মাহবুবুল আলম
৫ আগস্ট ২০২৪, বাংলাদেশ একটি অবিস্মরণীয় ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে। ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের ৯ দফা যখন এক দফায় পরিণত হয় এবং তার ফলে সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। এ বিজয়ে অবশ্যই ছাত্ররা প্রকৃত বিজয়ীর দাবিদার। কিন্তু মনে রাখা দরকার, শুধু তারাই এই বিজয়ীর দাবিদার নয়। বিজয়ীর মুকুট তাদের মাথায় শোভা পায় এবং সেই মুকুট কেউ ছিনিয়ে নিতে যাচ্ছে না। কিন্তু এই আন্দোলনে গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। শুধু মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করলে দেখা যায়, ৫০ শতাংশের অধিক ছাত্র নয়, এমন ব্যক্তির মৃত্যু এই দাবির পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। অবিচ্ছেদ্য রূপে তাই এই আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলন হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে ৷ তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহান্তে এই আন্দোলন কিছু ক্ষেত্রে শুধু ছাত্রদের আন্দোলন হিসেবে পরিগণিত হয়ে চলছে। আর সে ক্ষেত্রে কিছু আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের লেখার অবতারণা।
অন্তর্বর্তী সরকারে আমরা একটি ডায়নামিক উপদেষ্টামণ্ডলী পেয়েছি, যাঁরা নিজস্ব কর্মে ও অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতাও ঈর্ষণীয়। গণমানুষের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁদের অনেকের আছে। তবু মাঠপর্যায়ের রাজনীতি তাঁদের সবার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা এবং চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের আন্দোলন, সড়ক অবরোধ এবং সচিবালয় ঘেরাও এবং তার ফল কঠিন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ হলো এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত। আন্দোলনকারী ছাত্রদের একটি গ্রুপ জোর করে সচিবালয়ের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে ঢুকে পড়ে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত তৈরি করে। ফলে পুরো পরীক্ষা বাতিল করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়। ঠিক একই রকম আচরণ পরিলক্ষিত হলো আনসার বাহিনীর আন্দোলনে। তারাও সাময়িক বিজয় এবং ভবিষ্যতে আরও পাওয়ার প্রত্যাশায় তাদের আন্দোলন স্থগিত করে। যদিও এ দুটি উদাহরণ ভবিষ্যতে দাবি আদায়কারী বা আন্দোলনকারী গ্রুপগুলোর জন্য একটা অবলম্বন হয়ে থাকবে। যেটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য মোটেই সুখকর কিছু হবে বলে মনে হয় না।
প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনে সূত্র লুক্কায়িত আন্দোলনকারী ছাত্রদের আদালত ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে। ১০ আগস্ট জুডিশিয়াল ক্যু ঘটতে যাচ্ছে, এই সন্দেহে বিক্ষোভরত ছাত্ররা আদালত ভবন ঘেরাও করে। ফলে প্রধান বিচারপতি সব বিচারপতির সমন্বয়ে ডাকা ভার্চুয়াল সভাটি বাতিল করেন এবং পরে বিচারপতিরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। জুডিশিয়াল ক্যুর ধারণাটি একবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। উপরন্তু নতুন অন্তর্বর্তী সরকার যার হাতে একটি সুসংহত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেই, তার এ রকম জুডিশিয়াল ক্যুর ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ছিল কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। এই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রসমাজের আন্দোলনই সম্ভবত ছিল একমাত্র উপায় ষড়যন্ত্র বানচালের। ছাত্রসমাজের এই আন্দোলনের সফলতা তাদের কার্যক্রমের কার্যকারিতা নির্দেশ করে।
২৫ আগস্ট রাতে আনসারের একটি অংশের সচিবালয় অবরোধ আরেকটি উদাহরণ। আবারও ছাত্র-জনতার ত্বরিত পদক্ষেপে বড় কিছু ঘটনা ছাড়াই আপাতত অঘটন এড়ানো গেছে। কিন্তু এই কৌশল ভবিষ্যতে সরকারের বিরুদ্ধেই বারবার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ থেকে যায়। সুতরাং এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ভালো হবে বলে মনে করি। সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি সংস্থাগুলোর ওপর নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি প্রধানতম চ্যালেঞ্জের একটি হলো, পুলিশের তথাকথিত চরিত্রের পরিবর্তন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত তার কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি; বিশেষ করে স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ মামলা করা হচ্ছে, তা সরকারের দমননীতির ব্লুপ্রিন্ট। সাধারণ জনগণের একটি ধারণা (পাবলিক পারসেপশন) হলো, এই মামলাগুলো আপাতত আসামিদের আটকানোর জন্য দেওয়া হচ্ছে। পরে সময়-সুযোগ বুঝে প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করা হবে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, একজন ব্যক্তির বিপক্ষে করা একটি ভুল বা দুর্বল মামলা, সেই ব্যক্তির বিপক্ষে প্রকৃত মামলা দুর্বল করে দিতে পারে। সাধারণ জনগণ এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দিন শেষে মামলার প্রক্রিয়া এবং গুণমান (মেরিট) নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং আদতে দোষী ব্যক্তির খালাস পাওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হবে। সুতরাং ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট অপরাধের ধরন বিবেচনায় মামলা করতে হবে। এখন পর্যন্ত এ রকম যত মামলা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত রিভিউ করে বাতিল বা রিভিশন করতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার নির্দেশনা দিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরাচার সরকারের দমনপীড়নের কৌশল আবার ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার এই অর্জনকে বৃথা করা যাবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী-সম্পর্কিত আরেকটি বিষয় হলো ‘মব জাস্টিস’কে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা। বিচারপতি মানিক কীভাবে তাঁর বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন অথবা সামাজিকভাবে মানুষকে হেয় করেছেন, সেই প্রশ্ন বিবেচনা করার পরও, কোনোভাবেই আদালত চত্বরে তাঁর বা তাঁর মতো কারও প্রতি শারীরিক আঘাত বর্তমান সরকার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে ঠিক বার্তা দেয় না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও সর্তকর্তা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করি। সরকারের পক্ষ থেকে বঞ্চিত ও নির্যাতিত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এই পরিস্থিতির উন্নয়নে। নতুবা অনুচিতভাবেই এই শোষক-স্বৈরাচার দোসরদের পক্ষে একটা সহানুভূতি গড়ে উঠছে, যেটি আদতে এই গণজাগরণের স্পিরিটের পক্ষে যায় না।
দ্বিতীয় যে সমস্যার কিছুটা ঝলক এখন দেখা যাচ্ছে, তা ছাত্র-সমন্বয়ক সম্পর্কিত। যদিও অনেকে বলবেন, এ সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্থাপন এখনো বাস্তবিক হয়নি। তবু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কিছু ঘটনার সংঘটন আর বিচ্ছিন্ন বলার উপায় নেই। শিক্ষা উপদেষ্টা ইতিমধ্যে জোরপূর্বক ক্ষমতা হস্তান্তরে বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা উল্লেখ করেছেন। যদিও এটি অনস্বীকার্য, অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলুষিত করা হয়েছে। জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের বক্তব্য এবং কার্যক্রম দলীয় ক্যাডার বাহিনীর সঙ্গে পৃথক করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। দেশের প্রচলিত আইনে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই বিচারের আওতায় আসবে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ক বা সহসমন্বয়কের পরিচয়ে যে কর্তৃত্বমূলক দাবির আবরণে শাসন, তা চিন্তার খোরাক জোগায় বৈকি। অথচ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল কর্তৃত্বমূলক শাসনের অবসান। ইতিমধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক সমন্বয়ক তাঁদের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শুধু এই শঙ্কা থেকেই। তা ছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের অন্তত দুজন এ ব্যাপারে তাঁদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যেটি সাক্ষ্য দেয়, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের হয়তো সারা দেশের সব আন্দোলনকারী গ্রুপগুলোর ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নেই। বিশেষ করে স্কুলগুলোতে কোমলমতি ছাত্রদের শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকদের ওপর দৃষ্টিকটুভাবে বলপ্রয়োগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুস্থ পরিবেশের জন্য সহায়ক নয়। দাবি আদায়ে আলটিমেটাম বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা ব্যক্তির দুর্নীতির তথ্য দেওয়া আর দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা এক কথা নয়। বয়সে ছোট আর আবেগপ্রবণ হওয়ার জন্য হয়তো স্কুলপড়ুয়ারা এ ধরনের কাজের ফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। কিন্তু এই ধরনের কাজে অংশগ্রহণ-পরবর্তী সময়ে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক না-ও হতে পারে। সুতরাং তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি বলে মনে করি।
ছাত্র সমন্বয়কেরা যেহেতু নিজের পছন্দ অনুযায়ী একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে, তাদের উচিত এই সরকারের ওপর বিশ্বাস রাখা, তাদের মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া এবং নিজেদের মূল কাজ পড়াশোনায় ফিরে যাওয়া। পাশাপাশি নিজেদের একটি প্রেশার গ্রুপ বা ওয়াচডগের ভূমিকা বজায় রাখা। যদি সেটি সম্ভব না হয় এবং তারা নিজেদের বর্তমান ভূমিকা প্রয়োজনীয় বলে মনে করে, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উচিত দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সহ-সমন্বয়কদের জন্য স্পষ্ট নীতিমালা বা কার্যপ্রণালি তৈরি করা, যাতে ব্যক্তির অপেশাদার আচরণ গণবিপ্লবের মাধুর্য ও উদ্দেশ্য ম্লান করতে না পারে। তবে এই লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত, এটি করা তাদের জন্য একটু কঠিন হবে। কারণ, এই গণজাগরণের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই; বরং তাদের এই একতাবদ্ধতা স্বেচ্ছাশ্রম আর দাবিভিত্তিক অ্যাজেন্ডার ওপর গড়ে উঠেছে।
স্বৈরাচারী শাসনের পতন এবং বাক্স্বাধীনতার আগল খুলে যাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে উঠেছে পাবলিক জাজমেন্ট বা পাবলিক ট্রায়ালের একটি মাধ্যম। যে কথাগুলো বলা যেত না, যে ক্ষতগুলো দিনের পর দিন একজন সহ্য করেছে, তা আজ প্রকাশ্যে চলে আসছে। তবে পাবলিক ট্রায়ালের সমস্যা হলো, এতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকে না। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর অভিযোগের সারবত্তা (মেরিট) থাকলেও এতে নিরীহ ব্যক্তির অভিযুক্ত হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির কার্যকারণের ব্যাখ্যা থাকলেও তার আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই সামাজিক বিচার হয়ে যায়। সুতরাং বাক্স্বাধীনতার মানে শুধু একপক্ষীয়ভাবে নিজের ইচ্ছেমতো কিছু বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এর মর্ম উপলব্ধি সাপেক্ষে সঠিক মাত্রায় ও উপায়ে ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয় বলেই মনে করি। না হলে হয়তো এই বাক্স্বাধীনতার স্বাধীনতা আবার আমরা অচিরেই হারাব।
এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, এই দেশ এখনো স্থিতিশীল অবস্থা পৌঁছায়নি। স্বৈরাচারসহ বৈশ্বিক শক্তি এখনো এই দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিতে সক্রিয় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে জনগণসহ ছাত্রদের সজাগ দৃষ্টি এবং সরকারের প্রতি প্রত্যক্ষ সমর্থন দরকার আছে। তবে এ কথা বলা বাতুলতা হবে না, এ ক্ষেত্রে সরকার, প্রতিষ্ঠানগুলো, জনগণ এবং সর্বোপরি ছাত্রসম্প্রদায় সংযত, সহমর্মী, পরিশীলিত এবং পেশাদার আচরণে অপারগ হলে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন আরও একবার থমকে যাবে। এটা জানি, ছাত্র-জনতার এই অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। সুতরাং কালকের জন্য অপেক্ষা না করে আজ থেকেই দুর্বলতাগুলো দূর করার প্রচেষ্টা শুরু করতে হবে।
লেখক: গবেষক ও অধ্যাপক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
৫ আগস্ট ২০২৪, বাংলাদেশ একটি অবিস্মরণীয় ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে। ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের ৯ দফা যখন এক দফায় পরিণত হয় এবং তার ফলে সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। এ বিজয়ে অবশ্যই ছাত্ররা প্রকৃত বিজয়ীর দাবিদার। কিন্তু মনে রাখা দরকার, শুধু তারাই এই বিজয়ীর দাবিদার নয়। বিজয়ীর মুকুট তাদের মাথায় শোভা পায় এবং সেই মুকুট কেউ ছিনিয়ে নিতে যাচ্ছে না। কিন্তু এই আন্দোলনে গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। শুধু মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করলে দেখা যায়, ৫০ শতাংশের অধিক ছাত্র নয়, এমন ব্যক্তির মৃত্যু এই দাবির পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। অবিচ্ছেদ্য রূপে তাই এই আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলন হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে ৷ তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহান্তে এই আন্দোলন কিছু ক্ষেত্রে শুধু ছাত্রদের আন্দোলন হিসেবে পরিগণিত হয়ে চলছে। আর সে ক্ষেত্রে কিছু আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের লেখার অবতারণা।
অন্তর্বর্তী সরকারে আমরা একটি ডায়নামিক উপদেষ্টামণ্ডলী পেয়েছি, যাঁরা নিজস্ব কর্মে ও অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতাও ঈর্ষণীয়। গণমানুষের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁদের অনেকের আছে। তবু মাঠপর্যায়ের রাজনীতি তাঁদের সবার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা এবং চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের আন্দোলন, সড়ক অবরোধ এবং সচিবালয় ঘেরাও এবং তার ফল কঠিন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ হলো এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত। আন্দোলনকারী ছাত্রদের একটি গ্রুপ জোর করে সচিবালয়ের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে ঢুকে পড়ে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত তৈরি করে। ফলে পুরো পরীক্ষা বাতিল করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়। ঠিক একই রকম আচরণ পরিলক্ষিত হলো আনসার বাহিনীর আন্দোলনে। তারাও সাময়িক বিজয় এবং ভবিষ্যতে আরও পাওয়ার প্রত্যাশায় তাদের আন্দোলন স্থগিত করে। যদিও এ দুটি উদাহরণ ভবিষ্যতে দাবি আদায়কারী বা আন্দোলনকারী গ্রুপগুলোর জন্য একটা অবলম্বন হয়ে থাকবে। যেটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য মোটেই সুখকর কিছু হবে বলে মনে হয় না।
প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনে সূত্র লুক্কায়িত আন্দোলনকারী ছাত্রদের আদালত ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে। ১০ আগস্ট জুডিশিয়াল ক্যু ঘটতে যাচ্ছে, এই সন্দেহে বিক্ষোভরত ছাত্ররা আদালত ভবন ঘেরাও করে। ফলে প্রধান বিচারপতি সব বিচারপতির সমন্বয়ে ডাকা ভার্চুয়াল সভাটি বাতিল করেন এবং পরে বিচারপতিরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। জুডিশিয়াল ক্যুর ধারণাটি একবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। উপরন্তু নতুন অন্তর্বর্তী সরকার যার হাতে একটি সুসংহত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেই, তার এ রকম জুডিশিয়াল ক্যুর ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ছিল কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। এই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রসমাজের আন্দোলনই সম্ভবত ছিল একমাত্র উপায় ষড়যন্ত্র বানচালের। ছাত্রসমাজের এই আন্দোলনের সফলতা তাদের কার্যক্রমের কার্যকারিতা নির্দেশ করে।
২৫ আগস্ট রাতে আনসারের একটি অংশের সচিবালয় অবরোধ আরেকটি উদাহরণ। আবারও ছাত্র-জনতার ত্বরিত পদক্ষেপে বড় কিছু ঘটনা ছাড়াই আপাতত অঘটন এড়ানো গেছে। কিন্তু এই কৌশল ভবিষ্যতে সরকারের বিরুদ্ধেই বারবার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ থেকে যায়। সুতরাং এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ভালো হবে বলে মনে করি। সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি সংস্থাগুলোর ওপর নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি প্রধানতম চ্যালেঞ্জের একটি হলো, পুলিশের তথাকথিত চরিত্রের পরিবর্তন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত তার কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি; বিশেষ করে স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ মামলা করা হচ্ছে, তা সরকারের দমননীতির ব্লুপ্রিন্ট। সাধারণ জনগণের একটি ধারণা (পাবলিক পারসেপশন) হলো, এই মামলাগুলো আপাতত আসামিদের আটকানোর জন্য দেওয়া হচ্ছে। পরে সময়-সুযোগ বুঝে প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করা হবে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, একজন ব্যক্তির বিপক্ষে করা একটি ভুল বা দুর্বল মামলা, সেই ব্যক্তির বিপক্ষে প্রকৃত মামলা দুর্বল করে দিতে পারে। সাধারণ জনগণ এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দিন শেষে মামলার প্রক্রিয়া এবং গুণমান (মেরিট) নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং আদতে দোষী ব্যক্তির খালাস পাওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হবে। সুতরাং ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট অপরাধের ধরন বিবেচনায় মামলা করতে হবে। এখন পর্যন্ত এ রকম যত মামলা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত রিভিউ করে বাতিল বা রিভিশন করতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার নির্দেশনা দিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরাচার সরকারের দমনপীড়নের কৌশল আবার ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার এই অর্জনকে বৃথা করা যাবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী-সম্পর্কিত আরেকটি বিষয় হলো ‘মব জাস্টিস’কে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা। বিচারপতি মানিক কীভাবে তাঁর বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন অথবা সামাজিকভাবে মানুষকে হেয় করেছেন, সেই প্রশ্ন বিবেচনা করার পরও, কোনোভাবেই আদালত চত্বরে তাঁর বা তাঁর মতো কারও প্রতি শারীরিক আঘাত বর্তমান সরকার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে ঠিক বার্তা দেয় না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও সর্তকর্তা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করি। সরকারের পক্ষ থেকে বঞ্চিত ও নির্যাতিত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এই পরিস্থিতির উন্নয়নে। নতুবা অনুচিতভাবেই এই শোষক-স্বৈরাচার দোসরদের পক্ষে একটা সহানুভূতি গড়ে উঠছে, যেটি আদতে এই গণজাগরণের স্পিরিটের পক্ষে যায় না।
দ্বিতীয় যে সমস্যার কিছুটা ঝলক এখন দেখা যাচ্ছে, তা ছাত্র-সমন্বয়ক সম্পর্কিত। যদিও অনেকে বলবেন, এ সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্থাপন এখনো বাস্তবিক হয়নি। তবু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কিছু ঘটনার সংঘটন আর বিচ্ছিন্ন বলার উপায় নেই। শিক্ষা উপদেষ্টা ইতিমধ্যে জোরপূর্বক ক্ষমতা হস্তান্তরে বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা উল্লেখ করেছেন। যদিও এটি অনস্বীকার্য, অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলুষিত করা হয়েছে। জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের বক্তব্য এবং কার্যক্রম দলীয় ক্যাডার বাহিনীর সঙ্গে পৃথক করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। দেশের প্রচলিত আইনে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই বিচারের আওতায় আসবে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ক বা সহসমন্বয়কের পরিচয়ে যে কর্তৃত্বমূলক দাবির আবরণে শাসন, তা চিন্তার খোরাক জোগায় বৈকি। অথচ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল কর্তৃত্বমূলক শাসনের অবসান। ইতিমধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক সমন্বয়ক তাঁদের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শুধু এই শঙ্কা থেকেই। তা ছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের অন্তত দুজন এ ব্যাপারে তাঁদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যেটি সাক্ষ্য দেয়, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের হয়তো সারা দেশের সব আন্দোলনকারী গ্রুপগুলোর ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নেই। বিশেষ করে স্কুলগুলোতে কোমলমতি ছাত্রদের শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকদের ওপর দৃষ্টিকটুভাবে বলপ্রয়োগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুস্থ পরিবেশের জন্য সহায়ক নয়। দাবি আদায়ে আলটিমেটাম বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা ব্যক্তির দুর্নীতির তথ্য দেওয়া আর দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা এক কথা নয়। বয়সে ছোট আর আবেগপ্রবণ হওয়ার জন্য হয়তো স্কুলপড়ুয়ারা এ ধরনের কাজের ফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। কিন্তু এই ধরনের কাজে অংশগ্রহণ-পরবর্তী সময়ে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক না-ও হতে পারে। সুতরাং তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি বলে মনে করি।
ছাত্র সমন্বয়কেরা যেহেতু নিজের পছন্দ অনুযায়ী একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে, তাদের উচিত এই সরকারের ওপর বিশ্বাস রাখা, তাদের মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া এবং নিজেদের মূল কাজ পড়াশোনায় ফিরে যাওয়া। পাশাপাশি নিজেদের একটি প্রেশার গ্রুপ বা ওয়াচডগের ভূমিকা বজায় রাখা। যদি সেটি সম্ভব না হয় এবং তারা নিজেদের বর্তমান ভূমিকা প্রয়োজনীয় বলে মনে করে, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উচিত দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সহ-সমন্বয়কদের জন্য স্পষ্ট নীতিমালা বা কার্যপ্রণালি তৈরি করা, যাতে ব্যক্তির অপেশাদার আচরণ গণবিপ্লবের মাধুর্য ও উদ্দেশ্য ম্লান করতে না পারে। তবে এই লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত, এটি করা তাদের জন্য একটু কঠিন হবে। কারণ, এই গণজাগরণের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই; বরং তাদের এই একতাবদ্ধতা স্বেচ্ছাশ্রম আর দাবিভিত্তিক অ্যাজেন্ডার ওপর গড়ে উঠেছে।
স্বৈরাচারী শাসনের পতন এবং বাক্স্বাধীনতার আগল খুলে যাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে উঠেছে পাবলিক জাজমেন্ট বা পাবলিক ট্রায়ালের একটি মাধ্যম। যে কথাগুলো বলা যেত না, যে ক্ষতগুলো দিনের পর দিন একজন সহ্য করেছে, তা আজ প্রকাশ্যে চলে আসছে। তবে পাবলিক ট্রায়ালের সমস্যা হলো, এতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকে না। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর অভিযোগের সারবত্তা (মেরিট) থাকলেও এতে নিরীহ ব্যক্তির অভিযুক্ত হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির কার্যকারণের ব্যাখ্যা থাকলেও তার আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই সামাজিক বিচার হয়ে যায়। সুতরাং বাক্স্বাধীনতার মানে শুধু একপক্ষীয়ভাবে নিজের ইচ্ছেমতো কিছু বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এর মর্ম উপলব্ধি সাপেক্ষে সঠিক মাত্রায় ও উপায়ে ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয় বলেই মনে করি। না হলে হয়তো এই বাক্স্বাধীনতার স্বাধীনতা আবার আমরা অচিরেই হারাব।
এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, এই দেশ এখনো স্থিতিশীল অবস্থা পৌঁছায়নি। স্বৈরাচারসহ বৈশ্বিক শক্তি এখনো এই দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিতে সক্রিয় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে জনগণসহ ছাত্রদের সজাগ দৃষ্টি এবং সরকারের প্রতি প্রত্যক্ষ সমর্থন দরকার আছে। তবে এ কথা বলা বাতুলতা হবে না, এ ক্ষেত্রে সরকার, প্রতিষ্ঠানগুলো, জনগণ এবং সর্বোপরি ছাত্রসম্প্রদায় সংযত, সহমর্মী, পরিশীলিত এবং পেশাদার আচরণে অপারগ হলে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন আরও একবার থমকে যাবে। এটা জানি, ছাত্র-জনতার এই অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। সুতরাং কালকের জন্য অপেক্ষা না করে আজ থেকেই দুর্বলতাগুলো দূর করার প্রচেষ্টা শুরু করতে হবে।
লেখক: গবেষক ও অধ্যাপক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
গণতন্ত্রের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছি। গণতন্ত্রের দেখা কি মিলছে? গণতন্ত্র কি কেবল নির্দিষ্ট সময় পরপর ভোটাধিকার? নাকি জনগণের যেমন খুশি তেমন বিচার-আচার? সাধারণ ধারণায় গণতন্ত্র মানে স্রেফ স্বাধীন ও সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানের অধিকার বোঝায় না, নাগরিকের সমান মানবাধিকারকেও বোঝায়। পরিতাপের বিষয়, এক মান
১৩ ঘণ্টা আগেপুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনেস মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর এই চাকরিত্যাগের খবর এখন বিশ্ব মিডিয়ায় এক আলোচিত বিষয়। একটি পত্রিকা থেকে একজন কার্টুনিস্টের পদত্যাগের খবরটি বিশ্বব্যাপী চাউর হতো না যদি তা নিছক সাদামাটা পদত্যাগ হতো।
১৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে তিনি তাঁর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায়ই ছিলেন। অন্য সব সহকর্মীকে আত্মগোপনে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের পরামর্শ দিলেও তিনি নিজে আত্মগোপনে যাননি।
১৪ ঘণ্টা আগে‘বেচারা’ তহিদুল ইসলাম নীলফামারীর ডিমলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ভূমি কার্যালয়ের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের নামে যে বিশাল সব ঘটনা ঘটে গেল দেশে, তার খবর সম্ভবত তিনি পাননি। তিনি ভেবেছিলেন, যেভাবে ভূমি অফিসে ‘সেবা’ দানের বিনিময়ে ‘ব্যক্তিগত সেবা’ লাভের সুযোগ তৈরি করে নিয়েছেন...
১৪ ঘণ্টা আগে