অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
“ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কাল বোশেখীর ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”
-কাজী নজরুল ইসলাম
জাতীয় কবির চেতনায়, রচনায় নবীনদের জয়গান বারবার প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি তরুণদের বীর আখ্যায়িত করে সমাজ সংস্কারে কীভাবে তারুণ্য অবদান রাখবে তার নির্দেশনাও দেন।
কর্মবীর আখ্যায়িত করে তিনি তরুণদের বলেছেন,
“প্রাণ-চঞ্চল প্রাচীর তরুণ, কর্মবীর,
হে মানবতার প্রতীক গর্ব উচ্চশির।
দিব্যচক্ষে দেখিতেছি, তোরা দৃপ্তপদ
সকলের আগে চলিবি পারায়ে গিরি ও নদ,
মরু-সঞ্চর গতি-চপল।
অগ্র পথিক রে পাঁওদল,
জোর কদম চল রে চল।”
আজ অদ্ভুদ ভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে তারুণ্যের এই জয়গান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ৪০ দিনের কম সময় এই তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদের পতন ঘটায়। এই শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শরিক হয়ে যায় সমস্ত দেশ অহিংসভাবে, অসহযোগিতাকে সম্বল করে। যদিও যে সহিংসতা এখানে দৃশ্যমান হয় সেটাই জাতীর মনকে নাড়া দেয়।
এই প্রজন্মকে নিয়ে আসলে আমরা কতটুকু ভরসা করতাম?
তার আগে আসুন দেখি, প্রজন্ম বলতে কী বুঝি?
“প্রজন্ম” শব্দটি একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে আসা একদল লোককে বোঝায়। সহজ ভাষায়, প্রজন্ম মানে একদল মানুষ যাঁরা একটি নিদির্ষ্ট সময় জন্ম নেন, বেড়ে ওঠেন। সেই সময়ের সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেন। মহাকালের রিলে রেসের ব্যাটনটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাঁদের হাতে থাকে সময়ের প্রয়োজনে তারপর তাঁরা সেটা পরবর্তী প্রজন্মের হাতে ব্যাটনটি তুলে দেন।
প্রজন্মের সময়সীমা কী?
জনসংখ্যা জীববিজ্ঞান এবং জনসংখ্যায় , প্রজন্মের সময় হলো একটি জনসংখ্যার বংশের মধ্যে পরপর দুটি প্রজন্মের মধ্যে গড় সময়। মানব জনসংখ্যায়, প্রজন্মের সময় সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে থাকে, লিঙ্গ এবং সমাজের ওপর ভিত্তি করে বিস্তৃত তারতম্যসহ। সহজ ভাষায় জেনারেশন টাইমলাইন বা প্রজন্মের সময়সীমা খুব একটা পরিচিত নয়। দূরবীনে চোখ রাখলে দেখব এই প্রজন্মের সময়সীমাকে ভাগ করা হয়েছে নিম্নরূপে:
১. দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন (মহান প্রপিতামহ প্রজন্ম): জন্মকাল ১৯২৪ থেকে এর আগে। এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন টম ব্রোকাও। এই প্রজন্ম প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, সেই সঙ্গে বিশ্বমন্দা সামাল দেন। তাঁদের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করা হয় দেশপ্রেমিক, অনুপ্রাণিত এক প্রজন্ম। সেই সঙ্গে তাঁরা সাইলেন্ট জেনারেশন অর্থাৎ নীরব প্রজন্মের পিতামাতা।
২. দ্য সাইলেন্ট জেনারেশন (নীরব প্রজন্ম): তাঁদের জন্মকাল ১৯২৫ থেকে ১৯৪২/৪৫ সাল অব্দি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পর যেহেতু তাঁদের জন্ম, তাই তাঁরা তাঁদের বাবা-মায়েদের থেকে বেশি সতর্ক, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা বিধ্বস্ত সমকালীন পরিবেশ তাঁদের জীবনকে সাশ্রয়ী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে। তাঁরা পপ কালচারকে অবয়ব দিয়েছেন। বিংশ শতাব্দীর রক শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং আরও বহু কিছুতে তাঁদের অবদান আছে। তাঁরা সাম্রাজ্যবাদ থেকে পুঁজিবাদের বৈশ্বিক রূপান্তর দেখেছেন। তাই তাঁদের মূল্যবোধ পূর্ব প্রজন্মের মতো সবার নয়। প্রজন্মান্তরের পার্থক্য দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন থেকে তাই এই প্রজন্মে দৃশ্যমান। তাঁরা বেবি বুমার্স প্রজন্মের পিতামাতা।
৩. বেবি বুমার্স (শিশু বিস্ফোরণ): তাঁদের জন্ম কাল ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪। তাঁদের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন দানা বেঁধেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ একদিকে যেমন জন্মহার প্রচুর বেড়ে গেছে। ফলে শিশু জন্মের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই কারণেই এই প্রজন্মের নাম হচ্ছে বেবি বুমার্স। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভাব কাটতে শুরু করেছেন অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া শুরু হয়েছে কাজেই মানুষ পরিবার এবং সন্তান ধারণে আগ্রহী হতে শুরু করেছেন এই সময়। একা একা সৈন্যরা ঘরে ফেরা শুরু করেছেন। অর্থনৈতিক এবং শিক্ষা সুযোগ বেড়েছে এই সময়ে। ফলে এই সময় প্রচুর সম্পদ জমতে শুরু করল শিক্ষা ও শিল্প ক্ষেত্রে। যার ফলে প্রযুক্তির অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরা পুঁজিবাদ থেকে নব্য পুঁজিবাদের আঁচ পেয়েছেন। যখন একটু একটু করে স্বাধীনতা নিয়ে পৃথিবীর মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। তাঁরা জেন এক্স এর পিতামাতা।
৪. জেনারেশন/ জেন - এক্স ( ল্যাচ কী / কারো দেখা শোনা, তত্ত্বাবধান ছাড়াই বেড়ে ওঠা): তাঁদের জন্মকাল ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সাল। এই সময়ে দিনশেষে অনেকেই খালি ঘরে ফিরতেন। বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়ে গিয়েছিল। আবার এখন থেকেই স্বামী স্ত্রীর দ্বৈত উপার্জন সংস্কৃতি চালু হয়। এই প্রজন্মই প্রথম যারা নিজেদের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের অধিকারী হন। এমটিভি অর্থাৎ কেবল টিভি দেখতে শুরু করেন। তাই কেউ কেউ তাঁদের এমটিভি জেনারেশনও বলে। এই প্রজন্ম এইডসের মহামারী দেখেন। যার ফলে নিরাপদ সেক্স এই কথাটা এখন থেকেই শোনা যাওয়া শুরু হয়। বিশ্ব রাজনীতিতে তাঁরা শীতল যুদ্ধ দেখেন ১৯৭০, ৮০, ৯০-এর দশকের এই সময়টা সাক্ষী। ফলে কর্মখালি নেই এই অবস্থার সঙ্গেও তাঁদের পরিচিতি ঘটতে থাকে। যখন অধিকাংশ দেশে বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম উপনিবেশিক শাসনামলের যাঁতাকলে সুস্পষ্টভাবে পিষ্ট হয়েছেন। আমাদের বাংলাদেশের কথা ধরলে তাঁদের দাদারা ছিলেন ব্রিটিশ শাসিত, হয়তো কারো কারো বাবা। এই প্রজন্ম মিলেনিয়ালদের অভিভাবক।
৫. মিলেনিয়াল ( ওহ! সো প্রাউড প্রজন্ম): তাঁদের জন্ম কাল ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সাল। অন্য সব প্রজন্মের থেকে তাঁরা ভিন্ন। যান্ত্রিক উৎকর্ষতা, গৃহ কাজে যন্ত্রের ব্যবহার, ইন্টারনেট তাঁদের অন্য সব প্রজন্মের থেকে আলাদা করেছে। ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা তাঁদের মধ্যে সাংঘাতিক। এই প্রজন্ম আত্মবিশ্বাসী। কখনো কখনো অধিক পরিমাণ আত্মবিশ্বাস তাঁদেরকে নার্সিসিজমের দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রজন্ম ধর্মীয়, জেন্ডার, রেসিজম, সেক্স্যুয়াল ওরিয়েন্টেশন-এর সচেতনতার যুগে প্রবেশ করেন। সাম্যতার প্রতি এই প্রজন্ম আগ্রহী। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলব, তাঁদের জন্ম একটি স্বাধীন দেশে।
৬. জেনারেশন/ জেন - জি/জেড: জন্ম কাল ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সাল। তাঁরা নীরব প্রজন্মের মতো। অর্থাৎ এই দুই প্রজন্মের মিল আছে। মিলটা কী? মিলটা হলো অনিশ্চয়তার। জেন - জিও করোনা অতিমারি পরবর্তী বিশ্বে বাস করছেন। এই বিশ্ব অবস্থা অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে নানা নিয়ামক যেমন, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ভূ-রাজনৈতিক দাবাখেলা, নব্যউপনিবেশবাদ বনাম বিউপনিবেশায়নের দ্বৈরথ। এই প্রজন্ম নিয়মিত তাঁদের সেলফোনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সক্রিয়। মানসিক স্বাস্থ্য, সাম্যতা, সমাধিকার, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তাঁরা সচেতন। এই প্রজন্ম জাতিগত বৈচিত্র্য, মুক্তমনা এবং পূর্ববর্তী সমস্ত প্রজন্ম থেকে সবচেয়ে বেশি প্রগতিশীল। তাঁরা পপ সংস্কৃতিকে ভিন্ন একটা রূপ দিয়েছে।
প্রথম থেকে চতুর্থ প্রজন্ম কিন্তু ধারণ করেন প্রজন্মান্তরের ক্ষত অবচেতন মনে।
ইন্টারজেনারেশনাল_ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত কী?
ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত তৈরি হয় যুগে যুগে প্রজন্মান্তরের নিপীড়নে, বঞ্চনায়। সেই অনুভব আমরা এখনো অবচেতন মনে ধারণ করে এই ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা। অর্থাৎ আমার পূর্বপুরুষদের কেউ যদি কোনো কারণে নিপীড়িত বা নির্যাতিত হয়ে মনোসামাজিক বা মনো দৈহিক আঘাতপ্রাপ্ত হন, তবে এই অনুভব এবং অভিজ্ঞতা পরবর্তী প্রজন্ম বহন করে। গবেষণা বলছে, এ ধরনের ট্রমা যেগুলোর সঙ্গে সহিংসতা, আসক্তি, মানসিক স্বাস্থ্য, কারাবাস সম্পৃক্ত, সেগুলোর ক্ষত প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষ বহন করে। এর একটা চমৎকার উদাহরণ হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের প্রায় ১ লাখ শিশুকে পিতামাতার কাছ থেকে চুরি করে চার্চে এবং সরকারিভাবে বড় করা হয় ১৯৭০ সাল পর্যন্ত।
পরবর্তীতে দেখা যায় এই শিশুদের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে সরিয়ে আনা হলো, এর প্রত্যেকটি তথ্য তার সচেতন মন ভুলে গেলেও অবচেতনভাবে সে মনে রাখল। ফলে পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্ক জীবনেই শুধু নয়, এই শিশুদের উত্তরাধিকারও বংশ পরম্পরায় প্রজন্মান্তরের ক্ষত দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। এপিজেনেটিক্স বলছে, এটা তাঁদের জিনের ওপরও বংশ পরম্পরায় প্রভাব বিস্তার করেছে। বলা হচ্ছে এটা ডিএনএ-এর কোডের কোনো পরিবর্তন করে না, কিন্তু এমন কিছু পরিবর্ধন করে যা প্রজন্মান্তরে পরবর্তী উত্তরাধিকাররা এই ক্ষতর পরিমাণ পরিণাম ভোগ করে। যা পরবর্তী প্রজন্মকে বিষণ্নতা, নানাবিধ মানসিক ব্যাধি, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
ভয়ংকর কথা! তাই না? আসুন বর্তমানে ফিরি। সহজ ভাষায় বলা যায় বুমারসরা এখন নানা দাদা, জেন এক্স' রা এখন অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের বাবা মা।
মিলেনিয়ালরা চাকরি করছেন। জেন জিরা ছাত্র। তাঁদের কিন্তু ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত নেই। এটাই কি মনস্তাত্ত্বিক মূল বিষয়? এটাই কি সাইকোপলিটিক্স ঘুরে যাওয়ার কারণ?
মজার ব্যাপার হলো এই বিভিন্ন প্রজন্মের কর্ম ক্ষেত্রের ভূমিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
১. এক্সিকিউটিভ পজিশনে বসে আছেন:
বুমারসরা ৬৬%
জেন এক্সরা ২৮%
মিলেনিয়ালরা ৬%
২. রেভিনিউ জেনারেট করছেন
বুমারসরা ৩২%
জেন এক্সরা ৫৭%
মিলেনিয়ালরা ১১%
৩. অভিযোজন প্রবণতা
বুমারসদের ১০%
জেন এক্সরা ৪৯%
মিলেনিয়ালরা ৪১%
৪. কস্ট (খরচ) এফেকটিভ
বুমারসরা ৫৯%
জেন এক্সরা ৩৪%
মিলেনিয়ালরা ৭%
৫. প্রযুক্তিগত জ্ঞান
বুমারসদের ৪%
জেন এক্সদের ১৮%
মিলেনিয়ালদের ৭৮%
৬. আন্ত সম্পর্ক তৈরিতে দক্ষতা
বুমারসদের ৩৪%
জেন এক্সদের ৫৩%
মিলেনিয়ালদের ১৩%
৭. সমস্যার সমাধানে দক্ষতা
বুমারসদের ২৬%
জেন এক্সদের ৫৭%
মিলেনিয়ালদের ১৭%
৮. যৌথভাবে কাজ করবার প্রয়াস (কোলাবরেশন)
বুমারসদের ২০%
জেন এক্সদের ৫৩%
মিলেনিয়ালদের ২৭%
এবার বাংলাদেশের যদি জনসংখ্যার পিরামিডটা খেয়াল করেন তবে ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক (২০২১) এর তথ্য অনুসারে দেখবেন দেখবেন, বাংলাদেশে ১৫ থেকে ২৪ এই তারুণ্যের উপস্থিতি সর্বাধিক।
চিত্র: ১
পিরামিডটা খেয়াল করলে দেখবেন এখানে নারী পুরুষের উপস্থিতি প্রায় সমান সমান। এই তারুণ্যের শক্তি কতটুকু আমরা কি টের পাচ্ছি? জেন- জিদের নিয়ে কোনো তথ্য উপাত্ত অন্তত বাংলাদেশে নেই।
তবে এইটুকুই চাহিদা এই অরাজনৈতিক বিপ্লব যেন রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি পরিবর্তন আনে। বৈষম্যবিহীন আন্দোলন ছাত্রদের পাহাড় থেকে সমতলে পারস্পরিক সৌহার্দ্যর নিদর্শন।
ইতিমধ্যেই বাজারে সবজির দাম কমেছে সিন্ডিকেটের দখলবিহীন বাজারদর কমেছে। লুট হওয়া জিনিসপত্র গণভবনে ফেরত আসছে। পুলিশবিহীন সড়কে নিরাপদে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, ময়লা পরিষ্কার হচ্ছে।
কিন্তু এবার আসুন নিজের চোখে একটু আয়না ধরি। জেন- জি দের আসলে আমরা কতটুকু বুঝেছি পেরেছিলাম? সত্যিকারের কতটুকু বুঝেছি? আর কী কী বোঝা বাকি?
বিদ্রোহী নজরুলের তারুণ্য আদর্শ দিয়ে শুরু করেছিলাম, তাঁকে দিয়েই শেষ করি। জাতীয় কবি ঠিকই বুঝেছিলেন। তারুণ্য কোনো দেশ কালের গণ্ডি দ্বারা আবদ্ধ নয়। তাঁর যৌবনের প্রমূর্তি আমরা দেখেছি ১৯৫২ সালে, মহান ১৯৭১ সালে, আবার জুলাই ২০২৪-এ।
তাই না? তাইতো।
“ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কাল বোশেখীর ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”
-কাজী নজরুল ইসলাম
জাতীয় কবির চেতনায়, রচনায় নবীনদের জয়গান বারবার প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি তরুণদের বীর আখ্যায়িত করে সমাজ সংস্কারে কীভাবে তারুণ্য অবদান রাখবে তার নির্দেশনাও দেন।
কর্মবীর আখ্যায়িত করে তিনি তরুণদের বলেছেন,
“প্রাণ-চঞ্চল প্রাচীর তরুণ, কর্মবীর,
হে মানবতার প্রতীক গর্ব উচ্চশির।
দিব্যচক্ষে দেখিতেছি, তোরা দৃপ্তপদ
সকলের আগে চলিবি পারায়ে গিরি ও নদ,
মরু-সঞ্চর গতি-চপল।
অগ্র পথিক রে পাঁওদল,
জোর কদম চল রে চল।”
আজ অদ্ভুদ ভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে তারুণ্যের এই জয়গান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ৪০ দিনের কম সময় এই তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদের পতন ঘটায়। এই শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শরিক হয়ে যায় সমস্ত দেশ অহিংসভাবে, অসহযোগিতাকে সম্বল করে। যদিও যে সহিংসতা এখানে দৃশ্যমান হয় সেটাই জাতীর মনকে নাড়া দেয়।
এই প্রজন্মকে নিয়ে আসলে আমরা কতটুকু ভরসা করতাম?
তার আগে আসুন দেখি, প্রজন্ম বলতে কী বুঝি?
“প্রজন্ম” শব্দটি একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে আসা একদল লোককে বোঝায়। সহজ ভাষায়, প্রজন্ম মানে একদল মানুষ যাঁরা একটি নিদির্ষ্ট সময় জন্ম নেন, বেড়ে ওঠেন। সেই সময়ের সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেন। মহাকালের রিলে রেসের ব্যাটনটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাঁদের হাতে থাকে সময়ের প্রয়োজনে তারপর তাঁরা সেটা পরবর্তী প্রজন্মের হাতে ব্যাটনটি তুলে দেন।
প্রজন্মের সময়সীমা কী?
জনসংখ্যা জীববিজ্ঞান এবং জনসংখ্যায় , প্রজন্মের সময় হলো একটি জনসংখ্যার বংশের মধ্যে পরপর দুটি প্রজন্মের মধ্যে গড় সময়। মানব জনসংখ্যায়, প্রজন্মের সময় সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে থাকে, লিঙ্গ এবং সমাজের ওপর ভিত্তি করে বিস্তৃত তারতম্যসহ। সহজ ভাষায় জেনারেশন টাইমলাইন বা প্রজন্মের সময়সীমা খুব একটা পরিচিত নয়। দূরবীনে চোখ রাখলে দেখব এই প্রজন্মের সময়সীমাকে ভাগ করা হয়েছে নিম্নরূপে:
১. দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন (মহান প্রপিতামহ প্রজন্ম): জন্মকাল ১৯২৪ থেকে এর আগে। এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন টম ব্রোকাও। এই প্রজন্ম প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, সেই সঙ্গে বিশ্বমন্দা সামাল দেন। তাঁদের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করা হয় দেশপ্রেমিক, অনুপ্রাণিত এক প্রজন্ম। সেই সঙ্গে তাঁরা সাইলেন্ট জেনারেশন অর্থাৎ নীরব প্রজন্মের পিতামাতা।
২. দ্য সাইলেন্ট জেনারেশন (নীরব প্রজন্ম): তাঁদের জন্মকাল ১৯২৫ থেকে ১৯৪২/৪৫ সাল অব্দি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পর যেহেতু তাঁদের জন্ম, তাই তাঁরা তাঁদের বাবা-মায়েদের থেকে বেশি সতর্ক, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা বিধ্বস্ত সমকালীন পরিবেশ তাঁদের জীবনকে সাশ্রয়ী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে। তাঁরা পপ কালচারকে অবয়ব দিয়েছেন। বিংশ শতাব্দীর রক শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং আরও বহু কিছুতে তাঁদের অবদান আছে। তাঁরা সাম্রাজ্যবাদ থেকে পুঁজিবাদের বৈশ্বিক রূপান্তর দেখেছেন। তাই তাঁদের মূল্যবোধ পূর্ব প্রজন্মের মতো সবার নয়। প্রজন্মান্তরের পার্থক্য দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন থেকে তাই এই প্রজন্মে দৃশ্যমান। তাঁরা বেবি বুমার্স প্রজন্মের পিতামাতা।
৩. বেবি বুমার্স (শিশু বিস্ফোরণ): তাঁদের জন্ম কাল ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪। তাঁদের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন দানা বেঁধেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ একদিকে যেমন জন্মহার প্রচুর বেড়ে গেছে। ফলে শিশু জন্মের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই কারণেই এই প্রজন্মের নাম হচ্ছে বেবি বুমার্স। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভাব কাটতে শুরু করেছেন অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া শুরু হয়েছে কাজেই মানুষ পরিবার এবং সন্তান ধারণে আগ্রহী হতে শুরু করেছেন এই সময়। একা একা সৈন্যরা ঘরে ফেরা শুরু করেছেন। অর্থনৈতিক এবং শিক্ষা সুযোগ বেড়েছে এই সময়ে। ফলে এই সময় প্রচুর সম্পদ জমতে শুরু করল শিক্ষা ও শিল্প ক্ষেত্রে। যার ফলে প্রযুক্তির অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরা পুঁজিবাদ থেকে নব্য পুঁজিবাদের আঁচ পেয়েছেন। যখন একটু একটু করে স্বাধীনতা নিয়ে পৃথিবীর মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। তাঁরা জেন এক্স এর পিতামাতা।
৪. জেনারেশন/ জেন - এক্স ( ল্যাচ কী / কারো দেখা শোনা, তত্ত্বাবধান ছাড়াই বেড়ে ওঠা): তাঁদের জন্মকাল ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সাল। এই সময়ে দিনশেষে অনেকেই খালি ঘরে ফিরতেন। বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়ে গিয়েছিল। আবার এখন থেকেই স্বামী স্ত্রীর দ্বৈত উপার্জন সংস্কৃতি চালু হয়। এই প্রজন্মই প্রথম যারা নিজেদের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের অধিকারী হন। এমটিভি অর্থাৎ কেবল টিভি দেখতে শুরু করেন। তাই কেউ কেউ তাঁদের এমটিভি জেনারেশনও বলে। এই প্রজন্ম এইডসের মহামারী দেখেন। যার ফলে নিরাপদ সেক্স এই কথাটা এখন থেকেই শোনা যাওয়া শুরু হয়। বিশ্ব রাজনীতিতে তাঁরা শীতল যুদ্ধ দেখেন ১৯৭০, ৮০, ৯০-এর দশকের এই সময়টা সাক্ষী। ফলে কর্মখালি নেই এই অবস্থার সঙ্গেও তাঁদের পরিচিতি ঘটতে থাকে। যখন অধিকাংশ দেশে বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম উপনিবেশিক শাসনামলের যাঁতাকলে সুস্পষ্টভাবে পিষ্ট হয়েছেন। আমাদের বাংলাদেশের কথা ধরলে তাঁদের দাদারা ছিলেন ব্রিটিশ শাসিত, হয়তো কারো কারো বাবা। এই প্রজন্ম মিলেনিয়ালদের অভিভাবক।
৫. মিলেনিয়াল ( ওহ! সো প্রাউড প্রজন্ম): তাঁদের জন্ম কাল ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সাল। অন্য সব প্রজন্মের থেকে তাঁরা ভিন্ন। যান্ত্রিক উৎকর্ষতা, গৃহ কাজে যন্ত্রের ব্যবহার, ইন্টারনেট তাঁদের অন্য সব প্রজন্মের থেকে আলাদা করেছে। ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা তাঁদের মধ্যে সাংঘাতিক। এই প্রজন্ম আত্মবিশ্বাসী। কখনো কখনো অধিক পরিমাণ আত্মবিশ্বাস তাঁদেরকে নার্সিসিজমের দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রজন্ম ধর্মীয়, জেন্ডার, রেসিজম, সেক্স্যুয়াল ওরিয়েন্টেশন-এর সচেতনতার যুগে প্রবেশ করেন। সাম্যতার প্রতি এই প্রজন্ম আগ্রহী। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলব, তাঁদের জন্ম একটি স্বাধীন দেশে।
৬. জেনারেশন/ জেন - জি/জেড: জন্ম কাল ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সাল। তাঁরা নীরব প্রজন্মের মতো। অর্থাৎ এই দুই প্রজন্মের মিল আছে। মিলটা কী? মিলটা হলো অনিশ্চয়তার। জেন - জিও করোনা অতিমারি পরবর্তী বিশ্বে বাস করছেন। এই বিশ্ব অবস্থা অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে নানা নিয়ামক যেমন, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ভূ-রাজনৈতিক দাবাখেলা, নব্যউপনিবেশবাদ বনাম বিউপনিবেশায়নের দ্বৈরথ। এই প্রজন্ম নিয়মিত তাঁদের সেলফোনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সক্রিয়। মানসিক স্বাস্থ্য, সাম্যতা, সমাধিকার, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তাঁরা সচেতন। এই প্রজন্ম জাতিগত বৈচিত্র্য, মুক্তমনা এবং পূর্ববর্তী সমস্ত প্রজন্ম থেকে সবচেয়ে বেশি প্রগতিশীল। তাঁরা পপ সংস্কৃতিকে ভিন্ন একটা রূপ দিয়েছে।
প্রথম থেকে চতুর্থ প্রজন্ম কিন্তু ধারণ করেন প্রজন্মান্তরের ক্ষত অবচেতন মনে।
ইন্টারজেনারেশনাল_ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত কী?
ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত তৈরি হয় যুগে যুগে প্রজন্মান্তরের নিপীড়নে, বঞ্চনায়। সেই অনুভব আমরা এখনো অবচেতন মনে ধারণ করে এই ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা। অর্থাৎ আমার পূর্বপুরুষদের কেউ যদি কোনো কারণে নিপীড়িত বা নির্যাতিত হয়ে মনোসামাজিক বা মনো দৈহিক আঘাতপ্রাপ্ত হন, তবে এই অনুভব এবং অভিজ্ঞতা পরবর্তী প্রজন্ম বহন করে। গবেষণা বলছে, এ ধরনের ট্রমা যেগুলোর সঙ্গে সহিংসতা, আসক্তি, মানসিক স্বাস্থ্য, কারাবাস সম্পৃক্ত, সেগুলোর ক্ষত প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষ বহন করে। এর একটা চমৎকার উদাহরণ হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের প্রায় ১ লাখ শিশুকে পিতামাতার কাছ থেকে চুরি করে চার্চে এবং সরকারিভাবে বড় করা হয় ১৯৭০ সাল পর্যন্ত।
পরবর্তীতে দেখা যায় এই শিশুদের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে সরিয়ে আনা হলো, এর প্রত্যেকটি তথ্য তার সচেতন মন ভুলে গেলেও অবচেতনভাবে সে মনে রাখল। ফলে পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্ক জীবনেই শুধু নয়, এই শিশুদের উত্তরাধিকারও বংশ পরম্পরায় প্রজন্মান্তরের ক্ষত দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। এপিজেনেটিক্স বলছে, এটা তাঁদের জিনের ওপরও বংশ পরম্পরায় প্রভাব বিস্তার করেছে। বলা হচ্ছে এটা ডিএনএ-এর কোডের কোনো পরিবর্তন করে না, কিন্তু এমন কিছু পরিবর্ধন করে যা প্রজন্মান্তরে পরবর্তী উত্তরাধিকাররা এই ক্ষতর পরিমাণ পরিণাম ভোগ করে। যা পরবর্তী প্রজন্মকে বিষণ্নতা, নানাবিধ মানসিক ব্যাধি, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
ভয়ংকর কথা! তাই না? আসুন বর্তমানে ফিরি। সহজ ভাষায় বলা যায় বুমারসরা এখন নানা দাদা, জেন এক্স' রা এখন অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের বাবা মা।
মিলেনিয়ালরা চাকরি করছেন। জেন জিরা ছাত্র। তাঁদের কিন্তু ইন্টারজেনারেশনাল ট্রমা/ প্রজন্মান্তরের ক্ষত নেই। এটাই কি মনস্তাত্ত্বিক মূল বিষয়? এটাই কি সাইকোপলিটিক্স ঘুরে যাওয়ার কারণ?
মজার ব্যাপার হলো এই বিভিন্ন প্রজন্মের কর্ম ক্ষেত্রের ভূমিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
১. এক্সিকিউটিভ পজিশনে বসে আছেন:
বুমারসরা ৬৬%
জেন এক্সরা ২৮%
মিলেনিয়ালরা ৬%
২. রেভিনিউ জেনারেট করছেন
বুমারসরা ৩২%
জেন এক্সরা ৫৭%
মিলেনিয়ালরা ১১%
৩. অভিযোজন প্রবণতা
বুমারসদের ১০%
জেন এক্সরা ৪৯%
মিলেনিয়ালরা ৪১%
৪. কস্ট (খরচ) এফেকটিভ
বুমারসরা ৫৯%
জেন এক্সরা ৩৪%
মিলেনিয়ালরা ৭%
৫. প্রযুক্তিগত জ্ঞান
বুমারসদের ৪%
জেন এক্সদের ১৮%
মিলেনিয়ালদের ৭৮%
৬. আন্ত সম্পর্ক তৈরিতে দক্ষতা
বুমারসদের ৩৪%
জেন এক্সদের ৫৩%
মিলেনিয়ালদের ১৩%
৭. সমস্যার সমাধানে দক্ষতা
বুমারসদের ২৬%
জেন এক্সদের ৫৭%
মিলেনিয়ালদের ১৭%
৮. যৌথভাবে কাজ করবার প্রয়াস (কোলাবরেশন)
বুমারসদের ২০%
জেন এক্সদের ৫৩%
মিলেনিয়ালদের ২৭%
এবার বাংলাদেশের যদি জনসংখ্যার পিরামিডটা খেয়াল করেন তবে ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক (২০২১) এর তথ্য অনুসারে দেখবেন দেখবেন, বাংলাদেশে ১৫ থেকে ২৪ এই তারুণ্যের উপস্থিতি সর্বাধিক।
চিত্র: ১
পিরামিডটা খেয়াল করলে দেখবেন এখানে নারী পুরুষের উপস্থিতি প্রায় সমান সমান। এই তারুণ্যের শক্তি কতটুকু আমরা কি টের পাচ্ছি? জেন- জিদের নিয়ে কোনো তথ্য উপাত্ত অন্তত বাংলাদেশে নেই।
তবে এইটুকুই চাহিদা এই অরাজনৈতিক বিপ্লব যেন রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি পরিবর্তন আনে। বৈষম্যবিহীন আন্দোলন ছাত্রদের পাহাড় থেকে সমতলে পারস্পরিক সৌহার্দ্যর নিদর্শন।
ইতিমধ্যেই বাজারে সবজির দাম কমেছে সিন্ডিকেটের দখলবিহীন বাজারদর কমেছে। লুট হওয়া জিনিসপত্র গণভবনে ফেরত আসছে। পুলিশবিহীন সড়কে নিরাপদে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, ময়লা পরিষ্কার হচ্ছে।
কিন্তু এবার আসুন নিজের চোখে একটু আয়না ধরি। জেন- জি দের আসলে আমরা কতটুকু বুঝেছি পেরেছিলাম? সত্যিকারের কতটুকু বুঝেছি? আর কী কী বোঝা বাকি?
বিদ্রোহী নজরুলের তারুণ্য আদর্শ দিয়ে শুরু করেছিলাম, তাঁকে দিয়েই শেষ করি। জাতীয় কবি ঠিকই বুঝেছিলেন। তারুণ্য কোনো দেশ কালের গণ্ডি দ্বারা আবদ্ধ নয়। তাঁর যৌবনের প্রমূর্তি আমরা দেখেছি ১৯৫২ সালে, মহান ১৯৭১ সালে, আবার জুলাই ২০২৪-এ।
তাই না? তাইতো।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কি পারবে না, তাদেরকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি হবে না—এ নিয়ে গরম এখন রাজনীতির মাঠ। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক হিসেবে দাবিদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি তো আরও একধাপ বেশি। আওয়ামী লীগকে কেবল নির্বাচনের বাইরে রাখাই নয়, দাবি তাদের দেশের প্রাচী
২ ঘণ্টা আগেহুমায়ূন আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওনের ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের একটা ভাইরাল ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। বেশ মজা পেলাম। সত্যি বললে মজার চেয়েও ছোট্ট বাচ্চার কথায় ভাবনার উদ্রেক হলো। চিন্তার দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
২ ঘণ্টা আগেপরিবেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সার্কুলার অর্থনীতি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি এক নবদিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বাংলাদেশে স্বল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সার্কুলার অর্থনীতির বিকল্প নেই।
২ ঘণ্টা আগেবগুড়ার শিবগঞ্জে ৪২০ টাকা কেজি দরে নতুন আলু বিক্রি হয়েছে। আজকের পত্রিকায় খবরটি দেখা গেছে ১৮ নভেম্বর। এই দামে বেচাকেনাও হচ্ছে। ক্রেতারাও নাকি এই দামে আলু কিনতে পেরে সন্তুষ্ট!
২ ঘণ্টা আগে