শরিফুল হাসান
বিসিএসের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে সারদায় পুলিশ একাডেমিতে এক বছরের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। রীতি-নীতি অনুযায়ী, এক বছরের এক দিন বেশিও প্রশিক্ষণে রাখার সুযোগ নেই। ৪০তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া এএসপিদের এক বছর শেষ হয়েছে আরও দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো এই ব্যাচের পাসিং প্যারেড হয়নি। দুই দফায় তারিখ ঠিক করেও সেটি স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আগের দিন এই ব্যাচের ২৫ এএসপিকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, তাঁরা ‘ধীরে’ হেঁটেছেন।
২০১৮ সালে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়। চার বছরের সব পরীক্ষা ও প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর ৪০তম বিসিএসের ১ হাজার ৯২৯ জন কর্মকর্তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর সবাই চাকরিতে যোগদান করেন। লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিএটিসি) ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে পুলিশ বাদে প্রশাসনসহ বাকি সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখন চাকরি করছেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় সবাই কর্মক্ষেত্রেই ছিলেন। দুই বছর শেষে তাঁদের চাকরিও স্থায়ী হওয়ার পথে। কিন্তু অভিযোগ আনা হচ্ছে শুধু পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর।
২৫ জন এএসপিকে পৃথকভাবে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ২৬ নভেম্বর সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেলের সেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্যারেড চালু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমান্ডের অংশ হিসেবে দৌড়ের নির্দেশ দিলে আপনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হেঁটে হেঁটে চলা শুরু করেন। আপনাদের কারণে মাঠের অন্য প্রশিক্ষণার্থীরা সঠিকভাবে দৌড়াতে পারছিলেন না। আপনাকে বারবার দৌড়ানোর কথা বলা হলেও আপনি কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তিমূলক কথা বলা শুরু করেন। আপনিসহ আপনার অন্য সহযোগীদের এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একজন প্রশিক্ষণরত এএসপি (প্রবেশনার) হিসেবে আপনার এরূপ আচরণ ও কার্যকলাপ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করে এবং মাঠের অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করে। আপনার এরূপ কার্যকলাপ ও আচরণ কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য, কর্তব্যে অবহেলা এবং শৃঙ্খলার পরিপন্থী, যা অসদাচরণের শামিল।’
এর আগে সারদায় মাঠে ও ক্লাসের বিশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে এ পর্যন্ত ৩১৩ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাডেমিক ম্যানুয়াল ও কোর্স আউটলাইন অনুযায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো অভিযোগ থাকলে অতিরিক্ত ড্রিল করানো বিধান আছে। কিন্তু ৩১৩ জন এসআইকে তিন দফায় সরাসরি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গত ২১ অক্টোবর ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে শোকজ করা হয় ১০ জনকে। তবে ওই ক্লাসের প্রশিক্ষক সারদা পুলিশ একাডেমির সাবেক প্রিন্সিপাল মো. নাজিবুর রহমান দাবি করেছেন, তাঁর ক্লাসে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যে অভিযোগটা আনা হয়েছে যে আমার ক্লাসে বিশৃঙ্খলা হয়েছে–এইটুকুর ব্যাপারে আমি ক্লিয়ার কাট বলতে পারি যে আমার ক্লাসে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমি পক্ষপাতিত্বের লোক নই, আমি ন্যায়বিচারের লোক। আমি চাই যে ফেয়ার, আনবায়াসড জাস্টিস হোক।’
ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে এএসপিদেরও একইভাবে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে! কারণ দৌড়ের বদলে হাঁটার ঘটনার জন্য যে তারিখ বলা হচ্ছে, পুলিশের রীতি অনুযায়ী সেই তারিখে এএসপিদের একাডেমিতেই থাকার কথা না!
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর এএসপিদের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর প্যারেড আয়োজনের সব আয়োজনও প্রস্তুত ছিল। দেড় হাজারের বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। তবে আগের রাতে হঠাৎ করেই কুচকাওয়াজ স্থগিত করে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন, সেই উত্তর নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক প্যারেডের আগে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। এতে অন্তত ৬২ জন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা নিয়োগ পেয়েছেন।
আশঙ্কার বিষয় হলো, কোনো তদন্ত ছাড়া একটা স্ট্যাটাস দেখে ৬৬ জন মেধাবী তরুণের জীবনকে অনিশ্চয়তায় ফেলা হলো।
অক্টোবরে প্রথমবার প্যারেড স্থগিতের ওই ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয়বার পাসিং প্যারেডের দিন ঠিক করা হয়। তবে এবার দ্বিতীয়বারের মতো সেটি স্থগিত করা হয়।
এই যে পাসিং প্যারেড বারবার পেছানো, কারণ দর্শানোর চিঠি; এগুলো কিন্তু নজীর হয়ে থাকবে। প্রথমত, পুলিশ আইন ও রীতি অনুযায়ী এক বছরের এক দিনেরও বেশি কাউকে সারদায় রাখার সুযোগ নেই। ২০ অক্টোবর যেখানে তাঁদের পাসিং প্যারেড হওয়ার কথা, সেখানে ২৬ নভেম্বরে প্রশিক্ষণে এলোমেলো হাঁটার অভিযোগ আসে কি করে।
নোটিশ দেওয়া ২৫ জনের মধ্যে দুইজন নারী ২৬ নভেম্বরের ঘটনার দিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঠে ছিলেন না। কাজেই তাঁদের বিরুদ্ধে দৌড়ের ঘটনার অভিযোগ আনা যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, মুভি নাইটে তাঁরা একজন পরিদর্শকের সঙ্গে নাকি উচ্চবাচ্য করেছেন।
বিসিএসের একটা ব্যাচের সবাই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের, তাও শুধু পুলিশের, এমন কথা বলা অবান্তর। কেউ যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করছে না, ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৪০তম বিসিএসে ২৪৪ জন প্রশাসন ক্যাডারের সহকারী কমিশনারসহ বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৯২৯ জনকে নিয়োগের গেজেট হয়েছিল। অন্য সবাই যোগ দিয়ে নানা পদে চাকরি করছেন, এমনকি প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ বাকিদের অনেকেই গত নির্বাচনের সময় সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁদের যোগদানে সমস্যা হয়নি অথচ একই বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তারা যাঁরা কিনা সারদায় প্রশিক্ষণে ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ?
অথচ ৪০ বিসিএস ছিল কোটামুক্ত বিসিএস। প্রায় চার লাখ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে সবচেয়ে মেধাবীরা উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে এএসপি হিসেবে ৭২ জন গেজেটেড হন। কয়েকজন পরে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। শেষ পযর্ন্ত ৬৩ জন এএসপি প্রশিক্ষণে ছিলেন। এ ছাড়া ৩৮ ব্যাচের আরও তিনজন যুক্ত হন। এই ৬৬ জনই এখন চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
একটা বিষয় নীতিনির্ধারকরা কেন ভাবছেন না? ৪০ বিসিএস থেকে যদি বিগত সরকারের সমর্থকরা যোগদান করেন তাহলে তো তাঁরা প্রশাসন, পররাষ্ট্রসহ সব ক্যাডারে যোগ দেবেন। অন্য ক্যাডারের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ না ওঠে এমনকি ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ নির্বাচনের সময় মাঠে থাকার পরেও, তাহলে সারদায় থাকা পুলিশের দোষটা কী?
লেখক: কলামিস্ট ও বিশ্লেষক
বিসিএসের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে সারদায় পুলিশ একাডেমিতে এক বছরের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। রীতি-নীতি অনুযায়ী, এক বছরের এক দিন বেশিও প্রশিক্ষণে রাখার সুযোগ নেই। ৪০তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া এএসপিদের এক বছর শেষ হয়েছে আরও দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো এই ব্যাচের পাসিং প্যারেড হয়নি। দুই দফায় তারিখ ঠিক করেও সেটি স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আগের দিন এই ব্যাচের ২৫ এএসপিকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, তাঁরা ‘ধীরে’ হেঁটেছেন।
২০১৮ সালে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়। চার বছরের সব পরীক্ষা ও প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর ৪০তম বিসিএসের ১ হাজার ৯২৯ জন কর্মকর্তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর সবাই চাকরিতে যোগদান করেন। লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিএটিসি) ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে পুলিশ বাদে প্রশাসনসহ বাকি সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখন চাকরি করছেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় সবাই কর্মক্ষেত্রেই ছিলেন। দুই বছর শেষে তাঁদের চাকরিও স্থায়ী হওয়ার পথে। কিন্তু অভিযোগ আনা হচ্ছে শুধু পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর।
২৫ জন এএসপিকে পৃথকভাবে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ২৬ নভেম্বর সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেলের সেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্যারেড চালু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমান্ডের অংশ হিসেবে দৌড়ের নির্দেশ দিলে আপনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হেঁটে হেঁটে চলা শুরু করেন। আপনাদের কারণে মাঠের অন্য প্রশিক্ষণার্থীরা সঠিকভাবে দৌড়াতে পারছিলেন না। আপনাকে বারবার দৌড়ানোর কথা বলা হলেও আপনি কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তিমূলক কথা বলা শুরু করেন। আপনিসহ আপনার অন্য সহযোগীদের এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একজন প্রশিক্ষণরত এএসপি (প্রবেশনার) হিসেবে আপনার এরূপ আচরণ ও কার্যকলাপ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করে এবং মাঠের অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করে। আপনার এরূপ কার্যকলাপ ও আচরণ কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য, কর্তব্যে অবহেলা এবং শৃঙ্খলার পরিপন্থী, যা অসদাচরণের শামিল।’
এর আগে সারদায় মাঠে ও ক্লাসের বিশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে এ পর্যন্ত ৩১৩ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাডেমিক ম্যানুয়াল ও কোর্স আউটলাইন অনুযায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো অভিযোগ থাকলে অতিরিক্ত ড্রিল করানো বিধান আছে। কিন্তু ৩১৩ জন এসআইকে তিন দফায় সরাসরি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গত ২১ অক্টোবর ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে শোকজ করা হয় ১০ জনকে। তবে ওই ক্লাসের প্রশিক্ষক সারদা পুলিশ একাডেমির সাবেক প্রিন্সিপাল মো. নাজিবুর রহমান দাবি করেছেন, তাঁর ক্লাসে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যে অভিযোগটা আনা হয়েছে যে আমার ক্লাসে বিশৃঙ্খলা হয়েছে–এইটুকুর ব্যাপারে আমি ক্লিয়ার কাট বলতে পারি যে আমার ক্লাসে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমি পক্ষপাতিত্বের লোক নই, আমি ন্যায়বিচারের লোক। আমি চাই যে ফেয়ার, আনবায়াসড জাস্টিস হোক।’
ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে এএসপিদেরও একইভাবে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে! কারণ দৌড়ের বদলে হাঁটার ঘটনার জন্য যে তারিখ বলা হচ্ছে, পুলিশের রীতি অনুযায়ী সেই তারিখে এএসপিদের একাডেমিতেই থাকার কথা না!
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর এএসপিদের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর প্যারেড আয়োজনের সব আয়োজনও প্রস্তুত ছিল। দেড় হাজারের বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। তবে আগের রাতে হঠাৎ করেই কুচকাওয়াজ স্থগিত করে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন, সেই উত্তর নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক প্যারেডের আগে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। এতে অন্তত ৬২ জন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা নিয়োগ পেয়েছেন।
আশঙ্কার বিষয় হলো, কোনো তদন্ত ছাড়া একটা স্ট্যাটাস দেখে ৬৬ জন মেধাবী তরুণের জীবনকে অনিশ্চয়তায় ফেলা হলো।
অক্টোবরে প্রথমবার প্যারেড স্থগিতের ওই ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয়বার পাসিং প্যারেডের দিন ঠিক করা হয়। তবে এবার দ্বিতীয়বারের মতো সেটি স্থগিত করা হয়।
এই যে পাসিং প্যারেড বারবার পেছানো, কারণ দর্শানোর চিঠি; এগুলো কিন্তু নজীর হয়ে থাকবে। প্রথমত, পুলিশ আইন ও রীতি অনুযায়ী এক বছরের এক দিনেরও বেশি কাউকে সারদায় রাখার সুযোগ নেই। ২০ অক্টোবর যেখানে তাঁদের পাসিং প্যারেড হওয়ার কথা, সেখানে ২৬ নভেম্বরে প্রশিক্ষণে এলোমেলো হাঁটার অভিযোগ আসে কি করে।
নোটিশ দেওয়া ২৫ জনের মধ্যে দুইজন নারী ২৬ নভেম্বরের ঘটনার দিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঠে ছিলেন না। কাজেই তাঁদের বিরুদ্ধে দৌড়ের ঘটনার অভিযোগ আনা যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, মুভি নাইটে তাঁরা একজন পরিদর্শকের সঙ্গে নাকি উচ্চবাচ্য করেছেন।
বিসিএসের একটা ব্যাচের সবাই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের, তাও শুধু পুলিশের, এমন কথা বলা অবান্তর। কেউ যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করছে না, ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৪০তম বিসিএসে ২৪৪ জন প্রশাসন ক্যাডারের সহকারী কমিশনারসহ বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৯২৯ জনকে নিয়োগের গেজেট হয়েছিল। অন্য সবাই যোগ দিয়ে নানা পদে চাকরি করছেন, এমনকি প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ বাকিদের অনেকেই গত নির্বাচনের সময় সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁদের যোগদানে সমস্যা হয়নি অথচ একই বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তারা যাঁরা কিনা সারদায় প্রশিক্ষণে ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ?
অথচ ৪০ বিসিএস ছিল কোটামুক্ত বিসিএস। প্রায় চার লাখ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে সবচেয়ে মেধাবীরা উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে এএসপি হিসেবে ৭২ জন গেজেটেড হন। কয়েকজন পরে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। শেষ পযর্ন্ত ৬৩ জন এএসপি প্রশিক্ষণে ছিলেন। এ ছাড়া ৩৮ ব্যাচের আরও তিনজন যুক্ত হন। এই ৬৬ জনই এখন চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
একটা বিষয় নীতিনির্ধারকরা কেন ভাবছেন না? ৪০ বিসিএস থেকে যদি বিগত সরকারের সমর্থকরা যোগদান করেন তাহলে তো তাঁরা প্রশাসন, পররাষ্ট্রসহ সব ক্যাডারে যোগ দেবেন। অন্য ক্যাডারের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ না ওঠে এমনকি ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ নির্বাচনের সময় মাঠে থাকার পরেও, তাহলে সারদায় থাকা পুলিশের দোষটা কী?
লেখক: কলামিস্ট ও বিশ্লেষক
‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে!’ এটি একটি প্রবাদ বাক্য। আমরা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বোঝাতে গিয়ে প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করে থাকি। যে বাক্য বা উক্তি সংক্ষিপ্ত আকারে এবং রূপক আকারে বিশেষ অর্থ বহন করে, যার মাঝে কোনো বাস্তব সত্য নিহিত রয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরে লোকের মুখে মুখে চলে আসছে, তাকেই আমরা প্রবাদ...
১১ ঘণ্টা আগেটানাপোড়েন যে একটা সৃষ্টি হবে, সে ইঙ্গিত শুরু থেকেই ছিল। সুনির্দিষ্ট ধারাবাহিকতায় এখন তা স্পষ্টতর হয়েছে। মূল প্রতিপাদ্য একটাই। সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন, নাকি জাতীয় নির্বাচনের পরে সংস্কার? যদি সংস্কার করে নির্বাচন হয়, তাহলে সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য সব সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার পরে নির্বাচন...
১১ ঘণ্টা আগেবার্ধক্য হলো ষাটোর্ধ্ব জীবন। সারকোপেনিয়া হলো একধরনের পেশি ক্ষয় যা সাধারণত বার্ধক্যে ঘটে। সারকোপেনিয়া সাধারণত বয়স্ক বা পরিশ্রম না করে বসে থাকা জনগণ এবং রোগীদের প্রভাবিত করে, যাদের অন্যান্য অসুস্থতা রয়েছে। এটা মানব দেহের পেশির সিস্টেমকে প্রভাবিত করে বা শারীরিক কার্যকলাপকে ব্যাহত করে।
১১ ঘণ্টা আগেদেশজুড়ে এখন সবচেয়ে মুখরোচক আলোচনা হচ্ছে নির্বাচন ঘিরে। কেউ চাইছে নির্বাচন হোক সংস্কারের পর, কেউ চাইছে এ বছরের মাঝামাঝি। কেউ বলছে আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ নির্বাচন হবে। অভিজ্ঞ মহল বলছে, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া, নির্বাচন হওয়ার পরও তা চলতে থাকবে। সুতরাং সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন আটকে রাখা...
১১ ঘণ্টা আগে