সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
অসুখের তৎপরতার কাহিনি তো মহাভারতসমান, বলে শেষ করার নয়। উনপঞ্চাশ বছর পার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না। হবে কী করে? যুদ্ধের সময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার, বাড়তে বাড়তে সেটা এখন ২ লাখ ছাড়িয়েছে।
আমাদের নিজেদের দেশের খবর কী? এখানেও বহু ঘটনা ঘটছে, চাঞ্চল্যকর ঘটনাও। কয়েকটির দিকে তাকানো যেতে পারে। করোনায় ভুগে অনেক মানুষ অকালে মারা গেছে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি মানুষকে কিন্তু আকস্মিকভাবে ও অকালে চলে যেতে হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিনের খবরই ধরা যাক।
সেদিন করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের, সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জনের। করোনায় মৃত্যু তা-ও কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়ে থাকে, সড়কে মৃত্যুকে মনে করা হয় নিতান্ত স্বাভাবিক। সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রায় প্রতিদিনই তাঁর অদৃশ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উদ্দেশে একটি করে সুতীক্ষ্ণ বাণ নিক্ষেপ করেন, কিন্তু তাঁর মন্ত্রণালয়ের আসল যে প্রতিপক্ষ, সড়ক অব্যবস্থাপনা, সে বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেন না। চলচ্চিত্রাভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে আন্দোলন করছেন, কাজটির সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রীকে হারানোর বেদনা জড়িত রয়েছে; তাঁকে একজন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিদিনই যিনি বিরোধী দলের লোকদের হুঁশিয়ার করে দিতেন, তিনি সুবিধামতো আর কাউকে না পেয়েই ইলিয়াস কাঞ্চনকে উন্মাদ বলে অভিহিত করেছেন। বোঝা যাচ্ছে সড়কে যাত্রীদের কপালের দুর্ভোগ কমার আপাতত কোনো কারণ নেই। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে, সড়ক নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
আর কেবল সড়কে বের হলেই যে নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে হবে, তা-ও নয়। ঘরে বসে থেকেও প্রাণহানি ঘটানো সম্ভব, উন্মত্ত চালকেরা ইদানীং চলন্ত বাস-ট্রাক নিয়ে ঘরের ভেতরেও হানা দিচ্ছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, যিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও, তিনি নিজেকেও অবশ্য আক্রমণের বাইরে রাখতে পারছেন না। না, বিরোধী দলের কাছ থেকে নয়; বিরোধী দলের কথাবার্তা তো মশার কামড়, বিরক্তিকর, তবে উপেক্ষণীয়; আক্রমণটা এসেছে তাঁর কনিষ্ঠ সহোদর ভাইয়ের কাছ থেকেই, যিনি আওয়ামী লীগেরই লোক এবং সামান্য কেউ নন; স্থানীয় পৌরসভার মেয়র। কনিষ্ঠ ভ্রাতা বলছেন সত্যের পক্ষে অকুতোভয় অবস্থান নিয়ে দলীয় কিছু লোকের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। তাঁর অগ্রজ যেহেতু দলের সাধারণ সম্পাদক, তাই তাঁর বক্তব্য সবিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। তাঁর স্বর একটু চড়াই। যেমন সংবাদ সম্মেলনে তাঁর উক্তি: ‘আমার মুখ বন্ধ করতে ওবায়দুল কাদের (অর্থাৎ তাঁর অগ্রজ) ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করছে।’ এটাকে গৃহবিবাদ বলা যাবে কি না, আমরা নিশ্চিত নই। তবে দলের ভেতর ‘বিদ্রোহী’রা যে আত্মপ্রকাশ করেছে, তা বোঝা যায় পৌর নির্বাচনের অবস্থার দিকে তাকালেই। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা (নীরবে এবং প্রকাশ্যেও) চলেছে দলের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী, এই দুইয়ের মধ্যেই; সংঘর্ষ ও প্রাণনাশের ঘটনাও ঘটেছে ওই কারণেই। দলীয় কর্তৃত্বকে যাতে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত প্রসারিত করা যায় সেই অভিপ্রায়ে দলের লোকেরা সব নির্বাচনেই দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়বেন—ই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন যখন দেখা যাচ্ছে জেতার ব্যাপারে যেহেতু দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, বিরোধী দলের প্রার্থীরা কার্যত অনুপস্থিত, বিদ্রোহীরাও দলেরই লোক, নির্বাচিত হলে তাঁরাও দলের পক্ষপুটেই প্রত্যাবর্তন করবেন, তাই এই প্রার্থীটি মনোনয়ন পেয়েছেন, ওই প্রার্থীটি পাননি—এমন ছাপটাপ ব্যবহার করার আবশ্যকতা নেই, যিনি জিতবেন, তিনিই সরকারি দলে শামিল হবেন, এই বৈজ্ঞানিক নিয়মকে নিরুপদ্রবে কাজ করতে দেওয়াই সংগত। তবে গৃহবিবাদটা থাকবে, যাঁরা দলের লোক বলে দাবিদার, তাঁরা বঞ্চিত হলে সেই বঞ্চনার উত্তাপ কোনো না কোনোভাবে প্রকাশ পাবে।
বিদ্রোহীদের বহিষ্কারও করা যাবে না, কারণ একে তো তাদের সংখ্যা অনেক, উপরন্তু দলের প্রতি তাঁদের আনুগত্য ইস্পাতের মতো কঠিন-পরীক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। বহিষ্কারে দলের শক্তি কমবে।
এসবের চেয়েও অবশ্য অনেক বড় সমস্যা রয়েছে সমাজে। করোনার প্রকোপে অর্থনৈতিক মেরুকরণ প্রক্রিয়াটি আরও নির্মম হয়েছে। নিম্নমধ্যবিত্ত গরিব হয়েছে, গরিব মানুষ একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
মা-বাবা বিশেষ সংকটে পড়েছেন তাঁদের সন্তানদের নিয়ে। পুরো দেড়টা বছর ওই সন্তানদের জীবন থেকে অপহৃত হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ। ছেলেমেয়েদের ভেতর অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে।
কিশোর গ্যাং তৈরির প্রক্রিয়া বেগবান ও বিস্তৃত হয়ে উঠেছে। মেয়েদের নিয়ে বিপদ আরও বেশি। তাদের ওপর লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয়। সমবয়সী পুরুষদের তো বটেই, অন্য বয়সীদেরও। ধর্ষণ, মিথ্যা-প্রতিশ্রুতি, প্রতারণা, সবকিছুই আগের চেয়ে অধিক মাত্রাতেই চলছে। ফলে বাল্যবিবাহের হার বেড়েছে, তবে সেটা যে কী পরিমাণে, আমরা জানি না।
আর কেবল যে নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়েই সমস্যা তা তো নয়, অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলেমেয়েরাও ভালো নেই। তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এরা কিশোর গ্যাং করে না, অন্যদের ওপর হামলা যে চালাবে এমন নয়; যা করার নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। তবে মারাত্মক সব অপরাধ এরাও করে থাকে। হতাশা, সৃষ্টিশীল কাজের অভাব, ভালো দৃষ্টান্তের অনুপস্থিতি, সুস্থ বিনোদনের স্বল্পতা, ভোগবাদিতার ব্যাপক বিস্তার, এদের আত্মপীড়নের, এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত পারস্পরিক পীড়নেরও, অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। দুটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়ার উপলক্ষ হয়েছে।
দুটিই মৃত্যুর। দুটিতেই মামলা হয়েছে ধর্ষণ ও খুনের। প্রথমটি অল্প বয়স্ক এক বালিকা ও এক কিশোরকে ঘিরে। বালিকাটি মারা গেছে, কিশোরটি এখন জেলে। মেয়েটির মা-বাবার অভিযোগ, ছেলেটি তাদের নাবালিকা সন্তানকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করেছে। তাঁদের ধারণা, একজন নয়, সঙ্গে আরও তিনজন কিশোর জড়িত ছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি বিষাক্ত মদ্যপানের। পাঁচজন, একটি মেয়ে ও চারটি ছেলে, মিলেমিশে এক রেস্টুরেন্টে বসে মদ্যপান করেছে। দেশি মদ, ভেজাল ছিল, তাতে বিষক্রিয়া হয়েছে। জানা যায়, এমন কাজ তারা প্রায়ই করে থাকে। তবে ওই দিন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এরা সবাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। টাকাপয়সার অভাব নেই। মেয়েটির সঙ্গে ছেলেদের একজনের ‘প্রেমে’র সম্পর্ক। মদ্যপানের আসর ভেঙে যাওয়ার পর মেয়েটি অসুস্থ বোধ করলে তার প্রেমিক তাকে এক বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেটি ও মেয়েটি একত্রে রাত্রিযাপন করে। সকালে মেয়েটির অসুখ বাড়ে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানে সে মারা যায়। তাদের সঙ্গী চারটি ছেলের মধ্যে একজনও মারা গেছে, ওই ভেজাল মদ অতিরিক্ত পান করার দরুন। মা-বাবা মেয়েটির কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেছেন।
প্রতিক্রিয়ায় আমরা নানা কথা বলছি ও শুনছি। বলাবলি চলছে যে এসব ঘটনার জন্য মা-বাবাই দায়ী। তাঁরা খেয়াল রাখেন না ছেলেমেয়েরা কী করছে; অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের নিজেদের মধ্যেও প্রীতির সম্পর্ক নেই; ছেলেমেয়েরা প্রাচুর্যের মধ্যে বড় হয়, তাদের বাসায় লোকজন তেমন থাকে না, মা-বাবা বাইরে চলে যান, ছেলেমেয়েরা খালি বাসায় যা ইচ্ছা তা-ই করে। সবই সত্য। এসব আমরা বলছি, বলব, বলতেই থাকব। কিন্তু নির্মম সত্য তো এটাও যে মা-বাবা নিজেরাও বিদ্যমান ব্যবস্থারই অসহায় শিকার। তাঁরা ইচ্ছা করে যে ওসব বিচ্যুতি ঘটান তা নয়, ছেলেমেয়েদের মঙ্গল তাঁরা নিশ্চয়ই চান।
কিন্তু পারেন না। সমাজ অসুস্থ। জীবনানন্দ দাশ যে গভীর অসুখের পীড়া দেখে কাতর হয়েছিলেন, বছরে বছরে সেটা বেড়েছে এবং এখন সুস্থ থাকাটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। একাত্তরে যে কিশোর যুদ্ধ করেছে আজ সে আত্মপীড়ন করে। একাত্তরের শত্রু চিহ্নিত ছিল, বাইরে থেকে তারা এসেছে, আমরা তাদের চিনতে পারতাম; শত্রু এখন দেশের ভেতরেই। এই শত্রুটিকে অসুখ বলাই সংগত এবং অসুখটির নাম হলো পুঁজিবাদ। পাকিস্তানি হানাদারদের আমরা তাড়াতে পেরেছি, কিন্তু যে অসুখের তাড়নায় অস্থির হয়ে ওই হানাদারেরা আমাদের ওপর হামলা করেছিল সেটা রয়ে গেছে; কেবল রয়েই যায়নি, তার জন্য বিকাশের পথটি প্রশস্ত হয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশে সত্যিকার মুক্তি যদি কারও ঘটে থাকে, তবে সেটা ওই পুঁজিবাদের। পুঁজিবাদের ওই মুক্তিই আমাদের বন্দী করে রেখেছে এবং নানাভাবে ও নানা দিক দিয়ে উৎপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। ওই অসুখের চিকিৎসা একটাই; তাকে বিতাড়ন করা।
অসুখের তৎপরতার কাহিনি তো মহাভারতসমান, বলে শেষ করার নয়। উনপঞ্চাশ বছর পার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না। হবে কী করে? যুদ্ধের সময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার, বাড়তে বাড়তে সেটা এখন ২ লাখ ছাড়িয়েছে। বাকিরা কোথা থেকে এল? কোন লোভে? আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন ছিল খাঁটি রাজাকারদের নির্ভেজাল তালিকা তৈরি করা। মধুলোভী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা যে কত, তা নিশ্চিত জানা যাবে না। তাঁদের মধ্যে তো কয়েকজন সচিবও ছিলেন, শনাক্ত হয়েছেন। এই তো সেদিন এক দৈনিক পত্রিকায় পড়লাম একটি এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরের নামও স্থান পেয়েছে।
আর গৃহবিবাদ? কতভাবে যে তার প্রকাশ! মেহেরপুরে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি, বয়স তাঁর আশি, নাম মুসা করিম, নিজ গৃহ থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানিয়েছেন আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে। কারণ, তাঁর কোনো আশ্রয় নেই। বিষয়সম্পত্তি যা ছিল উত্তরাধিকারীদের দিয়ে দিয়েছেন। বিলি-বণ্টনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় পরিবারের এক পক্ষ তাঁকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এটা সেই মেহেরপুরের ঘটনা, যার আমবাগানে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে, বাংলাদেশকে মুক্ত করবে বলে। কিছুদিন আগে এক খবরে পড়েছিলাম, বৃদ্ধ মা বিতাড়িত হয়েছেন গৃহ থেকে। তিনিও বিষয়-সম্পত্তি যা ছিল সন্তানদের দিয়ে নিঃস্ব হয়েছিলেন, সমাজ পিতৃতান্ত্রিক বটে; কিন্তু পিতা-মাতা সবাই সমান বোঝা, সম্পত্তি যদি না থাকে। ভরসা রাখি গৃহবিবাদগুলোর মীমাংসা ঘটবে গৃহযুদ্ধের ভেতর দিয়ে, যে যুদ্ধে সমাজ বদলাবে।
অসুখের তৎপরতার কাহিনি তো মহাভারতসমান, বলে শেষ করার নয়। উনপঞ্চাশ বছর পার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না। হবে কী করে? যুদ্ধের সময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার, বাড়তে বাড়তে সেটা এখন ২ লাখ ছাড়িয়েছে।
আমাদের নিজেদের দেশের খবর কী? এখানেও বহু ঘটনা ঘটছে, চাঞ্চল্যকর ঘটনাও। কয়েকটির দিকে তাকানো যেতে পারে। করোনায় ভুগে অনেক মানুষ অকালে মারা গেছে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি মানুষকে কিন্তু আকস্মিকভাবে ও অকালে চলে যেতে হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিনের খবরই ধরা যাক।
সেদিন করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের, সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জনের। করোনায় মৃত্যু তা-ও কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়ে থাকে, সড়কে মৃত্যুকে মনে করা হয় নিতান্ত স্বাভাবিক। সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রায় প্রতিদিনই তাঁর অদৃশ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উদ্দেশে একটি করে সুতীক্ষ্ণ বাণ নিক্ষেপ করেন, কিন্তু তাঁর মন্ত্রণালয়ের আসল যে প্রতিপক্ষ, সড়ক অব্যবস্থাপনা, সে বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেন না। চলচ্চিত্রাভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে আন্দোলন করছেন, কাজটির সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রীকে হারানোর বেদনা জড়িত রয়েছে; তাঁকে একজন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিদিনই যিনি বিরোধী দলের লোকদের হুঁশিয়ার করে দিতেন, তিনি সুবিধামতো আর কাউকে না পেয়েই ইলিয়াস কাঞ্চনকে উন্মাদ বলে অভিহিত করেছেন। বোঝা যাচ্ছে সড়কে যাত্রীদের কপালের দুর্ভোগ কমার আপাতত কোনো কারণ নেই। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে, সড়ক নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
আর কেবল সড়কে বের হলেই যে নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে হবে, তা-ও নয়। ঘরে বসে থেকেও প্রাণহানি ঘটানো সম্ভব, উন্মত্ত চালকেরা ইদানীং চলন্ত বাস-ট্রাক নিয়ে ঘরের ভেতরেও হানা দিচ্ছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, যিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও, তিনি নিজেকেও অবশ্য আক্রমণের বাইরে রাখতে পারছেন না। না, বিরোধী দলের কাছ থেকে নয়; বিরোধী দলের কথাবার্তা তো মশার কামড়, বিরক্তিকর, তবে উপেক্ষণীয়; আক্রমণটা এসেছে তাঁর কনিষ্ঠ সহোদর ভাইয়ের কাছ থেকেই, যিনি আওয়ামী লীগেরই লোক এবং সামান্য কেউ নন; স্থানীয় পৌরসভার মেয়র। কনিষ্ঠ ভ্রাতা বলছেন সত্যের পক্ষে অকুতোভয় অবস্থান নিয়ে দলীয় কিছু লোকের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। তাঁর অগ্রজ যেহেতু দলের সাধারণ সম্পাদক, তাই তাঁর বক্তব্য সবিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। তাঁর স্বর একটু চড়াই। যেমন সংবাদ সম্মেলনে তাঁর উক্তি: ‘আমার মুখ বন্ধ করতে ওবায়দুল কাদের (অর্থাৎ তাঁর অগ্রজ) ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করছে।’ এটাকে গৃহবিবাদ বলা যাবে কি না, আমরা নিশ্চিত নই। তবে দলের ভেতর ‘বিদ্রোহী’রা যে আত্মপ্রকাশ করেছে, তা বোঝা যায় পৌর নির্বাচনের অবস্থার দিকে তাকালেই। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা (নীরবে এবং প্রকাশ্যেও) চলেছে দলের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী, এই দুইয়ের মধ্যেই; সংঘর্ষ ও প্রাণনাশের ঘটনাও ঘটেছে ওই কারণেই। দলীয় কর্তৃত্বকে যাতে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত প্রসারিত করা যায় সেই অভিপ্রায়ে দলের লোকেরা সব নির্বাচনেই দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়বেন—ই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন যখন দেখা যাচ্ছে জেতার ব্যাপারে যেহেতু দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, বিরোধী দলের প্রার্থীরা কার্যত অনুপস্থিত, বিদ্রোহীরাও দলেরই লোক, নির্বাচিত হলে তাঁরাও দলের পক্ষপুটেই প্রত্যাবর্তন করবেন, তাই এই প্রার্থীটি মনোনয়ন পেয়েছেন, ওই প্রার্থীটি পাননি—এমন ছাপটাপ ব্যবহার করার আবশ্যকতা নেই, যিনি জিতবেন, তিনিই সরকারি দলে শামিল হবেন, এই বৈজ্ঞানিক নিয়মকে নিরুপদ্রবে কাজ করতে দেওয়াই সংগত। তবে গৃহবিবাদটা থাকবে, যাঁরা দলের লোক বলে দাবিদার, তাঁরা বঞ্চিত হলে সেই বঞ্চনার উত্তাপ কোনো না কোনোভাবে প্রকাশ পাবে।
বিদ্রোহীদের বহিষ্কারও করা যাবে না, কারণ একে তো তাদের সংখ্যা অনেক, উপরন্তু দলের প্রতি তাঁদের আনুগত্য ইস্পাতের মতো কঠিন-পরীক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। বহিষ্কারে দলের শক্তি কমবে।
এসবের চেয়েও অবশ্য অনেক বড় সমস্যা রয়েছে সমাজে। করোনার প্রকোপে অর্থনৈতিক মেরুকরণ প্রক্রিয়াটি আরও নির্মম হয়েছে। নিম্নমধ্যবিত্ত গরিব হয়েছে, গরিব মানুষ একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
মা-বাবা বিশেষ সংকটে পড়েছেন তাঁদের সন্তানদের নিয়ে। পুরো দেড়টা বছর ওই সন্তানদের জীবন থেকে অপহৃত হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ। ছেলেমেয়েদের ভেতর অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে।
কিশোর গ্যাং তৈরির প্রক্রিয়া বেগবান ও বিস্তৃত হয়ে উঠেছে। মেয়েদের নিয়ে বিপদ আরও বেশি। তাদের ওপর লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয়। সমবয়সী পুরুষদের তো বটেই, অন্য বয়সীদেরও। ধর্ষণ, মিথ্যা-প্রতিশ্রুতি, প্রতারণা, সবকিছুই আগের চেয়ে অধিক মাত্রাতেই চলছে। ফলে বাল্যবিবাহের হার বেড়েছে, তবে সেটা যে কী পরিমাণে, আমরা জানি না।
আর কেবল যে নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়েই সমস্যা তা তো নয়, অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলেমেয়েরাও ভালো নেই। তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এরা কিশোর গ্যাং করে না, অন্যদের ওপর হামলা যে চালাবে এমন নয়; যা করার নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। তবে মারাত্মক সব অপরাধ এরাও করে থাকে। হতাশা, সৃষ্টিশীল কাজের অভাব, ভালো দৃষ্টান্তের অনুপস্থিতি, সুস্থ বিনোদনের স্বল্পতা, ভোগবাদিতার ব্যাপক বিস্তার, এদের আত্মপীড়নের, এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত পারস্পরিক পীড়নেরও, অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। দুটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়ার উপলক্ষ হয়েছে।
দুটিই মৃত্যুর। দুটিতেই মামলা হয়েছে ধর্ষণ ও খুনের। প্রথমটি অল্প বয়স্ক এক বালিকা ও এক কিশোরকে ঘিরে। বালিকাটি মারা গেছে, কিশোরটি এখন জেলে। মেয়েটির মা-বাবার অভিযোগ, ছেলেটি তাদের নাবালিকা সন্তানকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করেছে। তাঁদের ধারণা, একজন নয়, সঙ্গে আরও তিনজন কিশোর জড়িত ছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি বিষাক্ত মদ্যপানের। পাঁচজন, একটি মেয়ে ও চারটি ছেলে, মিলেমিশে এক রেস্টুরেন্টে বসে মদ্যপান করেছে। দেশি মদ, ভেজাল ছিল, তাতে বিষক্রিয়া হয়েছে। জানা যায়, এমন কাজ তারা প্রায়ই করে থাকে। তবে ওই দিন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এরা সবাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। টাকাপয়সার অভাব নেই। মেয়েটির সঙ্গে ছেলেদের একজনের ‘প্রেমে’র সম্পর্ক। মদ্যপানের আসর ভেঙে যাওয়ার পর মেয়েটি অসুস্থ বোধ করলে তার প্রেমিক তাকে এক বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেটি ও মেয়েটি একত্রে রাত্রিযাপন করে। সকালে মেয়েটির অসুখ বাড়ে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানে সে মারা যায়। তাদের সঙ্গী চারটি ছেলের মধ্যে একজনও মারা গেছে, ওই ভেজাল মদ অতিরিক্ত পান করার দরুন। মা-বাবা মেয়েটির কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেছেন।
প্রতিক্রিয়ায় আমরা নানা কথা বলছি ও শুনছি। বলাবলি চলছে যে এসব ঘটনার জন্য মা-বাবাই দায়ী। তাঁরা খেয়াল রাখেন না ছেলেমেয়েরা কী করছে; অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের নিজেদের মধ্যেও প্রীতির সম্পর্ক নেই; ছেলেমেয়েরা প্রাচুর্যের মধ্যে বড় হয়, তাদের বাসায় লোকজন তেমন থাকে না, মা-বাবা বাইরে চলে যান, ছেলেমেয়েরা খালি বাসায় যা ইচ্ছা তা-ই করে। সবই সত্য। এসব আমরা বলছি, বলব, বলতেই থাকব। কিন্তু নির্মম সত্য তো এটাও যে মা-বাবা নিজেরাও বিদ্যমান ব্যবস্থারই অসহায় শিকার। তাঁরা ইচ্ছা করে যে ওসব বিচ্যুতি ঘটান তা নয়, ছেলেমেয়েদের মঙ্গল তাঁরা নিশ্চয়ই চান।
কিন্তু পারেন না। সমাজ অসুস্থ। জীবনানন্দ দাশ যে গভীর অসুখের পীড়া দেখে কাতর হয়েছিলেন, বছরে বছরে সেটা বেড়েছে এবং এখন সুস্থ থাকাটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। একাত্তরে যে কিশোর যুদ্ধ করেছে আজ সে আত্মপীড়ন করে। একাত্তরের শত্রু চিহ্নিত ছিল, বাইরে থেকে তারা এসেছে, আমরা তাদের চিনতে পারতাম; শত্রু এখন দেশের ভেতরেই। এই শত্রুটিকে অসুখ বলাই সংগত এবং অসুখটির নাম হলো পুঁজিবাদ। পাকিস্তানি হানাদারদের আমরা তাড়াতে পেরেছি, কিন্তু যে অসুখের তাড়নায় অস্থির হয়ে ওই হানাদারেরা আমাদের ওপর হামলা করেছিল সেটা রয়ে গেছে; কেবল রয়েই যায়নি, তার জন্য বিকাশের পথটি প্রশস্ত হয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশে সত্যিকার মুক্তি যদি কারও ঘটে থাকে, তবে সেটা ওই পুঁজিবাদের। পুঁজিবাদের ওই মুক্তিই আমাদের বন্দী করে রেখেছে এবং নানাভাবে ও নানা দিক দিয়ে উৎপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। ওই অসুখের চিকিৎসা একটাই; তাকে বিতাড়ন করা।
অসুখের তৎপরতার কাহিনি তো মহাভারতসমান, বলে শেষ করার নয়। উনপঞ্চাশ বছর পার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না। হবে কী করে? যুদ্ধের সময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার, বাড়তে বাড়তে সেটা এখন ২ লাখ ছাড়িয়েছে। বাকিরা কোথা থেকে এল? কোন লোভে? আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন ছিল খাঁটি রাজাকারদের নির্ভেজাল তালিকা তৈরি করা। মধুলোভী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা যে কত, তা নিশ্চিত জানা যাবে না। তাঁদের মধ্যে তো কয়েকজন সচিবও ছিলেন, শনাক্ত হয়েছেন। এই তো সেদিন এক দৈনিক পত্রিকায় পড়লাম একটি এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরের নামও স্থান পেয়েছে।
আর গৃহবিবাদ? কতভাবে যে তার প্রকাশ! মেহেরপুরে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি, বয়স তাঁর আশি, নাম মুসা করিম, নিজ গৃহ থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানিয়েছেন আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে। কারণ, তাঁর কোনো আশ্রয় নেই। বিষয়সম্পত্তি যা ছিল উত্তরাধিকারীদের দিয়ে দিয়েছেন। বিলি-বণ্টনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় পরিবারের এক পক্ষ তাঁকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এটা সেই মেহেরপুরের ঘটনা, যার আমবাগানে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে, বাংলাদেশকে মুক্ত করবে বলে। কিছুদিন আগে এক খবরে পড়েছিলাম, বৃদ্ধ মা বিতাড়িত হয়েছেন গৃহ থেকে। তিনিও বিষয়-সম্পত্তি যা ছিল সন্তানদের দিয়ে নিঃস্ব হয়েছিলেন, সমাজ পিতৃতান্ত্রিক বটে; কিন্তু পিতা-মাতা সবাই সমান বোঝা, সম্পত্তি যদি না থাকে। ভরসা রাখি গৃহবিবাদগুলোর মীমাংসা ঘটবে গৃহযুদ্ধের ভেতর দিয়ে, যে যুদ্ধে সমাজ বদলাবে।
একদিন ভোরবেলা জাকারবার্গ লক্ষ করলেন যে পৃথিবীতে একটা ছোট্ট দেশে তাঁর সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হচ্ছে। সামনের ফ্লোরটায় দেখলেন দেশটা ছোট বটে, কিন্তু জনসংখ্যা বেশি। আর এই দেশের জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ফেসবুকে দেখতে পেলেন অসংখ্য বার্তা—সবই রাজনৈতিক এবং ছবিতে এ বিষয়ে বিপুল জনগণের
৮ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাদের নেতা-কর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র হামলা পরিচালনা করে অসংখ্য আন্দোলনকারীকে হত্যা ও অনেকের জীবন বি
৮ ঘণ্টা আগেবেশ কিছুদিন ধরেই অস্থির হয়ে আছে মোহাম্মদপুর। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপর এই অঞ্চলে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে না থাকায় একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী বাড়িতে বাড়িতে ডাকাতি করতে উৎসাহী হয়ে উঠেছিল। এলাকাবাসী তখন রাত জেগে নিজেদের এলাকা পাহারা দিয়েছিলেন।
৮ ঘণ্টা আগে৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংস্কারের আহ্বান শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেশোরেই। সব ক্ষেত্রে। চলচ্চিত্রাঙ্গনেও এই সংস্কারের জোয়ার এসে লেগেছে। জোয়ারের আগে মূলধারার চলচ্চিত্রের লোকজন নানাভাবে জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। অভ্যুত্থান শুরুর পর তাঁদের মনে হয়েছে ভবিষ্যৎ বুঝি অন্ধকারে প্রবেশ করতে যাচ্
১ দিন আগে