বিভুরঞ্জন সরকার
৭ ফেব্রুয়ারি প্রায় সবগুলো জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার খবর ছিল- রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা সন্ধ্যায় জানা যাবে। কারণ, সেদিন সন্ধ্যার পর সংসদীয় দলের সভায় আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কথা ছিল। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল।
নতুন সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পন-কল্পনা চলছে। কিছু নাম আলোচনায় এসেছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নাম অনেকে এক নম্বরেও রেখেছেন। একদিন তো একটি দৈনিকে এমন খবর বের হলো যে শিরীন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্পিকার নির্বাচিত হচ্ছেন, এটা নাকি প্রায় নিশ্চিত। একই দিন আরেকটি দৈনিকে খবর বের হয়, সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে কারো রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬ আসনের উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতা ক্ষমতাসীন দলের জন্য সুখকর নয়। কাজেই রাষ্ট্রপতি পদে সাংসদ নন এমন কেউ আসছেন। সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নাম এক নম্বরে রাখা হয়। এর বাইরে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিকের নামও আলোচনায় আছে বলে উল্লেখ করা হয় কোনো কোনো গণমাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের অনেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চান– এমন খবরের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি পদে দলের মধ্য থেকে কারা বিবেচিত হতে পারেন, তার তালিকাও প্রকাশ পায়। এর মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাবনা বেশি বলেও প্রচার পায়। তাছাড়া দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং দিনাজপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের নামও কোনো কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হবে বলে ধারণা দেওয়া হলেও সেটাও ঠিক হলো না। ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এর আগে দলের প্রার্থী কে হবেন, তা প্রকাশ করার সম্ভাবনা কম।
সংসদীয় দলের সভায় কি হলো? সভা শেষে ওবায়দুল কাদের জানান, তিনি সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির নাম চূড়ান্ত করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অর্পণ করার প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাব সমর্থন করেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এবং পরে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। গণতন্ত্র চর্চার এক অনন্য নজির এটা। আগে দলের মধ্যে কোনো বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার দেওয়া হতো শেখ হাসিনার ওপর। এবার আর আলোচনা করে সময় নষ্ট করার পথে না হেঁটে প্রথমেই শেখ হাসিনার হাতেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা যাঁকে পছন্দ করবেন, তিনিই যেহেতু রাষ্ট্রপতি হবেন, তাই অন্যরা আর আলোচনা করে কালক্ষেপণ করবেন কেন?
তবে সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের ও চিফ হুইপ নূর-ই- আলম চৌধুরী কথা বলেছেন। তবে তাঁরা কারও নাম উল্লেখ না করে রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে রাজনীতিবিদ, যিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থার প্রকাশ ঘটিয়েছেন, তেমন একজনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন।
দলের বাইরে থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির কারণ ঘটিয়েছিলেন। আবার দলীয় ব্যক্তি হিসেবে ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করে বিএনপিও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল। রাষ্ট্রপতির মতো সম্মানিত পদ দিয়ে পরে তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়াতেও বাধ্য করেছিল বিএনপি।
এই সব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখেই শেখ হাসিনা নতুন রাষ্ট্রপতির নাম ঠিক করবেন, এটাই স্বাভাবিক। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি হিসেবে আব্দুল হামিদের প্রশংসা করে বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সাহস ও মনোবলের সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন। তাই রাষ্ট্রপতি এমন একজন হতে হবে যিনি জনপ্রিয় এবং সাহস, শক্তি ও মনোবলসম্পন্ন। যেকোনো পরিস্থিতি যিনি বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবেন।
সম্ভাব্য রাষ্টপতি হিসেবে যে নামগুলো ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে, তার বাইরে কোনো নাম কি প্রধানমন্ত্রীর চিন্তায় আছে? প্রধানমন্ত্রী কাকে বিচক্ষণ ও সাহসী হিসেবে মনে করছেন, তা হয়তো ১২ ফেব্রুয়ারির আগে জানা যাবে না। তিন চার দিনের অপেক্ষার সময় নিশ্চয়ই খুব দীর্ঘ মনে হবে না। এই ফাঁকে একটি বিষয় কি ভাবা যায়?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশের কিছু নেই। তিনি দূরদর্শী এবং ভিশনারি, তাতেও সন্দেহ নেই। অনেক রাজনৈতিক সংকট তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সমাধান করেছেন। সরকার ও সরকারি দলের অনেকেই বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ ও পরামর্শ ছাড়া কিছুই হয় না। এটাও বলা হয় যে দেশের কোথায় কি ঘটছে তার সবই শেখ হাসিনার জানা।
একজন মানুষের পক্ষে সব কিছু জানা সম্ভব কি না, বা একজন মানুষের ওপর নির্ভরতা খুব সুবিবেচনাপ্রসূত কি না, সে বিষয়ে বিতর্কে না গিয়ে বরং বলতে চাই, যেহেতু শেখ হাসিনার ওপরই যখন আমাদের সব আস্থা-ভরসা, তিনিই যেহেতু সব কিছু চালান, সেহেতু আমাদের এত বড় একটি মন্ত্রিসভার কোনো প্রয়োজন আছে কি? পরিকল্পনামন্ত্রী ও একজন সজ্জন মানুষ হিসেবে পরিচিত এম এ মান্নানও মাস কয়েক আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, অর্থমন্ত্রী নিয়মিত অফিস করেন না, তাতে সমস্যা কি? প্রধানমন্ত্রী তো আছেন। তিনি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সব কিছুই পরিচালনা করে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন ১৭-১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন, দেশভাবনা ছাড়া তাঁর আর কোনো ভাবনা নেই, দেশের মানুষকে কিছু দেওয়া যাঁর জীবনের ব্রত, তাঁকে ছাড়া তাঁর দলের সবাইকে কেনা যায়, এমন বক্তব্য তাঁর নিজের– এগুলো আমাদের জানা। সে জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনা করে, ব্যয় সংকোচনের জন্য হলেও তো আমাদের মন্ত্রিসভার কলেবর ছোট করে অলস কর্মহীন কয়েকজন মন্ত্রীকে কি ছুটিতে পাঠানোর কথা ভাবা যায় না? যাঁরা খামোখা মন্ত্রী, যাঁদের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাটে যানজট বাড়ে, জ্বালানি খরচ হয়, তাঁদের বাদ দিলে ক্ষতি কোথায়?
সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি নিয়মিত জরিপ চালাচ্ছি। এলাকায় কার কী অবস্থা, সেই তথ্য সংগ্রহ করছি। যার এলাকায় অবস্থান আছে, আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন তিনিই পাবেন।’ আগামী নির্বাচনে কাউকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব তিনি নেবেন না বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
তাহলে এটা আমরা ধরে নিতে পারি, মন্ত্রীদের যাবতীয় পারফরম্যান্সের তথ্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে। পরীক্ষায় যাঁরা ফেল তাদের সঙ্গে রাখলে মানুষ কীভাবে বুঝবে যে অযোগ্যদের দায়িত্ব তিনি দেবেন না? নতুন রাষ্ট্রপতি পদে একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাছাই করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সঙ্গে থাকা অযোগ্য, সমালোচিত, বিতর্কিতদের ছাঁটাই করে জনতুষ্টি বিধানের বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী বিবেচনায় নিলে খুবই ভালো হবে। দেশের মানুষ ভালো কথা যত শুনেছে ভালো কাজ কি ততটা দেখেছে? কাজেই মানুষ দেখতে চায়, প্রধানমন্ত্রী ভালোর সঙ্গেই আছেন ও থাকেন।
মানুষ এমন চমক আশা করে না, যে চমক একটু চোখ ঝলসায়, কিন্তু অন্ধকার দূর করে না।
৭ ফেব্রুয়ারি প্রায় সবগুলো জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার খবর ছিল- রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা সন্ধ্যায় জানা যাবে। কারণ, সেদিন সন্ধ্যার পর সংসদীয় দলের সভায় আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কথা ছিল। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল।
নতুন সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পন-কল্পনা চলছে। কিছু নাম আলোচনায় এসেছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নাম অনেকে এক নম্বরেও রেখেছেন। একদিন তো একটি দৈনিকে এমন খবর বের হলো যে শিরীন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্পিকার নির্বাচিত হচ্ছেন, এটা নাকি প্রায় নিশ্চিত। একই দিন আরেকটি দৈনিকে খবর বের হয়, সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে কারো রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬ আসনের উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতা ক্ষমতাসীন দলের জন্য সুখকর নয়। কাজেই রাষ্ট্রপতি পদে সাংসদ নন এমন কেউ আসছেন। সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নাম এক নম্বরে রাখা হয়। এর বাইরে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিকের নামও আলোচনায় আছে বলে উল্লেখ করা হয় কোনো কোনো গণমাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের অনেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চান– এমন খবরের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি পদে দলের মধ্য থেকে কারা বিবেচিত হতে পারেন, তার তালিকাও প্রকাশ পায়। এর মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাবনা বেশি বলেও প্রচার পায়। তাছাড়া দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং দিনাজপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের নামও কোনো কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হবে বলে ধারণা দেওয়া হলেও সেটাও ঠিক হলো না। ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এর আগে দলের প্রার্থী কে হবেন, তা প্রকাশ করার সম্ভাবনা কম।
সংসদীয় দলের সভায় কি হলো? সভা শেষে ওবায়দুল কাদের জানান, তিনি সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির নাম চূড়ান্ত করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অর্পণ করার প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাব সমর্থন করেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এবং পরে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। গণতন্ত্র চর্চার এক অনন্য নজির এটা। আগে দলের মধ্যে কোনো বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার দেওয়া হতো শেখ হাসিনার ওপর। এবার আর আলোচনা করে সময় নষ্ট করার পথে না হেঁটে প্রথমেই শেখ হাসিনার হাতেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা যাঁকে পছন্দ করবেন, তিনিই যেহেতু রাষ্ট্রপতি হবেন, তাই অন্যরা আর আলোচনা করে কালক্ষেপণ করবেন কেন?
তবে সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের ও চিফ হুইপ নূর-ই- আলম চৌধুরী কথা বলেছেন। তবে তাঁরা কারও নাম উল্লেখ না করে রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে রাজনীতিবিদ, যিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থার প্রকাশ ঘটিয়েছেন, তেমন একজনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন।
দলের বাইরে থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির কারণ ঘটিয়েছিলেন। আবার দলীয় ব্যক্তি হিসেবে ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করে বিএনপিও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল। রাষ্ট্রপতির মতো সম্মানিত পদ দিয়ে পরে তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়াতেও বাধ্য করেছিল বিএনপি।
এই সব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখেই শেখ হাসিনা নতুন রাষ্ট্রপতির নাম ঠিক করবেন, এটাই স্বাভাবিক। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি হিসেবে আব্দুল হামিদের প্রশংসা করে বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সাহস ও মনোবলের সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন। তাই রাষ্ট্রপতি এমন একজন হতে হবে যিনি জনপ্রিয় এবং সাহস, শক্তি ও মনোবলসম্পন্ন। যেকোনো পরিস্থিতি যিনি বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবেন।
সম্ভাব্য রাষ্টপতি হিসেবে যে নামগুলো ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে, তার বাইরে কোনো নাম কি প্রধানমন্ত্রীর চিন্তায় আছে? প্রধানমন্ত্রী কাকে বিচক্ষণ ও সাহসী হিসেবে মনে করছেন, তা হয়তো ১২ ফেব্রুয়ারির আগে জানা যাবে না। তিন চার দিনের অপেক্ষার সময় নিশ্চয়ই খুব দীর্ঘ মনে হবে না। এই ফাঁকে একটি বিষয় কি ভাবা যায়?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশের কিছু নেই। তিনি দূরদর্শী এবং ভিশনারি, তাতেও সন্দেহ নেই। অনেক রাজনৈতিক সংকট তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সমাধান করেছেন। সরকার ও সরকারি দলের অনেকেই বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ ও পরামর্শ ছাড়া কিছুই হয় না। এটাও বলা হয় যে দেশের কোথায় কি ঘটছে তার সবই শেখ হাসিনার জানা।
একজন মানুষের পক্ষে সব কিছু জানা সম্ভব কি না, বা একজন মানুষের ওপর নির্ভরতা খুব সুবিবেচনাপ্রসূত কি না, সে বিষয়ে বিতর্কে না গিয়ে বরং বলতে চাই, যেহেতু শেখ হাসিনার ওপরই যখন আমাদের সব আস্থা-ভরসা, তিনিই যেহেতু সব কিছু চালান, সেহেতু আমাদের এত বড় একটি মন্ত্রিসভার কোনো প্রয়োজন আছে কি? পরিকল্পনামন্ত্রী ও একজন সজ্জন মানুষ হিসেবে পরিচিত এম এ মান্নানও মাস কয়েক আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, অর্থমন্ত্রী নিয়মিত অফিস করেন না, তাতে সমস্যা কি? প্রধানমন্ত্রী তো আছেন। তিনি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সব কিছুই পরিচালনা করে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন ১৭-১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন, দেশভাবনা ছাড়া তাঁর আর কোনো ভাবনা নেই, দেশের মানুষকে কিছু দেওয়া যাঁর জীবনের ব্রত, তাঁকে ছাড়া তাঁর দলের সবাইকে কেনা যায়, এমন বক্তব্য তাঁর নিজের– এগুলো আমাদের জানা। সে জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনা করে, ব্যয় সংকোচনের জন্য হলেও তো আমাদের মন্ত্রিসভার কলেবর ছোট করে অলস কর্মহীন কয়েকজন মন্ত্রীকে কি ছুটিতে পাঠানোর কথা ভাবা যায় না? যাঁরা খামোখা মন্ত্রী, যাঁদের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাটে যানজট বাড়ে, জ্বালানি খরচ হয়, তাঁদের বাদ দিলে ক্ষতি কোথায়?
সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি নিয়মিত জরিপ চালাচ্ছি। এলাকায় কার কী অবস্থা, সেই তথ্য সংগ্রহ করছি। যার এলাকায় অবস্থান আছে, আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন তিনিই পাবেন।’ আগামী নির্বাচনে কাউকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব তিনি নেবেন না বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
তাহলে এটা আমরা ধরে নিতে পারি, মন্ত্রীদের যাবতীয় পারফরম্যান্সের তথ্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে। পরীক্ষায় যাঁরা ফেল তাদের সঙ্গে রাখলে মানুষ কীভাবে বুঝবে যে অযোগ্যদের দায়িত্ব তিনি দেবেন না? নতুন রাষ্ট্রপতি পদে একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাছাই করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সঙ্গে থাকা অযোগ্য, সমালোচিত, বিতর্কিতদের ছাঁটাই করে জনতুষ্টি বিধানের বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী বিবেচনায় নিলে খুবই ভালো হবে। দেশের মানুষ ভালো কথা যত শুনেছে ভালো কাজ কি ততটা দেখেছে? কাজেই মানুষ দেখতে চায়, প্রধানমন্ত্রী ভালোর সঙ্গেই আছেন ও থাকেন।
মানুষ এমন চমক আশা করে না, যে চমক একটু চোখ ঝলসায়, কিন্তু অন্ধকার দূর করে না।
সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে অটোরিকশা বন্ধের প্রস্তাবে চালকদের রাস্তায় নেমে আসা এবং শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ অবরোধে সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়।
৫ ঘণ্টা আগেআগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কী পারবে না, তাদেরকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কী হবে না—এ নিয়ে গরম এখন রাজনীতির মাঠ। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক হিসেবে দাবিদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি তো আরও একধাপ বেশি। আওয়ামী লীগকে কেবল নির্বাচনের বাইরে রাখাই নয়, দাবি তাদের দেশের প্রাচী
১৩ ঘণ্টা আগেহুমায়ূন আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওনের ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের একটা ভাইরাল ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। বেশ মজা পেলাম। সত্যি বললে মজার চেয়েও ছোট্ট বাচ্চার কথায় ভাবনার উদ্রেক হলো। চিন্তার দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
১৩ ঘণ্টা আগেপরিবেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সার্কুলার অর্থনীতি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি এক নবদিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বাংলাদেশে স্বল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সার্কুলার অর্থনীতির বিকল্প নেই।
১৩ ঘণ্টা আগে