্ত ধাপে মেয়ে সন্তান জন্ম দিলে শ্বশুর বাড়ি থেকে কথা শোনা অবধারিত। কন্যা সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে এই প্রচলন কিছুটা কমেছে বলা যায়। তবে ছেলে সন্তান হলে শ্বশুরবাড়িতে নারীর অবস্থান শক্ত হওয়ার ধারণা এখনো এক চরম বাস্তবতা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৫০ শতাংশই জীবনে কখনো না কখনো সঙ্গীর হাতে শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নারী নির্যাতনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই নির্যাতনের কথা বাবা-মায়ের সঙ্গে বলতে গেলেও শুনতে হয়ে ‘মানিয়ে চলো’ বুলি। অমানুষিক নির্যাতনের মধ্যেও বিচ্ছেদের কথা ভাবতে পারে খুব কম নারীই। একপর্যায়ে ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ টার্মের সঙ্গে পরিচিত না থাকা এই নারীদের অনেকেই বেছে নেয় আত্মহননের পথ; যা কোনো সমাধান নয়। এর প্রমাণ উঠে এসেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণায়ও। সংস্থাটির জরিপ বলছে—২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের আত্মহত্যার ৮৬ শতাংশ ঘটেছে পারিবারিক সহিংসতার কারণে।
গ্রামীণ নারীদের স্বার্থে কিছু সংস্থা বিশ্বব্যাপী নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সত্যিকারের গ্রামীণ নারীরা খুব কমই এসব সুবিধা পান। বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীরা প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, নিরাপত্তা সংকট, মজুরিসহ নানা বৈষম্যের শিকার হন। কৃষি ও গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি না থাকায় পরিবারেও অবস্থান সৃষ্টি হয় না। সারা দিন কাজ করলেও বাইরে থেকে আসা স্বামীর সেবা একরকম বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়। অল্প কিছু টাকার প্রয়োজন হলেও স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
সব মিলিয়ে দেশে নারীমুক্তি-ক্ষমতায়নের বুলি গ্রামীণ নারীর প্রেক্ষাপটে অনেকটাই মেলে না। এ গ্রামীণ নারীদের মুক্তির উদ্দেশ্যে কবে যে কোন বেগম রোকেয়া এসে সবাইকে জেগে ওঠার ডাক দেবেন, তা এখনো কেউ জানে না। তবে এক রাঙা ভোরের অপেক্ষায় আছি আমরা সবাই।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে নীতিনির্ধারণী একটি বিষয় অগ্রাধিকার বিবেচনার জন্য অপেক্ষমাণ আছে, আর তা হলো, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তন করা, নাকি যথাশিগগির নির্বাচন আয়োজন করা? অনেক ধরনের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তনের জন্য জাতীয় সংসদের বিকল্প কিছু আছে বলে মনে হয় না।
১৩ ঘণ্টা আগেকিছু কিছু বিতর্ক তৈরি করা হয় সমসাময়িক বিষয় থেকে দৃষ্টি দূরে সরিয়ে রাখার জন্য। পুরো পাকিস্তান আমলেই রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে বিতর্ক জারি রাখা হয়েছিল। আমলাতন্ত্র আর সামরিক আমলাতন্ত্র মিলে পাকিস্তান নামক দেশটায় যে স্বৈরশাসন কায়েম করে রেখেছিল, সেদিকে যেন সচেতন মানুষের চোখ না যায়, সে অভিসন্ধি থেকেই রবীন্দ্রনাথ
১৩ ঘণ্টা আগেএকটি কলা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। একটি সাধারণ কলা, যা নিলামে বিক্রি হলো ৭৪ কোটি টাকায়। এটি শিল্প, না কৌতুক, না সামাজিক শ্লেষ—নাকি তিনটির মিশেল? ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটালানের এই ‘কমেডিয়ান’ আমাদের শিল্পের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আর বাজারজাত সৃজনশীলতার প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
১৩ ঘণ্টা আগে‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ঐক্য ফোরামের নেতা ছিলেন। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বই লিখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে...
২ দিন আগে